—প্রতীকী চিত্র।
রানাঘাটে সোনার দোকানে ডাকাতি মামলায় অভিযুক্ত কুন্দনকুমার যাদব ও ছোট্টু পাসওয়ানের হয়ে আইনি সওয়াল সম্পন্ন হল রানাঘাট ফাস্ট ট্র্যাক আদালতের বিচারক মনোদীপ দাশগুপ্তের এজলাসে। গত ২৯ নভেম্বর থেকে শুরু হয় এই মামলার সাক্ষ্যদান পর্ব। আট দিনে মোট ৩৫ জন রানাঘাট আদালতে এসে সাক্ষ্য দিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে আছেন প্রত্যক্ষদর্শী, ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ, চিকিৎসক, চিত্রগ্রাহক ও রানাঘাট থানার পুলিশ আধিকারিকেরা।
এই দিন তাঁদের সওয়ালে বেশ কিছু আইনি ব্যাখ্যা ও উচ্চ আদালতের প্রায় ৩০টি মামলার রায়ের উদাহরণ তুলে ধরে দুই অভিযুক্তদের আইনজীবী সুমন রায় বলেন, "এই মামলার তদন্তকারী পুলিশ আধিকারিক সাক্ষ্যদানের সময় বলেছেন, একটি অভিযোগের ভিত্তিতে রানাঘাট থানার চার পুলিশ অফিসার ঘটনার দিন ঘটনাস্থলে যান। অথচ পুলিশের তরফে বলা হয়েছে যে, লিখিত অভিযোগ জমা পড়েছিল রাত ৮টা ৪৫ মিনিটে৷” তাঁর দাবি, “তদন্তকারী আধিকারিকের জবানবন্দির সঙ্গে এজাহার গ্রহণের সময় মিলছে না। এ ক্ষেত্রে পুলিশ আগে পাওয়া অভিযোগটি গোপন করছে। ওই গয়নার দোকানের মহিলা কর্মী ডাকাতি চলাকালীন রানাঘাট থানার আইসি-কে ফোন করে বিষয়টি জানিয়েছিলেন। ওই ফোন পাওয়ার পর পুলিশের ডায়েরি করার কথা। অথচ পুলিশ তা করেনি।" এই মামলায় কেন রানাঘাট থানার আইসি-কে স্বাক্ষী করা হয়নি, সেই প্রশ্নও তোলেন তিনি।
অভিযুক্তের আইনজীবী আরও বলেন, "সাক্ষ্যদানের সময় রানাঘাট থানার সাব ইনস্পেক্টর আলতাব হোসেন জানিয়েছিলেন, কয়েক জন দুষ্কৃতী মিশন রোড ধরে পালিয়ে যায়। কয়েক জন রেললাইন পার করে পূর্ব দিকে চলে যায়। রেলের পূর্ব পার থেকে যে দুষ্কৃতীদের গ্রেফতার করা হয়েছে, তাদের কাছ থেকে একটি মোটরবাইক উদ্ধার হয়েছে।" তাঁর প্রশ্ন, "লেভেল ক্রসিং ব্যবহার না করে দুষ্কৃতীরা কী ভাবে মোটরবাইক নিয়ে রেললাইন পারাপার করল?"
একই সময়ে চারটি পৃথক জায়গায় উপস্থিত থেকে চারটি আলাদা বাজেয়াপ্ত তালিকা এক জন পুলিশকর্মীর পক্ষে কী ভাবে লেখা সম্ভব, সেই প্রশ্নও তোলেন অভিযুক্তের আইনজীবী। তিনি বলেন, "সাক্ষ্যদানের সময় এক সাক্ষী বলে গিয়েছেন, পুলিশ এক দুষ্কৃতীকে ধরে নিয়ে আসছিল, তার হাতে আগ্নেয়াস্ত্র ছিল, সেই দৃশ্য তিনি দেখেছেন। প্রশ্ন হচ্ছে, দুস্কৃতীকে নিরস্ত্র না করে, পুলিশ তার হাত ধরে নিয়ে আসছিল কী করে?" পুলিশের কাজে বাধা দেওয়া বা কাউকে খুনের উদ্দেশ্য নিয়ে কিছু করা হয়নি বলেও তিনি দাবি করেন।
এই সওয়ালের সময় সরকার পক্ষের কোনও আইনজীবীকে আদালতে দেখা যায়নি। আজ, বুধবার মামলার অপর দুই অভিযুক্তের আইনজীবীর সওয়াল করার কথা হয়েছে।