সাংসদ জগন্নাথ সরকারের ছবিতে জুতোর মালা পরিয়ে দলীয় দফতরের সামনে কর্মীদের বিক্ষোভ। কৃষ্ণনগরে। নিজস্ব চিত্র।
সাংসদ জগন্নাথ সরকার উপস্থিত না থাকায় এক ভোটে পিছিয়ে গিয়ে কৃষ্ণনগর ১ পঞ্চায়েত সমিতির স্থায়ী সমিতি হাতছাড়া হয় বিজেপির। সেই ক্ষোভে শুক্রবার পঞ্চায়েত সমিতির বেশ কয়েক জন সদস্য সাংসদের ছবিতে জুতোর মালা পরিয়ে ঝাঁটা হাতে জেলা দফতরে এসে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। তাঁদের দাবি, তৃণমূলের কাছ থেকে টাকা খেয়ে বিজেপি সাংসদ ওই দিন স্থায়ী সমিতি গঠনের সভায় অনুপস্থিত থেকেছেন। যদিও এই অভিযোগ উড়িয়ে
দিয়েছেন জগন্নাথ।
কৃষ্ণনগর ১ পঞ্চায়েত সমিতির ৩৬টি আসনের মধ্যে ১৮টি তৃণমূল, ১৬টি বিজেপি ও ২টি আসনে সিপিএম জয়ী হয়েছে। প্রথম বার স্থায়ী সমিতি গঠনের দিন জগন্নাথ সরকার উপস্থিত ছিলেন। সে বার সংখ্যাগরিষ্ঠ ছিল বিজেপি। কিন্তু গন্ডগোল বেঁধে যাওয়ায় প্রক্রিয়া স্থগিত করে দেয় প্রশাসন। গত ৮ নভেম্বর ফের স্থায়ী সমিতি গঠনের দিন কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র উপস্থিত থাকলেও ছিলেন না রানাঘাটের বিজেপি সাংসদ জগন্নাথ। তার ফলে মাত্র এক ভোটে পিছিয়ে যায় বিজেপি। স্থায়ী সমিতি গঠন করে তৃণমূল। পঞ্চায়েত সমিতির বিজেপি সদস্যদের পাশাপাশি সাধারণ নেতাকর্মীরাও হতাশ হয়ে পড়েন।
বিজেপি সূত্রের খবর, এ দিন কৃষ্ণনগরে জেলা দফতরে জগন্নাথের আসার কথা ছিল। তা জানতে পেরে মহিলা সদস্যরা ঝাঁটা হাতে উপস্থিত হন। পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য সুখেন বিশ্বাস, স্মৃতি মণ্ডল দেবনাথেরা দাবি করেন, “জগন্নাথ সরকার তৃণমূলের কাছে বিক্রি হয়ে গিয়েছেন বলেই সে দিন আসেননি। এত কিছুর মধ্যে তৃণমূলের সাংসদ এলেন। অথচ আমাদের সাংসদ সমর্থকদের আবেগ ও ভালবাসা নিয়ে ছেলেখেলা করলেন!” সুখেনের হুঁশিয়ারি, “জগন্নাথ সরকার যদি কৃষ্ণনগরে আসেন, জুতো পেটা করে আমরা তাঁকে এখান থেকে তাড়াব।”
জগন্নাথ অবশ্য সেই দিনই জানিয়েছিলেন যে তিনি লোকসভার এসটি-এসসি ওয়েলফেয়ার স্ট্যান্ডিং কমিটির কর্মসূচিতে দার্জিলিংয়ে রয়েছেন। এ দিন তিনি বলেন, “যারা এ সব করছে, ঈশ্বর তাদের সুবুদ্ধি দিন। ওই বৈঠক কতটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল সেটা রাজ্য ও কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব জানেন। তবে ওই দিন উপস্থিত থাকতে না পারায় আমি দুঃখিত।” তাঁর দাবি, “দলের ক্ষতি হয় এমন কাজ আমি কোনও দিন করিনি, আগামী দিনেও করব না।” এ দিন কৃষ্ণনগরে এলেন না কি বিক্ষোভের ভয়ে? জগন্নাথের দাবি, “সঙ্ঘের সমন্বয় বৈঠক ছিল। সেখানে যেতেই হত।”
গোটা বিষয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছেন বিজেপির নদিয়া উত্তর সাংগঠনিক জেলার নেতারা। উত্তর জেলা সভাপতি অর্জুন বিশ্বাসের বক্তব্য, “আমি দলেরই কর্মসূচিতে বাইরে ছিলাম। ফলে বিষয়টা আমার জানা নেই। না জেনে কোনও মন্তব্য করব না।”