Jute Farmers

পাটের ফলন নিয়ে চিন্তায় চাষি

নওদা, বেলডাঙা এলাকায় প্রচুর পরিমাণে পাট চাষ হয়। জুট কর্পোরেশন অব ইন্ডিয়া বা জেসিআইয়ের বেথুয়াডহরি রিজিয়নেরর মধ্যে পড়ে ওই এলাকা।

Advertisement

মফিদুল ইসলাম

নওদা শেষ আপডেট: ২৩ জুলাই ২০২৪ ০৮:৪২
Share:

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

পাট কাটার সময় এসেছে। জেলার বিভিন্ন জায়গায় পাট কাটার হিড়িক দেখা যাচ্ছে। পাট চাষিদের দাবি, পাটের ফলন নিয়ে চিন্তায় রয়েছেন তাঁরা। চাষিদের একাংশের দাবি, এ বছর আষাঢ়ের মাঝামাঝি সময়ে পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত হয়নি। আষাঢ়ের মাঝামাঝি অর্থাৎ জুন মাসের শেষ পর্যন্ত বৃষ্টিপাতের ঘাটতি ছিল প্রায় ৫১ শতাংশ। চাষিদের একাংশের দাবি, বৃষ্টিপাতের ঘাটতির কারণে শুকিয়ে যাচ্ছিল খেতের পাট সহ অন্য ফসল।

Advertisement

চাষিদের দাবি, পাট চাষ মূলত বৃষ্টির জলের উপর নির্ভর করে। এ বছর বৃষ্টিপাতের ঘাটতির কারণে ছোট অবস্থায় জেলার বিভিন্ন জায়গায় পাট খেতে ফুল দেখা দিয়েছিল। এক থেকে দেড় ফুট উচ্চতার গাছেও শাখাপ্রশাখা বিস্তার করেছিল। যার ফলে অনেক চাষি পাট গাছ কেটে ফেলেছেন। তা ছাড়া অধিকাংশ খেতের পাট শুকিয়ে যাচ্ছিল। যার ফলে পাট গাছের বৃদ্ধি ব্যাহত হয়েছে।

কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, জুন মাস পর্যন্ত বৃষ্টিপাতের ঘাটতি থাকলে জুলাই মাসের প্রথম দিকে ভাল বৃষ্টিপাত হয়েছে। ফলে প্রাণ পেয়েছে পাট সহ অন্য ফসল। এ দিকে পাট কাটার মরসুম শুরু হয়েছে। চাষিদের দাবি, পাট কাটার মরসুম হলেও এ বছর বৃষ্টির অভাবে পাট গাছের বৃদ্ধি ব্যাহত হয়েছে। অন্য দিকে জলাশয়ে নেই পর্যাপ্ত জল। ফলে পাট জাঁক দেওয়া নিয়েও সমস্যায় পড়েছেন চাষিরা। অল্প জলে পাট জাঁক দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে অনেক জায়গায়। নওদার চাষি মিঠুন কারিকর বলেন, “জলের অভাবে এ বছর পাট গাছে বৃদ্ধি ব্যাহত হয়েছে। ফলে আঁশের পরিমাণ কম হবে। ফলন মারাত্মক ভাবে কম হবে। জলাশয়ে জল নেই তবুও পাট কেটে ফেলতে হচ্ছে। হয়তো চাষের খরচটুকুই উঠবে না।” অন্যদিকে পাট জাঁক দেওয়ার জন্য পর্যাপ্ত জল না পেলে পাটের আঁশ বা তন্তুর গুণগত মান খারাপ হবে। ফলে দামের দিক থেকেও ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কায় চাষিরা।

Advertisement

নওদা, বেলডাঙা এলাকায় প্রচুর পরিমাণে পাট চাষ হয়। জুট কর্পোরেশন অব ইন্ডিয়া বা জেসিআইয়ের বেথুয়াডহরি রিজিয়নেরর মধ্যে পড়ে ওই এলাকা। ওই রিজিয়নের জুট আই কেয়ার প্রজেক্টের ব্লক সুপার ভাইজাররা গত কয়েক দিন ধরে নওদা, বেলডাঙার বিভিন্ন এলাকায় পাট খেত পরিদর্শন করেছেন। তাঁরা কথা বলেছেন চাষিদের সঙ্গেও।

জেসিআই কর্তাদের দাবি, গত কয়েক বছরের তুলনায় এ বছর প্রায় ২০ শতাংশ পাট কম চাষ হয়েছে। অন্য দিকে ফলন কমলে পাট শিল্পে তার প্রভাব পড়তে পারে।

বেথুয়াডহরি রিজিয়নের জুট আই কেয়ার প্রোজেক্টের ব্লক সুপার ভাইজার জগবন্ধু সরকার বলেন, “এ বছর পাট চাষ তুলনামূলক ভাবে কম হয়েছে। বৃষ্টিপাতের ঘাটতির কারণে পাট গাছের বৃদ্ধি ব্যাহত হয়েছে। জলাশয়ে পর্যাপ্ত জল না থাকায় চাষিরা পাট জাঁক দেওয়া নিয়েও সমস্যায় পড়তে পারেন। সমস্যার কথা আমরা সংশ্লিষ্ট দফতরে জানিয়েছি।”

জেলা উপ কৃষি অধিকর্তা (প্রশাসন) মোহনলাল কুমার বলেন, “গত কয়েক দিন ধরে ভাল বৃষ্টিপাত হচ্ছে। বৃষ্টির পাট সহ সব ফসলের ক্ষেত্রে সহায়ক হবে। জলাশয়ে জল জমলে পাট জাঁক দেওয়ার সুবিধা হবে। অন্যথায় বিকল্প পদ্ধতিতে পাট জাঁক দেওয়ার জন্য চাষিদের সচেতন করা হচ্ছে। তাতে পাটের গুণগত মান ভাল হবে। চাষিরা দামও বেশি পাবেন।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement