শক্তিনগর জেলা হাসপাতাল।—ফাইল চিত্র।
বিদ্রোহী চিকিৎসকদের সম্পর্কে কড়া মনোভাবের পথে হাঁটল স্বাস্থ্য দফতর।
রোগীর চাপের কারণ দর্শিয়ে অতিরিক্ত ডাক্তার চেয়েছিলেন শক্তিনগর জেলা হাসপাতালের অস্থিরোগ বিভাগের দুই চিকিৎসক অঞ্জন সেনগুপ্ত ও শঙ্কর রায়। শুধু বাড়তি ডাক্তার দাবি করাই নয়, স্বাস্থ্য দফতরের উপর চাপ দিতে ইস্তফাপত্র জমা করেছিলেন দু’জনে। জানিয়েছিলেন, বাড়তি চিকিৎসক এলে ইস্তফা ফেরৎ নেবেন, নচেৎ নয়।
স্বাস্থ্য দফতর দিগন্ত মন্ডল ও বিশ্বজিৎ সরকার নামে অন্য দুই অস্থি বিশেষজ্ঞকে অবশেষে শক্তিনগরে পোস্টিং দিয়েছেন, মঙ্গলবার তাঁরা দায়িত্ব বুঝে নেন। আপাতত তাঁদের অস্থায়ী ভাবে নিয়োগ করা হয়েছে। কিন্তু তার পাশাপাশি ইস্তফাপত্র জমা দেওয়া আগের দুই চিকিৎসককে কাজে ফেরাতে কোনও আগ্রহ দেখায়নি। তাঁদের সঙ্গে কোনও আলোচনাতেও বসেনি। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, শক্তিনগরে স্বাস্থ্যকর্তারা আগের মতো দু’জন চিকিৎসককেই রাখলেন এবং বিদ্রোহীদের দাবির কাছে মাথা নোয়ালেন না।
স্বাস্থ্য ভবনের এক কর্তার কথায়, “ওঁরা দফতরকে ব্ল্যাকমেইল করতে চেয়েছিল। আমরা যদি নরম মনোভাবে নিতাম তা হলে অন্য অনেক চিকিৎসক নিজেদের কাজ হালকা করতে একই পথে হাঁটতেন। কথায়-কথায় কিছু চিকিৎসক ইস্তফা দিয়ে বসে থাকতেন বা ইস্তফার হুমকি দিতেন।” তাঁর কথায়, “যে চিকিৎসকেরা রোগীদের আচমকা অথৈ জলে ফেলে দিয়ে নিজেদের দাবিতে ইস্তফা দিতে পারেন তাঁদের প্রতি কোনও নরম মনোভাব দোখানো যাবে না।” অঞ্জনবাবু ও শঙ্করবাবু মঙ্গলবারই কাজে যোগ দিতে চেয়ে জেলা স্বাস্থ্য দফতরে লিখিত আবেদন করেছিলেন। কিন্তু কর্তৃপক্ষ তা গ্রহণ করেননি।
তাঁরা এখন আফশোস করছেন কিনা জানতে চাওয়া হলে অঞ্জনবাবু বলেন, “আফশোসের ব্যাপার নেই। আমাদের দাবি ছিল চিকিৎসক বাড়ানো। তাতে মানুষের উপকার হত। বলেছিলেন, দাবি মিটলে আবার কাজে যোগ দেব বলেছিলাম। সেই মতো বাড়তি দুই চিকিৎসক এসেছেন জানতে পেরে আবার কাজে যোগ দেওয়ার আবেদন করি। কিন্তু তা গ্রহণ করা হয়নি। এখন দেখা যাক, আমাদের ইস্তফার ব্যাপারে স্বাস্থ্য ভবন থেকে কী সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।” জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকরিক তাপস রায়ের কথায়, “ওই দুই চিকিৎসকের সম্পর্কে যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার স্বাস্থ্য ভবন নেবে। আমরা ফাইল পাঠিয়ে দিয়েছি।”
সোমবার শান্তিপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে অস্থি বিশেষজ্ঞ সুমন্ত মন্ডলকে নিয়ে এসে শক্তিনগরে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া হয়েছিল। এ দিন তাঁকে ফের শান্তিপুরে ফেরানো হয়েছে, কারণ তিনি আপাতত শান্তিপুর হাসপাতালে একমাত্র হাড়ের ডাক্তার।