ছত্তীসগঢ়ের সাংবাদিক মুকেশ চন্দ্রকরকে খুন করে সেপটিক ট্যাঙ্কে রাখা হয়েছিল দেহ। —ফাইল চিত্র।
পাঁজর ভেঙে ছিঁড়ে বার করে আনা হয় হৃৎপিণ্ড। ছত্তীসগঢ়ের সাংবাদিক মুকেশ চন্দ্রকরের দেহের ময়নাতদন্তের রিপোর্টে প্রকাশ্যে এসেছে নৃশংসতার এমনই সব চিহ্ন। ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, দীর্ঘ চাকরিজীবনে এই ধরনের নৃশংসতা তাঁরা আগে কখনও দেখেননি। মুকেশের বুকের পাঁচটি পাঁজর ভাঙা ছিল। তাঁর লিভার টুকরো টুকরো করে দেওয়া হয়েছিল। শুধু তা-ই নয়, তাঁর মাথাতেও একাধিক হাড় ছিল ভাঙা।
গত ৩ জানুয়ারি ছত্তীসগঢ়ের বস্তারে স্থানীয় ঠিকাদার সুরেশ চন্দ্রকরের বাড়ির সেপটিক ট্যাঙ্ক থেকে মুকেশের দেহ উদ্ধার করা হয়েছিল। ১ জানুয়ারি থেকে নিখোঁজ ছিলেন তিনি। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছিল, দুর্নীতি মামলায় ঠিকাদার সুরেশের কারসাজি ফাঁস করে দিয়েছিলেন মুকেশ। তার পরেই তাঁকে খুন করা হয় বলে অভিযোগ। ঘটনার পর থেকেই সুরেশ পলাতক ছিলেন। রবিবার রাতে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। নিহত সাংবাদিকের ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পেয়েছে পুলিশ। সূত্রের খবর, সেখানে বলা হয়েছে, মুকেশের হৃৎপিণ্ড ছিঁড়ে বার করে আনা হয়েছিল। ভাঙা হয়েছিল বুকের পাঁজর। তাঁর মাথায় অন্তত ১৫টি হাড় ভাঙা ছিল। এমনকি, তাঁর ঘাড়ের হাড়ও ভেঙে দেওয়া হয়েছিল। মুকেশের শরীরে তাঁর লিভারের চারটি টুকরোও পেয়েছেন ময়নাতদন্তকারীরা।
চিকিৎসকদের মতে, এই ধরনের হত্যাকাণ্ড এক জনের পক্ষে সম্ভব নয়। দুইয়ের বেশি মানুষ এই খুনের সঙ্গে প্রত্যক্ষ ভাবে জড়িত ছিলেন বলে তাঁদের ধারণা। এই হত্যাকাণ্ডের তদন্ত করছে ছত্তীসগঢ় পুলিশের বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট)। এখনও পর্যন্ত তারা মোট চার জনকে গ্রেফতার করেছে। মূল অভিযুক্ত সুরেশকে রবিবার গ্রেফতার করা হয় হায়দরাবাদ থেকে। তার আগে তাঁর দুই ভাই রিতেশ এবং দীনেশকেও গ্রেফতার করা হয়েছিল। এই ঘটনায় গ্রেফতার হয়েছেন মুকেশের এক তুতো ভাইও।
স্থানীয় একটি সংবাদমাধ্যমের চ্যানেলে কাজ করতেন মুকেশ। বস্তারে ১২০ কোটি টাকার একটি সড়ক নির্মাণ প্রকল্পে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল। সুরেশ সেই দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন বলে অভিযোগ। তাঁর একাধিক কীর্তি ফাঁস করেছিলেন মুকেশ। যার ফলে রাজ্য সরকারও এই দুর্নীতির তদন্ত শুরু করে।