কোর্টের-পথে: অভিযুক্ত শুভেন্দু। নিজস্ব চিত্র
বহরমপুরের ব্যবসায়ী অপহরণ কাণ্ডে ধৃতদের জেল হেফাজত হল। শুক্রবার ধৃতদের বহরমপুরে মুখ্য বিচার বিভাগীয় বিচারকের এজলাশে তোলা হলে ওই চার জনকে ৯ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। ধৃতরা হল শুভেন্দুকুমার দাস, সোমনাথ ঘোষ, সৌগত মিত্র ও শিবব্রত রায়। প্রথম তিন জনের বাড়ি বহরমপুর শহর ও শহর সংলগ্ন এলাকায়। শিবব্রতের বাড়ি নৈহাটিতে। বুধবার সন্ধ্যায় ঝাড়খণ্ডের মহেশপুর থেকে ওই চার জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ ছাড়া অপহৃত যুবক নীলঙ্কর মণ্ডলকে উদ্ধার করা হয়েছে। সোমবার তাঁর গোপন জবানবন্দি নেওয়া হবে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপার অজিত সিংহ যাদব বলছেন, ‘‘ব্যবসায়িক কারণ বা টাকা পয়সা সংক্রান্ত বিবাদের জেরে অপহরণের ঘটনা বলে প্রাথমিক ভাবে মনে হচ্ছে। ইতিমধ্যে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হয়েছে। অপহৃতকে উদ্ধার করা হয়েছে। পুরো ঘটনা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।’’
নীলঙ্কর জানিয়েছে, তাঁরা একই ধরনের ব্যবসা করতেন। মাস তিনেক থেকে শুভেন্দু বহরমপুরে একই রকম ব্যবসা খুলে বসে। তিনি বলেন, ‘‘আমার কাছে গ্রাহক বেশি আসায় শুভেন্দু ব্যবসা থেকে সরাতে পরিকল্পনা করে। আর সে মতোই বুধবার দুপুরে আমাকে অপহরণ করে।’’ যদিও বহরমপুরে আদালতে ঢোকার মুখে শুভেন্দু জানিয়েছে, ‘‘আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করেছে। আমার ওই আত্মীয়র সাহায্যে নীলঙ্কর ব্যবসার নথি, সফটওয়ার চুরি করে নেয়। সে বিষয়ে আগে আমি থানায় জিডি করেছি।’’ তাঁর দাবি, ‘‘মহেশপুরের আমার আত্মীয়র সঙ্গে বসে বিষয়টি মেটানোর জন্য ওকে নিয়ে গিয়েছিলাম। মারধর বা জোর করার অভিযোগ ঠিক নয়। ওই আত্মীয় আলোচনায় আসতে না চাওয়ার নীলঙ্করকে নিয়ে বহরমপুর ফিরছিলাম। তখন পুলিশ আমাদের আটকায়।’’ যদিও নীলঙ্করের মা মায়া মণ্ডল শুক্রবার বলেন, ‘‘শুভেন্দু আমার ছেলের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তুলছে। আমার ছেলেও একই রকম ব্যবসা করছিল। সেই রাগ থেকে খুন করার উদ্দেশ্যে ওকে অপহরণ করেছিল। পুলিশের সাহায্যে ছেলেকে ফিরে পেয়েছি। আমরা ওদের শাস্তি চাই।’’ পুলিশও জানিয়েছে, আলোচনার নাম করে অন্য রাজ্যে তুলে নিয়ে যাওয়া বেআইনি। ওদের কী উদ্দেশ্য ছিল তা দেখা হচ্ছে।
শুভেন্দুর ঝাড়ণ্ডের মহেশপুরে বাড়ি রয়েছে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বহরমপুরের খাগড়া থেকে প্রথমে নীলঙ্করকে গোরাবাজারে নিজেদের অফিসে নিয়ে যান শুভেন্দু। সেখান থেকে গাড়ি করে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে মোড়গ্রাম ধরে, রামপুরহাট-মুরারই হয়ে মহেশপুর পৌঁছয়। বহরমপুর থানা মোবাইল টাওয়ার দেখে খোঁজ করছিল। মহেশপুর থানার পুলিশ তাদের ধরে ফেলে।