Murder

Murder: মালাকে ‘বোন’ বলত কৃষ্ণ, দাবি

সোমবার রাতে আততায়ী বাড়িতে ঢুকে কুপিয়ে খুন করে গিয়েছে ওদের মা মালা মণ্ডল, দাদু ডমন রাজোয়ার আর দিদিমা সুমিত্রা রাজোয়ারকে।

Advertisement

সাগর হালদার  

শেষ আপডেট: ০৫ মে ২০২২ ০৫:১৬
Share:

হাসপাতাল থেকে ফিরল তিন জনের দেহ। বুধবার। ছবি: সাগর হালদার

তিনটি বাচ্চা কিছু বুঝছে না। শুধু বুঝছে, মা নেই।

Advertisement

মালার দুধের শিশু মুখে কিচ্ছুটি তুলছে না। রোজ মায়ের বুকের দুধ খেয়েই সে ঘুমোত। মাসিরা সিদ্ধভাত দিলেও সে দাঁতে কাটেনি। ভাত মুখে তোলেনি মালার দুই মেয়েও। সাত বছরের বড় মেয়েটি বলে, “সকালে চা খেয়েছি। আমার আর কিছু খেতে ভাল লাগছে না।”

বুধবার সকালেই হরিয়ানা থএকে এসে পৌঁছেছেন তাদের বাবা বিধান মণ্ডল। সেটুকুই যা ভরসার কথা। তবু তিনিও জানেন না, মাতৃহীন তিন সন্তানকে নিয়ে কী ভাবে প্রবাসে গিয়ে সামাল দেবেন। বিধান বলেন, “আমি কিছুই বুঝে উঠতে পারছি না। ভাবছি এখনই আর বাইরে কাজ করতে যাব না। এখানে থেকেই এদের সামলাব। ওরা একটু বড় হলে তখন দেখা যাবে।”

Advertisement

সোমবার রাতে আততায়ী বাড়িতে ঢুকে কুপিয়ে খুন করে গিয়েছে ওদের মা মালা মণ্ডল, দাদু ডমন রাজোয়ার আর দিদিমা সুমিত্রা রাজোয়ারকে। খবর পেয়ে তাঁদের বাকি তিন মেয়ে শ্বশুরবাড়ি থেকে চলে এসেছেন। দু’দিন ধরে উঠোনে পড়ে রয়েছে বৃষ্টি-ভেজা শাড়ি, বেড়ায় ঝুলছে প্যান্ট আর লুঙ্গি। সে সব নামিয়ে ঘরে তুলতে গিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছেন তিন মেয়ে। বাইরে রাস্তার ধারে ত্রিপল টাঙানো। তার নীচেই পরিবার-পরিজন বসে। খাঁ-খাঁ করছে ভিতরের উঠোন। রান্না ঘরের সামনে রাখা বালতি বৃষ্টির জলে প্রায় টইটুম্বুর। তা-ও কেউ সরায়নি। বিকেলে তিনটি মৃতদেহ পৌঁছতেই কান্নার রোল ওঠে।

পাশের বা়ড়িতেই তখন নিঝুম হয়ে বসে আছেন এই খুনের ঘটনায় ধৃত কৃষ্ণ মণ্ডলের স্ত্রী কণিকা আর তাঁর দুই ছেলে। সকাল থেকে ব্যস্ত হয়ে গরুর খড় কাটতে দেখা গিয়েছে শুধু কৃষ্ণের মা বোধন মণ্ডলকে। উঠোনে বসে কৃষ্ণের ছেলে গোপীনাথ দাবি করেন, “আগে ওদের সঙ্গে একটা ঝামেলা হয়েছিল ঠিকই, কিন্তু বাবা এই কাজ করতে পারে না।” মঙ্গলবার থানায় জিজ্ঞাসাবাদের পর রাতে বাড়ি ফেরে কৃষ্ণ। পরে পুলিশ এসে ফের ধরে নিয়ে যায়। ঘরে তল্লাশি চালায়।

কৃষ্ণের ভ্রাতৃবধূ ব্রজবালা মণ্ডলের কথায়, “সোমবার কণিকা আমার ঘরে টিভি দেখছিল। রাত ৯টা নাগাদ কৃষ্ণ এসে ডাকলে ও গিয়ে খেতে দেয়।” কণিকা বলেন, “ভয়ে হয়তো পুলিশকে ও উল্টোপাল্টা কিছু বলেছে। কিন্তু রাতে আমার পাশেই ছিল।”

কয়েক মাসে আগে রাস্তায় পাথর ফেলা নিয়ে মালাদের সঙ্গে কৃষ্ণদের ঝগড়া হয়েছিল। কণিকা বলেন, “বোন বলেই মালার সঙ্গে কথা বলত আমার স্বামী। তবে ইদানীং কথা কম হত।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement