শেখ হাসিনা। —ফাইল চিত্র।
নতুন মামলায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করল বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল (আইসিটি)। বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী তথা আওয়ামী লীগ নেত্রী হাসিনা ছাড়াও তাঁর প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত উপদেষ্টা, অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল তারিক আহমেদ সিদ্দিকি, বাংলাদেশ পুলিশের প্রাক্তন আইজি বেনজির আহমেদের বিরুদ্ধেও গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। মোট ১২ জনের বিরুদ্ধে পরোয়ানা জারি হয়েছে।
অভিযোগ, হাসিনার আমলে বেশ কয়েক জনকে গুম এবং বিচার ছাড়াই হত্যা করা হয়েছিল। সোমবার এই গুম এবং খুনের ঘটনায় হাসিনা-সহ ১২ জনকে অভিযুক্ত করে মামলা দায়ের করেন ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মহম্মদ তাজুল ইসলাম। তার পর ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মহম্মদ গোলাম মর্তূজা মজুমদার হাসিনাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি এবং গ্রেফতার কার্যকর করার নির্দেশ দেন। আগামী ১২ ফেব্রুয়ারির মধ্যে হাসিনা-সহ ১২ জনকে হাজির করানোর নির্দেশ দেওয়া হয়।
প্রসঙ্গত, কোটা সংস্কার আন্দোলন পর্বে ‘গণহত্যা এবং মানবতা-বিরোধী অপরাধ’-এর অভিযোগে দায়ের হওয়া দু’টি মামলায় গত অক্টোবর মাসে হাসিনা-সহ ৪৫ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে ট্রাইব্যুনাল। ১৮ নভেম্বরের মধ্যে হাসিনা-সহ সব অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে ট্রাইব্যুনালে হাজির করানোর নির্দেশ দেওয়া হয় তদন্তকারী সংস্থাকে। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলাগুলির বিচারের উদ্দেশ্যে ২০১০ সালে হাসিনার আমলেই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠিত হয়েছিল। এই ট্রাইব্যুনালে ইতিমধ্যে একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে অনেকের বিচার হয়েছে। ফাঁসি-সহ বিভিন্ন মেয়াদের কারাবাসের শাস্তি কার্যকর হয়েছে। হাসিনা জমানায় মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত আরও কয়েক জনের বিচারও ট্রাইব্যুনালে চলছিল। এ বার সেই ট্রাইব্যুনালই গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করছে হাসিনার বিরুদ্ধে।
গত ৫ অগস্ট জনবিক্ষোভের জেরে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী পদে ইস্তফা দিয়ে ঢাকা ছেড়ে ভারতে চলে এসেছিলেন হাসিনা। বর্তমানে এই দেশেই রয়েছেন তিনি। ডিসেম্বরের শেষে হাসিনাকে ফেরতে চেয়ে ভারতে কূটনৈতিক চিঠি পাঠিয়েছিল বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার। কিন্তু ভারত আনুষ্ঠানিক ভাবে তার কোনও জবাব দেয়নি বলেই কূটনৈতিক সূত্রে খবর।