ফিরে যাও: ডিওয়াইএফআই-এর প্রতিবাদ। শনিবার কৃষ্ণনগরে। নিজস্ব চিত্র
কলকাতায় প্রধানমন্ত্রীর পা রাখার দিন রাজ্যের বিভিন্ন জায়গার মতো রানাঘাট শহরেও ‘নরেন্দ্র মোদী গো ব্যাক’ ধ্বনি তুললেন বামপন্থীরা।
শনিবার বিকাল চারটে থেকে রানাঘাট কোর্ট মোড়ে বামফ্রন্টের তরফে বিক্ষোভ সভার আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে বিধায়ক রমা বিশ্বাস, শান্তনু ঝা, দেবাশিস চক্রবর্তীরা বক্তব্য রাখেন। একই প্রসঙ্গে এ দিন সভা হয় হবিবপুর এলাকায়। সেখানে স্থানীয় বিডিও অফিস মোড়ে প্রতিবাদ সভা ডেকেছিল বামপন্থী ছাত্র-যুব-কৃষক সংগঠন। সম্প্রতি দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ে গোলমালের ঘটনার ছায়াও পড়েছে এই প্রতিবাদে। কখনো প্রতীকী প্রতিবাদ হিসাবে ট্রেনে চা ও পকোড়া বিক্রি, আবার কখনও প্রধানমন্ত্রীর নামে ‘গো ব্যাক’ স্লোগান— সিপিএমের ছাত্র এবং যুব সংগঠনের তরফে নাগরিকত্ব আইন নিয়ে জেলার নানা প্রান্তে আন্দোলন অব্যাহত। গত শুক্রবার পলাশি থেকে কৃষ্ণনগর লাইনে প্রতীকী কর্মসূচী হিসাবে ট্রেনে এবং স্টেশনে চা ও পকোড়া বিক্রি করা হয় এসএফআই-এর তরফে। প্রতি চায়ের কাপে নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে স্লোগান লেখা ছিল। এসএফআই-এর জেলা সম্পাদক মৌপ্রিয়া রাহা বলছেন, “রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এবং দেশের প্রধানমন্ত্রী বেকার যুবক যুবতীদের কর্মসংস্থানের দিশা দেখাতে পারছেন না। বরং পড়ুয়াদের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের উপরে আক্রমন হচ্ছে। এর সঙ্গেই নাগরিকত্ব আইনেরও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।”
এ দিন ডিওয়াইএফআই এর জেলা সম্পাদক রুদ্রপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় বলেন, “প্রতিটি লোকাল কমিটিতেই এই কর্মসূচি পালনের কথা বলা হয়েছে। জেলায় অন্তত ৩০ জায়গায় শনিবার এই কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। রবিবারও তা হবে।” এ দিন ফুলিয়া, হবিবপুর, নবদ্বীপের মত বেশ কিছু জায়গায় এই কর্মসূচি পালিত হয়েছে। বাম শরিক আরএসপির তরফে শনিবার কৃষ্ণনগর শহরের নানা জায়গায় নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে পোস্টার লাগানো হয়। লাগানো হয় ‘প্রধানমন্ত্রীকে গো ব্যাক’ লেখা পোস্টারও। কিছু এরিয়া কমিটির বিক্ষোভ মিছিল বের করে। কল্যাণী মহকুমার বেশ কিছু জায়গায় এই কর্মসূচি পালিত হয়। এ দিন কৃষ্ণনগরেও এসইউসিআই-এর তরফে একই কর্মসূচি নেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রীর নামে ‘গো ব্যাক’ স্লোগান তুলে সেখানেও একটি পদযাত্রা করেন তাঁরা। জেলার দেবগ্রাম, তেহট্টের মত জায়গাতেও এসইউসিআই এর তরফে একই কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে।
বামেদের আন্দোলনের জোর ক্রমশ বাড়তে থাকলেও এত দিন নাগরিকপঞ্জি বিষয়ে কড়া অবস্থান নেওয়া শাসক দল এখন চুপ করে যাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। শনিবার কলকাতায় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দেখা করা ও প্রধানমন্ত্রীর সভায় উপস্থিত থাকার পর বিভিন্ন মহলে অভিযোগ উঠছে, তলে তলে বোঝাপড়া হয়েছে বিজেপি-তৃণমূলের। যদিও অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে তৃণমূল। রানাঘাট ১ ব্লকের একাধিক গ্রাম পঞ্চায়েতে গত কয়েক দিনে নাগরিকত্ব আইন ও জাতীয় নাগরিকপঞ্জির বিরুদ্ধে পদযাত্রা করেছে শাসক দল। শনিবার বিকেলে তারাপুর পঞ্চায়েত এলাকায় তারা পদযাত্রা করে। তারাপুরের কালিবাজার থেকে শুরু হয়ে গ্রামের নানা এলাকা ঘুরে সুরেশনগরে এসে তা শেষ হয়। আজ রবিবার কল্যাণীতেও তাঁরা পদযাত্রা করবেন বলে জেলা তৃণমূল সূত্রে জানা গেছে।