প্রতীকী ছবি।
পাড়ার মুদি দোকান থেকে ডিটারজেন্ট পাউডার চুরি করতে গিয়ে ধরা পড়েছেন স্বামী। গ্রেফতারও হয়েছেন। থানায় স্বামীকে বন্ধ ঘরে বসিয়ে যখন জেরা করছে পুলিশ, তখন ঘরের বাইরে দাঁড়িয়ে ডিউটি করছেন সিভিক ভলান্টিয়ার স্ত্রী। মাথা হেঁট। মানসিক ভাবেও বিপর্যস্ত। কিন্তু তার পরেও কর্তব্যে অবিচল তিনি। দৃপ্ত কণ্ঠেই বললেন, ‘‘দোষ করলে শাস্তি পাওয়াই উচিত।’’ বুধবার এমন ঘটনার সাক্ষী থাকল মুর্শিদাবাদের বহরমপুর থানা।
পুলিশ সূত্রে খবর, পাড়ার একটি মুদিখানা দোকান থেকে কুড়়ি প্যাকেট ডিটারজেন্ট পাউডার চুরির দায়ের গ্রেফতার করা হয়েছে শাহেন শাহ নামে এক ব্যক্তিকে। চুরি করতে গিয়ে দোকানদারের কাছে হাতেনাতে ধরা পড়ে যান তিনি। সঙ্গে সঙ্গেই পুলিশে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ এসে বহরমপুর থানায় নিয়ে যায় শাহেনকে। ওই বহরমপুর থানাতেই সিভিক ভলান্টিয়ারের চাকরি করেন তাঁর স্ত্রী। শাহেনকে থানায় নিয়ে এসে পুলিশকর্মীরা যখন তাঁকে জেরা করছিলেন, ঠিক সেই সময় বাইরেই দাঁড়িয়ে ছিলেন তিনি। পরে অবশ্য বিড়ম্বনা এড়াতে বাইরে ট্রাফিক ডিউটি নেন স্ত্রী।
দেবকুণ্ডের বাসিন্দা শাহেনের স্ত্রী দীর্ঘ দিন ধরেই বহরমপুর থানায় কর্তব্যরত। চাকরি সূত্রে গোরাবাজারের কাছে ঘর ভাড়া নিয়ে স্বামীর সঙ্গে থাকতেন। স্থানীয়দের একাংশ জানান, স্বামীর বিরুদ্ধে চুরির অভিযোগ ওঠার পর থেকে এখন প্রায়ই পড়শিদের তির্যক মন্তব্য শুনতে হয় ওই সিভিক ভলান্টিয়ার স্ত্রীকে। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশের দাবি, স্ত্রী কাজে বেরিয়ে যাওয়ার পর বাড়িতে একাই থাকতেন শাহেন। অবসরে পাড়ায় ঘুরে বেড়ান তিনি। বিভিন্ন দোকানে গিয়ে গল্পগুজব করেই তাঁর দিন কাটে। আর এই আড্ডার ছলেই চলত বিভিন্ন দোকান থেকে টুকটাক জিনিস চুরি। ইদানীং তা অভ্যাসেই পরিণত করে ফেলেছিলেন শাহেন। যা তাঁর জীবনে ডেকে আনল বিপত্তি। শাহেনকে বহরমপুর আদালতে হাজির করানো হলে পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।
মুর্শিদাবাদ জেলা পুলিশ সুপার শবরী রাজকুমার বলেন, ‘‘চুরির অভিযোগের ভিত্তিতে শাহেন শাহকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। ওঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।’’
স্বামীর এহেন কাণ্ডে লজ্জায় মাথা হেঁট স্ত্রীর। তিনি বলেন, ‘‘আইন আইনের পথে চলবে। যদি দোষী প্রমাণিত হয়, অবশ্যই শাস্তি চাইব।’’