আহত কংগ্রেস কর্মীর অভিযোগ, বিনা প্ররোচনার রাস্তায় ফেলে মারধর করেন তৃণমূল নেতা। —নিজস্ব চিত্র।
উত্তেজনা থামছেই না মুর্শিদাবাদের রানিনগরে। শাসকদলের বিরুদ্ধে আবাস দুর্নীতির অভিযোগ এনে ফেসবুক পোস্ট করেছিলেন কংগ্রেস কর্মী। অভিযোগ, এই কারণেই রাস্তায় তাঁর উপর চড়াও হন স্থানীয় তৃণমূল নেতা। বাড়ি ফেরার পথে হাঁসুয়ার কোপে গুরুতর জখম হয়ে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হতে হল ওই কংগ্রেস কর্মীকে। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রবিবার উত্তেজনার পরিস্থিতি মুর্শিদাবাদের রানিনগরে। যদিও তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তৃণমূল নেতা।
গ্রামের বেশ কয়েক জনকে বেআইনি ভাবে সরকারি আবাস পাইয়ে দিয়েছেন তৃণমূলের বিদায়ী গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য। এমনই অভিযোগ করে ফেসবুক পোস্ট করেন রানিনগর-১ ব্লকের রায়পুর এলাকায় কংগ্রেস কর্মী শরদিন্দু মণ্ডল। তাঁর অভিযোগ, রাজ্যের শাসকদলের দুর্নীতি নিয়ে সমাজমাধ্যমে লেখালেখির জন্য তাঁকে আক্রমণ করা হয়। রবিবার সকাল ৮টা নাগাদ স্থানীয় তৃণমূল নেতা চিন্ময় মণ্ডলের বাড়ির সামনের রাস্তা দিয়ে তিনি বাড়ি ফিরছিলেন। সে সময় আচমকা তাঁকে আক্রমণ করা হয় বলে অভিযোগ। তাঁকে ঘিরে ধরেন শাসকদলের কয়েক জন সদস্য। তিনি রুখে দাঁড়াতে তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য শরদিন্দু তাঁকে হাঁসুয়া দিয়ে এলোপাথাড়ি কোপাতে থাকেন বলে অভিযোগ। শুধু তাই নয়, শরদিন্দুর দাবি, মাটিতে লুটিয়ে পড়ার পর তাঁকে পিস্তলের বাট দিয়ে বুকে আঘাত করা হয়।
আহত ওই কংগ্রেস কর্মীকে উদ্ধার করে প্রথমে ইসলামপুর গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলেন স্থানীয়রা। কিন্তু তাঁর শারীরিক পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজে স্থানান্তর করা হয়। এখন সেখানেই চিকিৎসাধীন তিনি। হাসপাতাল থেকে শরদিন্দু বলেন, ‘‘বিধবা, দলিত মহিলার নামে আবাস যোজনার ঘর এলেও তাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে সব টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। তার প্রতিবাদে ফেসবুকে পোস্ট করেছিলাম। তাই আমাকে ঘিরে ধরে হাঁসুয়া দিয়ে কুপিয়েছে। পিস্তলের বাঁট দিয়ে মেরেছে।’’ অন্য দিকে, অভিযুক্ত তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য চিন্ময় মণ্ডল বলেন, ‘‘উনি গালিগালাজ করছিলেন। স্থানীয় মানুষজন তার প্রতিবাদ করেছে। এর বেশি কিছু হয়নি।’’
সামনেই পঞ্চায়েত ভোট। তাকে কেন্দ্র করে গত কয়েক দিন ধরে উত্তপ্ত মুর্শিদাবাদের রানিনগর। বার বার তৃণমূল এবং কংগ্রেসের সংঘর্ষ, বিস্ফোরক উদ্ধার, বোমাবাজির মতো অভিযোগ উঠছে। এ নিয়ে একে অন্যকে দোষারোপ করছে শাসক এবং বিরোধী দল।