নির্যাতিতার বাড়িতে বিজেপি-র প্রতিনিধি দল
নদিয়ার হাঁসখালিতে নির্যাতিতার বাড়িতে গিয়ে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলল বিজেপি-র সত্যানুসন্ধান কমিটি। এক নাবালিকাকে গণধর্ষণের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত ব্রজগোপাল গয়ালির বাবা তৃণমূল নেতা সমরেন্দু গয়ালির বাড়িতেও বিজেপি-র প্রতিনিধি দলের যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেখানে যায়নি তারা। কমিটির সদস্যদের সঙ্গে গিয়েছিলেন রানাঘাটের বিজেপি সাংসদ জগন্নাথ সরকার। তিনি জানান, হাঁসখালির ঘটনা নিয়ে রিপোর্ট তৈরি করে তা আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডার কাছে পাঠানো হবে।
শুক্রবার সকাল থেকেই নির্যাতিতার বাড়ির সামনে ভিড় করেন গ্রামবাসীরা। বিজেপি-র তথ্য অনুসন্ধান কমিটি আসবে জেনে পৌঁছে গিয়েছিলেন গেরুয়া শিবিরের স্থানীয় কর্মী-সমর্থকেরাও। এর পর দুপুর ১টা নাগাদ নির্যাতিতার বাড়িতে আসেন কমিটির সদস্যেরা। ওই দলে ছিলেন বাংলার বিধায়ক শ্রীরূপা চৌধুরী, তামিলনাড়ুর বিধায়ক বনথি শ্রীনিবাসন, মহারাষ্ট্র বিজেপি-র নেত্রী খুশবু সুন্দর, উত্তরপ্রদেশের সাংসদ রেখা বর্মা। গণধর্ষণের ঘটনার তদন্ত এখন কোথায় দাঁড়িয়ে, কাদের গ্রেফতার করা হয়েছে, আর কার কার নাম উঠে আসছে— নির্যাতিতার পরিবারকে এমন বহু প্রশ্নই করেন তাঁরা। রাজ্য সরকার কোনও ভাবে তদন্ত প্রভাবিত করার চেষ্টা করছে কি না, তা-ও জানতে চেয়েছে বিজেপি-র প্রতিনিধি দল।
পরিবারের সঙ্গে কথা বলার পরে তাঁদের সঙ্গে নিয়ে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হতে চেয়েছিলেন শ্রীরূপা, খুশবু, রেখারা। কিন্তু তাতে রাজি হয়নি নাবালিকার পরিবার। পরিবারের সঙ্গে কথা বলার পর শ্রীরূপা বলেন, ‘‘ঘটনার রাতে যখন নির্যাতিতার মা মেয়েকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাচ্ছিলেন, তখন তাঁদের বাড়ি ঘিরে রেখেছিল কয়েক জন। মা জানিয়েছেন, ওঁরা বাড়ি থেকেই বার হতে পারেননি। ফলে কোনও ডাক্তার দেখানো হয়নি।’’
বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কটাক্ষ করে খুশবু বলেন, ‘‘আমি মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীকে অনুরোধ করব, যদি একটু সময় বার করে নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে এক বার কথা বলে নিতেন, তা হলে অনেক কিছুই জানতে পারতেন। আমরা তো অন্য রাজ্যের। আমরা সবাই নির্যাতিতার পরিবারের পাশে রয়েছি।’’
নির্যাতিতার বাড়ি থেকে বেরিয়ে জগন্নাথ বলেন, ‘‘রাজ্যে এত ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে, তা নিয়ে কারও কোনও চিন্তা নেই। বিজেপি-র তরফে একটি দল গঠন করে দেওয়া হয়েছে। দলের প্রতিনিধিরাই সব খতিয়ে দেখবেন। এক সপ্তাহের মধ্যে জেপি নড্ডার কাছে রিপোর্ট জমা পড়বে।’’
নাবালিকার বাড়ি থেকে বেরিয়ে দুপুর আড়াইটে নাগাদ শ্মশানেও গিয়েছে বিজেপি-র প্রতিনিধি দল। অভিযোগ, ওই শ্মশানে মৃত্যুর শংসাপত্র ছাড়াই নাবালিকার দেহ দাহ করা হয়েছিল। শ্মশান থেকে বেরিয়ে প্রতিনিধি দলের সদস্যেরা যান হাঁসখালির দলীয় কার্যালয়ে। সেখানে দলের কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের থেকেও বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করেন। পরে সাড়ে ৩টে নাগাদ কলকাতার উদ্দেশে রওনা দেয় বিজেপি-র সত্যানুসন্ধান কমিটি।