দুর্ঘটনাগ্রস্ত টোটো। —নিজস্ব চিত্র।
প্রতিশ্রুতি মিলেছে বার বার। অথচ ব্যবস্থা হয়নি রেলগেটের। বাধ্য হয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়েই রেললাইন পারাপার করছেন বাসিন্দারা। মাঝেমধ্যেই লাইন পারাপার করতে গিয়ে আটকে যাচ্ছে ছোট-বড় যানবাহনের চাকা।
সোমবার দুপুরে প্রহরাহীন রেল ক্রসিংয়ে ট্রেনের ধাক্কায় দুমড়ে-মুচড়ে যায় একটি টোটো। গুরুতর জখম হয়েছেন চালক ও টোটোতে থাকা দুই যাত্রী। রানাঘাটের পান্থপাড়ার এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ এলাকার বাসিন্দারা। দ্রুত রেলের তরফে রেলগেট অথবা আন্ডারপাস করার দাবি তুলেছেন তাঁরা।
রানাঘাট ২ ব্লকের শ্যামনগর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকাকে পূর্ব-পশ্চিমে বিভক্ত করেছে রেললাইন। প্রতিদিন পান্থপাড়ায় রেললাইন পারাপার করতে হয় কয়েক হাজার বাসিন্দাকে। স্থানীয় সূত্রের দাবি, বছর ৩৫ আগে রেলের উদ্যোগে এলাকায় গেটের ব্যবস্থা হয়েছিল। কিন্তু তা চালুর আগেই তুলে নেন রেল কর্তৃপক্ষ।
রেল ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন দুপুর পৌনে ২টো নাগাদ পশ্চিম পার থেকে যাত্রী নিয়ে একটি টোটো রানাঘাট শহরের দিকে যাচ্ছিল। রেললাইন পারাপারের সময় রানাঘাট-বনগাঁ লোকাল সেটিকে ধাক্কা দেয়। দুমড়ে-মুচড়ে যায় টোটোটি। এলাকার লোকজন গুরুতর জখম তিন জনকে রানাঘাট মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যান। বিকালে রেললাইন পারাপারের ওই রাস্তা ঘিরে দিতে আসেন রেলকর্মীরা। তাতে আপত্তি জানান স্থানীয় পঞ্চায়েতের জনপ্রতিনিধি ও বাসিন্দারা। ঘটনাস্থলে পৌঁছয় রানাঘাট থানার পুলিশ।
ওই রেললাইন পার করে প্রতিদিন রানাঘাট মহকুমা হাসপাতাল, দু’টি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও বেশ কয়েকটি বেসরকারি বিদ্যালয় ও কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ে যাতায়াত করতে হয় রেলের পূর্ব পারের বাসিন্দাদের। আবার পশ্চিম পারের বাসিন্দাদের রানাঘাট শহর, ব্লক অফিসে যাতায়াতের জন্য ওই রেললাইন পারাপার করতে হচ্ছে। অভিযোগ, রেললাইনের মাঝে খালি অংশে পড়ে রয়েছে ছোট-বড় খোয়া। গাড়ি পারাপারের সময় কোনও ভাবে তাতে চাকা আটকালে আর রেহাই নেই। মাঝেমধ্যেই ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা।
স্থানীয় বাসিন্দা সঞ্জীব সরকার বলেন, "দীর্ঘদিন ধরে আমরা রেলগেটের দাবি জানিয়ে এসেছি। বর্তমানে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে রানাঘাটে ৫৬ নম্বর রেলগেটে উড়ালপুল নির্মাণের কাজ চলছে। যে কারণে যানজট এড়াতে জাতীয় সড়কের গাড়িও এই পথে চলাচল করছে। অথচ দুর্ঘটনা এড়াতে রেল কর্তৃপক্ষ সম্পূর্ণ উদাসীন।"
শ্যামনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান স্বপ্না রায় দাস বলেন, "রেলের পক্ষ থেকে রাস্তার এই অংশ ঘিরে ফেলার কথা বলা হয়েছে। আমরা আপত্তি জানিয়েছি। অস্থায়ী ভাবে আপাতত পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকেই বাঁশের রেলগেট তৈরি করা হবে।"
আর, পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্রের বক্তব্য, "স্থানীয় মানুষজন নিজেদের সুবিধার্থে ওই এলাকায় রেললাইন পারাপারের রাস্তা তৈরি করে নিয়েছেন। কখনও সেখানে রেলের তরফে কোনও গেট ছিল না।"