প্রতীকী ছবি।
কৌশিকী অমাবস্যার মতোই করোনা আবহে রুদ্ধ দ্বারেই হতে পারে কিরীটেশ্বরীর পুজো। নিয়ম মেনেই হবে বলি। শুক্রবার এমনটাই জানিয়েছে কিরীটেশ্বরী দক্ষিণা কালী মন্দিরের সেবাইত দিলীপ ভট্টাচার্য।
কিরীটেশ্বরী মন্দিরের কালিপুজো বেশ প্রাচীন। ৫১টি সতী পিঠের মধ্যে নবগ্রামের কিরীটেশ্বরী মন্দির অন্যতম। কথিত আছে দক্ষযজ্ঞের সময় শিব যখন তাণ্ডব নৃত্য করছিলেন তখন নারায়ণ চক্র দিয়ে সতীর দেহ টুকরো টুকরো করেন। সতীর দেহের অংশ যেখানে যেখানে পড়ে সেখানে সেখানে সতী পিঠ গড়ে ওঠে। কিরীটেশ্বরীতে মুকুট পড়েছিল।
ইতিহাসবিদদের মতে, কিরীটেশ্বরী বেশ প্রাচীন। আগে কিরীটেশ্বরীতে বৌদ্ধ তান্ত্রিকদের বাস ছিল, পরে কোনও কারণে তাঁরা কিরীটেশ্বরী ত্যাগ করে চলে যান। এমনকি কিরীটেশ্বরীর যে মূর্তি রয়েছে সেটা বৌদ্ধ আদলেই তৈরি বলে মন করা হয়। এক সময় মন্দিরের সংস্কার করেন রানি ভবানী। মন্দির ওই সময় রানি ভবানীর জমিদারির ভিতর পড়ত। এ ছাড়াও ইতিহাসবিদদের দাবি, ওরাল হিস্ট্রি থেকে জানা যায় নবাব মিরজাফরের যখন কুষ্ঠ রোগ হয় তখন নবাব কোনও কিছুতেই কুষ্ঠ সারাতে না পেরে কিরীটেশ্বরীতে মানত করেন। কুষ্ঠ রোগ সেরে যায়। এটা দেবীর মাহাত্ম্য মনে করে ওই সময় কিরীটেশ্বরী মন্দিরের পাশে কালি সাগর নামে বড় পুকুরটি মিরজাফরই খনন করান।
কিরীটেশ্বরীর পুজোয় মাছের ভোগ দেওয়ার রীতি রয়েছে। হয় বলিও। জেলার এক ইতিহাসবিদ মৌসুমী চক্রবর্তী বলেন, ‘‘প্রাচীন গ্রন্থে কিরীটেশ্বরীর উল্লেখ পাওয়া যায়। কিরীটেশ্বরী শক্তি ও তন্ত্রপিঠ। এখান থেকে একজন সিদ্ধিলাভও করেন।’’
এদিন কিরীটেশ্বরী মন্দিরের সেবাইত দিলীপ ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘এই বছর কালীপুজো হবে সব সরকারি নিয়ম মেনেই। করোনা পরিস্থিতিতে আমরা বলি বন্ধ রেখেছিলাম। কালীপুজোয় বলি হবে কিন্তু যাতে জমায়েত না হয় তার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’’