—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
রবিবারও গঙ্গায় জলস্তর বয়েছে বিপদসীমার তিন মিটার ৮৪ সেন্টিমিটার নীচে দিয়ে। তবু শমসেরগঞ্জে ভাঙন চলছেই। ইতিমধ্যে রাজ্যের সেচ দফতর শমসেরগঞ্জ ও ধুলিয়ানে ভাঙন রোধের কাজে ২২ কোটি ৯৬ লক্ষ টাকা ফের মঞ্জুর করেছে। তবে তারা স্পষ্টই জানিয়ে দিয়েছে, ডিসেম্বর মাসের আগে কাজ শুরু করা যাবে না। তাতেই চিন্তা বেড়েছে ভাঙন-কবলিত ১০টি গ্রাম ও পুর এলাকার বাসিন্দাদের।
শমসেরগঞ্জে গঙ্গার ভাঙনে প্রায় প্রতিদিনই বাড়ি ভাঙছে। রাজ্যের ভাঙন প্রতিরোধ শাখার সুপারিনটেন্ডিং ইঞ্জিনিয়ার ভাস্করসূর্য মণ্ডল বলেন, ‘‘ভাঙন প্রতিরোধে শমসেরগঞ্জ ও ধুলিয়ানের জন্য ২২ কোটি ৯৬ লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয়েছে। এ নিয়ে ইতিমধ্যে দরপত্রও আহ্বান করা হয়েছে। কিন্তু ডিসেম্বরের আগে কাজ শুরু করা যাবে না। পাড়ের ভাঙন রুখতে পাথর বাঁধানোর কাজ এখন হয় না। কারণ, পাথর পাওয়া যায় না। তাই বালির বস্তা খাঁচায় ভরে পাড়ে ফেলা হবে।” যদিও তাতে ভাঙনের স্থায়ী সমাধান আদৌ হবে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। মহেশটোলার বাসিন্দা বরুণ সাহা বলেন, ‘‘আগেও তো বালির বস্তা ফেলা হয়েছে। বছর ঘুরতে না ঘুরতেই বালি ধুয়ে গিয়েছে।’’
শমসেরগঞ্জে শিকদারপুর ও লোহরপুরের এক হাজার মিটার পাড় বাঁধানো হবে। বরাদ্দ ১৫ কোটি ৬৫ লক্ষ টাকা। ধুলিয়ানের ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে ৫০ মিটার এলাকায় কাজ হবে। বরাদ্দ হয়েছে সাত কোটি ৩১ লক্ষ টাকা। ৫৭৮ দিনের মধ্যে দু’টি কাজ শেষ করতে হবে। মাসকয়েক আগে শমসেরগঞ্জে ভাঙন পরিদর্শনে এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দের ঘোষণা করেন। প্রশাসনকে নির্দেশ দেন, ভাঙনকবলিত এলাকায় নদীপাড় থেকে বাসিন্দাদের সরিয়ে দেওয়ার। সেই কাজ এগোয়নি বলে অভিযোগ। এ নিয়ে জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী বাসিন্দাদের সরাতে বলেছেন ঠিকই। কিন্তু তাঁদের
সরাব কোথায়?”
সম্প্রতি বহরমপুরের কংগ্রেস সাংসদ অধীর চৌধুরী এসেছিলেন শমসেরগঞ্জের ভাঙন কবলিত এলাকায়। সেখান থেকেই তিনি ফোন করেছিলেন কেন্দ্রীয় সেচ ও জলসম্পদ মন্ত্রী গজেন্দ্র সিং শেখাওয়াতকে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অধীরের কাছে দাবি করেন, রাজ্য সরকার শমসেরগঞ্জে ভাঙন রোধে সাহায্যের জন্য কেন্দ্রে কাছে নাকি আবেদনই করেনি। তিনি বলেছিলেন ‘‘আবেদন করতে বলুন, তারপর তো টাকা দেওয়ার প্রশ্ন।’’ যদিও এ দিন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর দাবি উড়িয়ে জঙ্গিপুরের তৃণমূল সাংসদ খলিলুর রহমান বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কী বলেছেন জানি না, তবে আমি নিজে রাজ্য সরকারকে ভাঙন রোধে চিঠি পাঠিয়েছি। সেই আবেদন রাজ্য কেন্দ্রের কাছে পাঠিয়েছে। এ ছাড়া, লোকসভায় বারকয়েক আমি বিষয়টি তুলেছি। ফরাক্কায় কেন্দ্রের মন্ত্রী এলে তাঁর সঙ্গে দেখা করেও ভাঙন রোধে স্থায়ী সমাধানের দাবি জানিয়েছি।’’