দক্ষিণ মুর্শিদাবাদ জেলা তৃণমূলের সভাপতি অপূর্ব সরকার। সোমবার কান্দিতে। ছবি: কৌশিক সাহা
‘আমি নয়, আমরা’ এই সমীকরণে দলের সংগঠন করতে চান দক্ষিণ মুর্শিদাবাদ জেলা তৃণমূলের নবনিযুক্ত সভাপতি তথা কান্দির বিধায়ক অপূর্ব সরকার। সাংসদ আবু তাহেরের অসুস্থতার কারণে অপূর্ব ছিলেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। এ বার লোকসভা ভোটের মুখে দলের জেলার দক্ষিণ প্রান্তের দায়িত্ব তাঁর হাতেই তুলে দিয়েছেন তৃণমূলের রাজ্য নেতৃত্ব। সোমবার দুপুরে তৃণমূলের রাজ্য নেতৃত্ব রাজ্য জুড়ে দলের সাংগঠনিক জেলা নেতৃত্বের রদবদল করেন।
কয়েক মাস বাদেই লোকসভা ভোট। গত পঞ্চায়েত ভোট থেকেই জেলা তৃণমূলের অন্দরে প্রার্থী তালিকা নিয়ে বৃহত্তর দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে চলে আসে। এ বার লোকসভা ভোটের আগে দলের মধ্যে কোন দ্বন্দ্ব না রাখতেই রাজ্য নেতৃত্ব এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলেও মত দলের একাংশের।
কেন্দ্র থেকে বিজেপিকে সরাতে ‘ইন্ডিয়া’ জোট হয়েছে। সেখানে দলকে নতুন করে সাজাতে ওই রদবদল বলেও মত অনেকের। সভাপতি অপূর্ব সরকার বলেন, “সামনেই বড় লড়াই। আমরা আমাদের নেত্রীর সঙ্গে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ মেনে কেন্দ্রের সাম্প্রদায়িক সরকারের পরাস্ত করবো।”
অধীরের হাত ধরে কান্দি পুরসভার কাউন্সিলর থেকে বিধায়ক, পুরসভার পুরপ্রধান হয়েছিলেন অপূর্ব। এবার সামনে লোকসভা ভোট। কংগ্রেস সাংসদ অধীরের বিরুদ্ধে প্রার্থী হিসাবেও অপূর্বকে দেখতে চান বলে দাবি তৃণমূলের একটি বৃহত্তর অংশের। তাহলে আগামী লোকসভা ভোটে বহরমপুর কেন্দ্রের দিক নজর থাকবে সারা রাজ্যের। সেক্ষেত্রে একজন প্রার্থী ও দলের সভাপতি হিসাবে কতখানি কঠিন হবে সেই লড়াই? অপূর্ব বলেন, “প্রথমত আমি প্রার্থী হচ্ছি এটা বলার আমি কেউ নই। আমাদের নেত্রী রয়েছেন, তিনিই সিদ্ধান্ত নেবেন কে প্রার্থী হবেন। আর তৃণমূলের যে কোনও এক জন কর্মী যদি অধীর চৌধুরীর বিরুদ্ধে প্রার্থী হন তৃণমূলই জয়ী হবে। এটা বলতে পারি।”
গত পঞ্চায়েত ভোট থেকে বিজয়া সম্মিলনী পালন করতে গিয়ে জেলা জুড়ে শাসক দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব বারংবার প্রকাশ্যে এসেছে। পঞ্চায়েত ভোটের প্রার্থী তালিকা নিয়ে জেলা তৃণমূলের মধ্যে প্রকাশ্যে চলে আসে দ্বন্দ্ব। সেই দ্বন্দ্বের সূচনা বিজয়া সম্মিলনীতেও মেটেনি। জেলার সিংহ ভাগ ব্লকে বিধায়ক ও ব্লক সভাপতিরা পৃথক পৃথক ভাবে বিজয়া সম্মিলনীর আয়োজন করতে দেখা গিয়েছে। ওই দ্বন্দ্ব কাটিয়ে নতুন করে সকলকে এক ছাতার নীচে আনাও বেশ কঠিন বলে মনে করছেন দলের একাংশ। যদিও অপূর্ব বলেন, “আমাদের দ্বন্দ্ব নেই।”