তৃণমূলের বৈঠক। নিজস্ব চিত্র
পঞ্চায়েত নির্বাচনের মুখে আবাস যোজনায় ওঠা দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে যে শাসক দলে অস্বস্তি বাড়ছে, ফের তা সামনে এল জঙ্গিপুর সাংগঠনিক জেলার নয়া নির্দেশে।
সোমবার দলের রাজ্য সহ সভাপতি জাকির হোসেনকে পাশে বসিয়ে সাংবাদিক বৈঠক ডেকে দলের নেতা ও পঞ্চায়েত সদস্যদের কাছে তাঁদের বা তাঁদের পরিবারের কারও নামে আবাস যোজনার ঘর বরাদ্দ হয়ে থাকলে তা অবিলম্বে ফিরিয়ে দেওয়ার আর্জি জানালেন তৃণমূলের জঙ্গিপুরের সভাপতি খলিলুর রহমান।
খলিলুর বলেন, “যাঁদের পাকা ঘর আছে, গাড়ি, বাইক রয়েছে তাঁরা অবস্থাপন্ন। কাজেই এই সব বিত্তশালীদের বলব তাঁরা ব্লক অফিসে নিজেরাই আবেদন করুন তালিকা থেকে নাম বাতিল করতে। আর যাঁরা দলের পঞ্চায়েত সদস্য, প্রধান বা দলের কোনও পদে রয়েছেন, তাঁদের প্রতি দলের নির্দেশ একই ভাবে তালিকা থেকে তাঁদের নিজেদের বা পরিবারের কারও নাম থাকলে তা বাদ দেওয়ার আবেদন করুন বিডিওদের কাছে। হতে পারে, দলের সেই পদাধিকারী গরিব। ঘর পাওয়ারও যোগ্য। কিন্তু তবু তাকে বলব, তিনি যেন তাঁর নামটা তালিকা থেকে কাটিয়ে এলাকায় নজির সৃষ্টি করেন। কারণ রাজনীতি করতে গেলে অনেক ক্ষেত্রেই কিছু আত্মত্যাগ করতে হয়। আমরা জানি এমন অনেকের নাম তালিকায় রয়েছে। এতে দল অস্বস্তিতে পড়েছে অনেক জায়গায়।”
খলিলুরের কথায়, “১২ জানুয়ারি পর্যন্ত তালিকা সংশোধনের সুযোগ দিয়েছে জেলা প্রশাসন। তাই ১১ জানুয়ারি ‘দিদির দূত’-রা গ্রামে গ্রামে যাওয়ার আগেই আবাস তালিকা থেকে নিজেরাই তাঁদের নাম কাটুন। আপনারা সরে দাঁড়ালে অযোগ্য বিত্তশালী মানুষেরাও সরে দাঁড়াতে বাধ্য হবে লজ্জায়। তারা সরে না দাঁড়ালে তার দায় নিতে হবে বিডিওদের।”
তৃণমূলের রাজ্য সহ সভাপতি জাকির হোসেন বলেন, “যদি দেখা যায় দলের কোনও নেতা বা পঞ্চায়েত সদস্য ও প্রধান আবাস যোজনায় আমাদের আবেদন সত্ত্বেও নাম রেখে দলকে বিড়ম্বনায় ফেলছেন তা হলে দলও তাঁদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করবে। তাঁকে এ বারে পঞ্চায়েতে দল মনোনয়ন দেবে না শুধু তাই নয়, প্রয়োজনে তাঁর বিরুদ্ধে এফআইআর করা হবে। পঞ্চায়েতে লড়তে গেলে মানুষের কাছে আপনার স্বচ্ছতা প্রমাণ করতে হবে। ইতিমধ্যেই পঞ্চায়েতের এমন কিছু সদস্যের নাম দলের সামনে এসেছে।” জাকিরের কথায়, “কয়েকটি পঞ্চায়েতে সদস্য বা প্রধান নিজেদের পাশাপাশি তার মা, বোন, দাদা, ভাই সবার নাম ঢুকিয়েছেন তালিকায়। এটা অস্বচ্ছতা। এই অস্বচ্ছতাকে দল প্রশ্রয় দেবে না। দিদির দূত-রা গ্রামে গ্রামে যাবে। দিনভর গ্রামে কাটাবে। তখন যেন তৃণমূলের কোনও সদস্যের বিরুদ্ধে আবাস যোজনা নিয়ে মানুষ অভিযোগ তুলতে না পারে। তা হলে ওই সদস্যের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করবে দল।”