সেই সিনেমার পোস্টার। —নিজস্ব চিত্র।
প্রায় সাড়ে চার বছর ধরে দুই সন্তানকে নিয়ে ইলা ও সুভাষ রায়চৌধুরীর পরিবারে রয়েছেন সখিনা খাতুন। চলচ্চিত্র বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, হরিহরপাড়ার চোঁয়া এলাকার ওই মহিলার জীবন সংগ্রামের গল্প হার মানাতে পারে যে কোনও সিনেমার চিত্রনাট্যকে। তাই সখিনার জীবন সংগ্রামে উদ্বুদ্ধ হয়ে পূর্ণ দৈর্ঘ্যের সিনেমা তৈরি করলেন পরিচালক আতিউল ইসলাম। শুক্রবার রাজ্যের একাধিক পেক্ষাগৃহে আনুষ্ঠানিক ভাবে মুক্তি পেয়েছে ওই সিনেমা। জানা গিয়েছে ওই সিনেমা নাম দেওয়া হয়েছে 'ফতেমা'। প্রথম দিনেই দর্শকদের প্রশংসা কুড়িয়েছে ফতেমা। প্রেক্ষাগৃহে সিনেমা দেখার পরে এলাকার বাসিন্দা রাকিবুল ইসলাম বলছেন, ‘‘সিনেমাটি মধ্যদিয়ে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বার্তা দেওয়া হয়েছে।"
জানা গিয়েছে ওই পরিচালকের বাড়ি আদতে হরিহরপাড়ায়। এক সময় সাংবাদিকতার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন আতিউল। সংবাদমাধ্যমে তাঁর কাজের অভিজ্ঞতা ইতিমধ্যে ফুটে উঠেছে তাঁর পরিচালিত একাধিক সিনেমায়। আতিউল বলেন, ‘‘সংবাদপত্রের খবরে প্রথম সখিনার কথা জানতে পারি। তাঁর জীবনের গল্পের সঙ্গে কল্পনা মিশিয়ে সিনেমাটি তৈরি করা হয়েছে। এই সিনেমার মাধ্যমে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিকে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। প্রথম দিনেই দর্শকদের মধ্যে সিনেমাটি ভাল সাড়া ফেলেছে।"
জানা গিয়েছে ওই সিনেমায় অভিনয় করেছেন রাহুল বন্দোপাধ্যায়, লাবনী সরকারের মতো একাধিক পরিচিত মুখ। 'ফতেমা'র চরিত্রে অভিনয় করেছেন মুন। বিভিন্ন সূত্রের খবর, মুর্শিদাবাদের বিভিন্ন জায়গায় ওই সিনেমার অধিকাংশ শ্যুটিং করা হয়েছে।
নানা সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় সাড়ে চার বছর আগে পারিবারিক অশান্তির জেরে দুই সন্তানকে নিয়ে ঘর ছাড়তে বাধ্য হন সখিনা। তাঁর অন্তরঙ্গ বন্ধু কাকলি রায়চৌধুরীর মা-বাবা ইলা ও সুভাষ রায়চৌধুরী তাঁকে সন্তান স্নেহে বাড়িতে আগলে রেখেছেন। দুই সন্তানের পাশাপাশি সখিনা ফের পড়াশোনা শুরু করেছেন। এ বছরই মাধ্যমিক পাশ করেছেন তিনি।
সখিনা বলেন, ‘‘আমার করুণ কাহিনিকে মান্যতা দিয়ে সিনেমা তৈরি হয়েছে জেনে ভাল লাগছে।’’ ইলার কথায়, ‘‘জাতপাতের বিচার না করে এই সিনেমার মাধ্যমে মানবধর্ম বেশি করে প্রচার হোক, সেটাই চাইব।’’ সিনেমাটি দেখার ইচ্ছেপ্রকাশও করেছেন সখিনা ও রায়চৌধুরী পরিবারের সদস্যরা।