চলছে সম্মেলন।— নিজস্ব চিত্র।
দলের রাজ্য সম্মেলনের মঞ্চে শরিক দল সিপিএম এবং কংগ্রেসের সমালোচনা করলেন আরএসপি-র রাজ্য সম্পাদক ক্ষিতি গোস্বামী।
শুক্রবার বহরমপুরে সুইমিং পুলের মাঠে ২০ তম রাজ্য সম্মেলনের প্রকাশ্য অধিবেশন শুরু হয়। সভার প্রধান বক্তা ছিলেন ক্ষিতিবাবু। সেখানে অধীর চৌধুরীর নাম না করে তিনি বলেন, “কংগ্রেস তার ঐতিহ্য ছেড়ে এই জেলার ভার তুলে দিয়েছে এক বাহুবলীর হাতে। কংগ্রেসকে গ্রাস করেছে রবিনহুডি কালচার।’’ রাজ্যে কংগ্রেসের হাল ফেরাতেও সেই ‘রবিনহুড’ ব্যর্থ বলে তাঁর দাবি। তিনি বলেন, “সর্বভারতীয় ক্ষেত্রের মতো প্রদেশেও নেতা খুঁজে পাচ্ছে না কংগ্রেস। তাই দলের হাল ফেরাতে তাঁরা প্রদেশ সভাপতি করেছেন রবিনহুডকে। কিন্তু সেই আশা পূরণ হল না। কংগ্রেস থেকে নেতাকর্মীরা সরে যাচ্ছে অন্য দলে।”
নাম না করে দলের বিধায়ক-সাংসদ থেকে বামফ্রন্টের বড় শরিক সিপিএমকেও তুলোধোনা করেন আরএসপি-র রাজ্য সম্পাদক। তাঁর কথায়, “এমএলএ, এমপি হয়ে সাধারণ মানুষকে দূরে সরিয়ে রেখেছি আমরা। এখন তার ফল ভুগতে হচ্ছে।’’ বামফ্রন্টের ঐক্য নিয়েও তিনি কটাক্ষ করেন। তিনি বলেন, “বামফ্রন্টের মধ্যে কে বড়, কে ছোট—তাই নিয়ে আমরা আকচা-আকচি করেছি। লড়াই সংগ্রামের ফ্রন্ট গড়া হলেও আসলে বামফ্রন্ট ছিল ভোটের ফ্রন্ট। সুবিধাবাদী নির্বাচনী ফ্রন্ট। বিহারে, উত্তরপ্রদেশে কুর্সি পেতে যার তার সঙ্গে হাত ধরেছি।’’ এ দিন তিনি নাম না করে প্রাক্তন মন্ত্রী হুমায়ুন কবীরের দলত্যাগের বিষয়টিও টেনে আনেন। ক্ষিতিবাবু বলেন, “কংগ্রেস থেকে বিধায়ক হয়ে দলত্যাগ করে মন্ত্রী হলেন। মানুষ কিন্তু তাঁকে গ্রহণ করেনি। উপ নির্বাচনে পরাজিত হয়েছেন তিনি।’’
পুরভোটে পুলিশি মদতে সন্ত্রাস করে তৃণমূল ভোটে জিততে চায়ছে বলে দাবি ক্ষিতিবাবুর। তিনি বলেন, “নারী নির্যাতনের ক্ষেত্রে পুলিশ নিষ্ক্রিয় থাকছে। সেই পুলিশের সাহায্য নিয়েই সন্ত্রাস করে ভোটে জিতবে তৃণমূল। মানুষের আর্শীবাদে নয়।’’ বিজেপি-রও কড়া সমোলাচনা শোনা গিয়েছে তাঁর মুখে। এ দিনের সভার সভাপতি ছিলেন প্রাক্তন মন্ত্রী বিশ্বনাথ চৌধুরী। সারদা-কাণ্ডে তৃণমূলের মন্ত্রী ও সাংসদদের জেলবন্দি হওয়ার প্রসঙ্গ তোলেন তিনি।
আরএসপি-র মুর্শিদাবাদ জেলা সম্পাদক বিশ্বনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় ত্রুটি-বিচ্যুতি দূর করে বাম ঐক্য সুদৃঢ় করার উপরে জোর দেন। আগামী রবিবার পর্যন্ত বহরমপুর রবীন্দ্রসদনে আরএসপি-র তিন দিনের প্রতিনিধি সম্মেলন চলবে বলে জানা গিয়েছে।