প্রতীকী ছবি।
ডেঙ্গি-ম্যালেরিয়া রুখতে বাড়ি-বাড়ি গিয়ে জমা জল বা মশার লার্ভা নিয়ে যাঁরা সমীক্ষা তথা নজরদারি চালান তাঁরা সকলেই কি নিজের দায়িত্ব ঠিকঠাক পালন করেন? বিগত বছরগুলিতে এমন প্রশ্ন উঠেছে বারেবারে। এ বারে এই বিষয়টি নিয়ে আরও বেশি উদ্বিগ্ন স্বাস্থ্য দফতর। কারণ, ডেঙ্গি মোকাবিলায় সামান্য গাফিলতি বা ত্রুটি করোনা আবহে অনেক বড় বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে।
জেলার এক স্বাস্থ্যকর্তার কথায়, “ডেঙ্গির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল বাড়ি-বাড়ি ঘুরে নজরদারি ও সমীক্ষার কাজ। কোনও পরিবারের কারও জ্বর আছে কিনা, বাড়ির ভিতরে ফুলের টব, ফ্রিজের ট্রে, পুরনো চৌবাচ্চা, স্নানঘর বা রান্নাঘরে কোথাও জল জমি আছে কিনা, জমা জলে মশার লার্ভা জন্মেছে কিনা— সে সব জানা খুবই জরুরি। সেখানে কোনও ফাঁক থেকে গেলেই জয় হবে ডেঙ্গির। করোনার মধ্যে সেটা আমরা কোনওভাবেই চাইব না।”
তাই এই কাজ সুষ্ঠু ভাবে পরিচালনার জন্য কড়া অবস্থান নিতে শুরু করেছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর। পঞ্চায়েত এলাকার ভিলেজ রিসোর্স পার্সন, পুরসভা এলাকার স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলা, আইসিডিএস বা এমএএসএস কর্মীদের উপরে এই সমীক্ষার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তবে কড়া নজরদারির মধ্যে তাঁদের সেই কাজ করতে হবে। জেলার এক কর্তার কথায়, “প্রতিটি বাড়িতে একটি করে হেলথ কার্ড ও প্রতি কর্মীকে একটা করে ডেঙ্গি ডায়েরি দেওয়া হবে। সেখানে সব তথ্য নথিভুক্ত হবে।” জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, কর্মীরা কোনও বাড়িতে সমীক্ষা করতে এসে হেলথ কার্ডে সই করে দেবেন আর সেই পরিবারের কোনও সদস্য সমীক্ষা কর্মীর কাছে থাকা ডেঙ্গি ডায়েরিতে সই করবেন। যাতে কোনও ভাবেই কাজে কোথাও কোনও ‘ফাঁকি’ না থাকে, তার জন্য এই ব্যবস্থা।
অনেক ক্ষেত্রে সুপারভাইজারদের একাংশ এই ফাঁকিবাজির সঙ্গে যুক্ত থাকেন বলে অভিযোগ। তাই সুপারভাইজারদের উপরেও একই ভাবে নজরদারি চালানো হবে। জেলা স্বাস্থ্য্য দফতর সূত্রের খবর, প্রত্যেক সুপারভাইজারের অধীনে চার-পাঁচটি টিম থাকে। সারাদিন এলাকা সমীক্ষা করে আসার পর বিকেলে টিমগুলির সঙ্গে বৈঠক করবেন সুপারভাইজার। ডায়েরি পরীক্ষা করবেন। তারপর যে কোনও দু’টি টিমের সমীক্ষা করে আসা বাড়িগুলির মধ্যে যে কোনও তিনটি বাড়িতে ‘রি-ভিজিট’ করবেন। সুপারভাইজারদেরও ‘ফিল্ড ওয়ার্ক’ করতে হবে।
জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা জানিয়েছেন, করোনা মোকাবিলা করতে গিয়ে শহরাঞ্চলে ডেঙ্গি-ম্যালেরিয়ার প্রতিরোধের কাজ শুরু করতে দেরি হয়ে গিয়েছে। এ ক্ষেত্রের জুলাই মাসের প্রথম থেকে বাড়ি-বাড়ি সমীক্ষ শুরু হয়ে যাবে বলে কর্তারা জানিয়েছেন। এই কাজে নিযুক্ত কর্মীদের কাউন্সেলিং করবেন ব্লকের জয়েন্ট বিডিও ও ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিকেরা। যাঁদের কাজে আগ্রহ নেই বলে মনে হবে তাঁদের প্রথমেই বাদ দিয়ে দেওয়া হবে।