প্রতীকী ছবি।
কোভিডের ছায়া ক্রমশ প্রসারিত হলেও রাজ্যের অধিকাংশ জেলায় চিকিৎসার জন্য সবেধন ভরসা ছিল একটিই, সরকারি কোভিড-হাসপাতাল। মুর্শিদাবাদও তার ব্যতিক্রম নয়। অথচ আর পাঁচটা জেলার মতো এই জেলাতেও সদর এবং মহকুমা শহরগুলিতে ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে উঠেছে মেজ-সেজ নার্সিংহোম। কোথাও বা মাথা তুলেছে চাকচিক্যে ভরা রাশভারি বেসরকারি পুরোদস্তুর হাসপাতাল। কিন্তু করোনার প্রকোপ বাড়তেই হাত গুটিয়ে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল সেই সব হাসপাতালের দুয়ার। ফলে চিকিৎসার জন্য গ্রামীণ মানুষ ছুটেছিলেন কোভিড হাসপাতালে রূপান্তরিত বহরমপুর মেডিক্যাল কলেজের মাতৃসদন হাসপাতালে। যেখানে শয্যা সংখ্যা সীমিত। আইসিসিইউ বেড সাকুল্যে ১০টি। অতিমারির এই ভয়াবহ আবহে বেসরকারি হাসপাতালের এই হাত গুটিয়ে নেওয়া ভূমিকা নিয়ে প্রশ্নটা উঠছিল বেশ কিছু দিন ধরেই। যে গুটিকয়েক বেসরকারি হাসপাতাল খোলা ছিল সেখানে উপসর্গ নিয়ে গেলে তাঁদের কাজ ছিল একটাই— রোগীকে কোভিড হাসপাতালের ঠিকানা দেখিয়ে দেওয়া। এমনই অভিযোগ জেলা স্বাস্থ্য দফতরের। এই অবস্থায় বেসরকারি হাসপাতালের কাছে রোগী-ভর্তি ও চিকিৎসার অনুরোধ জানিয়ে বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে রবিবার বৈঠক করলেন স্বাস্থ্যদফতরের কর্তারা।
স্বাস্থ্যদফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, উন্নত পরিকাঠামো আছে এমন পাঁচটি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, করোনা উপসর্গ নিয়ে কোনও রোগী গেলে তাকে রেফার করে দেওয়া আর যাবে না। এ ব্যপারে বেসরকারি হাসপাতালের মালিক পক্ষের প্রাথমিক সহযোগীতার আশ্বাস পাওয়া গিয়েছে বলে জানা গিয়েছে। মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রশান্ত বিশ্বাস বলেন, “আলোচনা হয়েছে, রেজলিউশন পাস না হওয়া পর্যন্ত এ ব্যাপারে স্পষ্ট করে কিছু জানাতে পারব না। তবে, বেসরকারি হাসপাতালে এই চিকিৎসা শুরু হলে সরকারি হাসপাতালের উপর চাপ অনেকটাই কমবে।” সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকেই এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে বলে সূত্রের খবর।
মার্চ মাসের ২০ তারিখে করোনা পরিষেবার প্রস্তুতি হিসাবে জেলার বেসরকারি হাসপাতালের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন জেলা স্বাস্থ্য দফতর ও সাধারণ প্রশাসনের কর্তারা। সেই বৈঠকে ওই সমস্ত হাসপাতালগুলোর ভূমিকা কি হবে তা জানিয়ে
দেওয়া হয়েছিল।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, কমপক্ষে চার থেকে পাঁচটি শয্যা আইসোলেশন ওয়ার্ড হিসেবে রাখৈার কথা সে সময়ে বলা হয়েছিল। বৈঠকের পরেও সরকারি নিয়ম রক্ষার্থে আলাদা শয্যার বন্দবস্ত করলেও আলাদা কোন আইসোলেশন ওয়ার্ড প্রস্তুতই করেনি হাসপাতালগুলি বলে স্বাস্থ্য দফতরের অভিযোগ।