বিক্ষোভের নেতৃত্বে সাবিনা ইয়াসমিন। —নিজস্ব চিত্র।
দুর্নীতির অভিযোগে বিডিয়োর দফতর ঘেরাও করলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাতে নেতৃত্ব দিলেন শাসক দলের বিধায়ক সাবিনা ইয়াসমিন স্বয়ং। শুধু তাই নয়, বিডিয়োর অপসারণের দাবি তুলে ধর্নায়ও বসলেন তিনি। বুধবার কালিয়াচক থানার ২ নম্বর ব্লকের সামন এমনই দৃশ্য দেখা গেল।
কালিয়াচক ৯ নম্বর এলাকায় সরকারি কাজে দুর্নীতির অভিযোগ বহু দিন ধরেই। সে ১০০ দিনের কাজ হোক বা আবাসন প্রকল্পের আওতায় মাথার উপর ছাদের ব্যবস্থা। এ নিয়ে বার বার অভিযোগ জানানো সত্ত্বেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। তা নিয়েই এ দিন ধর্নায় বসেন মোথাবাড়ি কেন্দ্রের তৃণমূল বিধায়ক সাবিনা। তাতে শামিল হন গ্রামের বাসিন্দারাও। বিক্ষোভ থামাতে শেষমেশ ছুটে যেতে হয় পুলিশকে।
সাবিনা বলেন, ‘‘দীর্ঘদিন ধরে ২ নম্বর ব্লকের বিভিন্ন গ্রাম পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ উঠছে। বার বার তা জানানো সত্ত্বেও অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছেন না স্থানীয় বিডিয়ো সঞ্জয় ঘিসিং। কোন সরকারি অনুষ্ঠানে যান না তিনি। গ্রামবাসীদের সঙ্গে কোনওরকম যোগাযোগ রাখেন না। কেউ অভিযোগ করলে বলেন, তাঁর কিছু করার নেই। তাহলে উনি আছেন কী করতে? ওঁর জন্য এলাকায় উন্নয়নের কাজ থমকে রয়েছে। এলাকাবাসীর স্বার্থে তাই শাসক দলের অধিনায়ক হয়েও আজ আমাকে এখানে আসতে হয়েছে।’’ এ ব্যাপারে সাবিনার পাশে দাঁড়িয়েছেন জেলা তৃণমূলের মুখপাত্র শুভময় বসুও। তিনি বলেন, রাজ্য প্রশাসনকে বিষয়টি জানানো হবে।
আরও পড়ুন: সপ্তম পর্বের আনলকে নয়া করোনা নির্দেশিকা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের
আরও পড়ুন: গোটা বাংলায় দলের পর্যবেক্ষক তিনিই, নাম না করে কাকে বার্তা দিলেন মমতা
কালিয়াচক ২ নম্বর ব্লকের গঙ্গাপ্রসাদ গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য মতিউর রহমানের অভিযোগ, ‘‘স্থানীয় প্রধানের বিরুদ্ধে বার বার ১০০ দিনের কাজ-সহ বিভিন্ন প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। কিন্তু কেউ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। যাঁরা দুর্নীতি করছেন, বিডিয়ো তাঁদের আড়াল করছেন। আগে থেকে জানিয়ে এ দিন আমরা ডেপুটেশন দিতে এসেছিলাম। তার পরেও দফতরে থাকা প্রয়োজন বলে মনে করেননি। তাতেই মানুষ আরও ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন।’’ দফতরে বিডিয়ো না থাকায় ২ নম্বর ব্লকের যুগ্ম বিডিয়ো দেবব্রত মণ্ডলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানিয়ে দেন, এ ব্যাপারে কিছু বলার নেই তাঁর। যা জানানোর তা সরাসরি জেলাশাসককে জানাবেন।
বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছে বিজেপিও। জেলায় দলের সহ-সভাপতি অজয় গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এই বিডিয়োর বিরুদ্ধে ভূরি ভূরি অভিযোগ রয়েছে। যে কারণে শাসক দলের বিধায়কও শেষমেশ বিক্ষোভ করতে বাধ্য হয়েছেন। ওই সরকারি আধিকারিক এমন ভাবে কাজ করছেন যে উন্নয়ন আটকে যাচ্ছে। ২০২১-এ ক্ষমতায় এলে তদন্ত করে এঁদের শ্রীঘরে পাঠাব আমরা।’’