তৃণমূল বিধায়ক (বাঁ দিক থেকে) হুমায়ুন কবীর, রবিউল আলম চৌধুরী, শাহিনা মমতাজ এবং আব্দুর রজ্জাক। —ফাইল চিত্র।
দলের সব নির্দল প্রার্থী কী মনোনয়ন প্রত্যাহার করলেন- মঙ্গলবার মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিনে সে কথাই ঘোরাফেরা করছে শাসকদল তৃণমূলের অন্দরে। কারণ জেলার ত্রিস্তর গ্রাম পঞ্চায়েত মোট আসনের থেকে অনেক বেশি মনোনয়ন জমা দিয়েছেন শাসকদলের লোকজন। এছাড়া দলের অনেকেই টিকিট না পেয়ে সরাসরি নির্দল প্রার্থী হিসেবে ভোটের ময়দানে নেমে পড়েছেন। যাঁরা দলের প্রতীক পাবেন না তাঁরা মনোনয়ন প্রত্যাহার না করলে নির্দল হয়ে যাবেন, তেমনই দলের বিরুদ্ধে গিয়ে সরাসরি নির্দল হয়েছেন অনেকে। আর দলের এই সব নির্দল প্রার্থীরা থেকে গেলে আখেরে তৃণমূলেরক্ষতি হবে।
মনোনয়ন প্রত্যাহারের জন্যে সোমবার দিনভর চেষ্টা চালিয়েছেন জেলার তৃণমূলের নেতারা। সোমবার দুপুর থেকে দলের বিদ্রোহী চার বিধায়কের সঙ্গে ব্লক সভাপতিদের আসন ভাগাভাগি নিয়ে দিনভর বৈঠক করেছেন রাজ্যের মন্ত্রী মলয় ঘটক থেকে শুরু করে জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। সোমবার রাতেই মলয় ঘটক বলেন, ‘‘এখানে কোনও সমস্যা নেই।’’
তবে মঙ্গলবার বিকেল তিনটে পর্যন্ত মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ সময়সীমা ছিল। এই সময়ের মধ্যে দলের সব নির্দল কি মনোনয়ন প্রত্যাহার করল সেই প্রশ্ন উঁকি দিয়েছে দলের অন্দরে। তবে বিদ্রোহী বিধায়কদের মধ্যে ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ূন কবীর মঙ্গলবার সাংবাদিক বৈঠক করে বলে দিয়েছেন, তাঁর অনুগামীদের টিকিট দেওয়া হয়নি। তাই উত্তরবঙ্গের তৃণমূল নেতা আব্দুল করিম চৌধুরীর মতো নির্দলদের হয়ে ভোট করবেন। সোমবার বৈঠক মেনে জলঙ্গি বা নওদাতেও দলের প্রতীক ভাগাভাগি করা হয়নি। যার জেরে ওই বিধানসভাগুলিতেও নির্দল থেকে গিয়েছে। নওদার বিধায়ক মঙ্গলবার বিকেলে সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, ‘‘আমার তো প্রার্থী নেই। কাদের নিয়ে লড়ব। তাই পঞ্চায়েত নির্বাচনে বসে যাব।’’ জলঙ্গির বিধায়ক আব্দুর রাজ্জাক দলের পক্ষে কাজ করবেন বলে জানিয়েছেন।
তবে বহরমপুর মুর্শিদাবাদ জেলা তৃণমূলের সভাপতি শাওনি সিংহ রায় বলেন, ‘‘যে সব নির্দল প্রার্থীর দলের প্রতি আনুগত্য রয়েছে, এ দিন তাঁরা মনোনয়ন প্রত্যাহারের জন্য আবেদন করেছেন। আমার ধারণা, দলের ৯০ শতাংশ নির্দল প্রার্থী মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছেন। যাঁরা থেকে গেলেন তারা শুধু নয়, কোনও কিছুতেই পঞ্চায়েত ভোটে দলের কোনও সমস্যা হবে না।’’
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদের মোট ৭৮টি আসন রয়েছে। আর তৃণমূল তাতে ৯৬টি মনোনয়ন জমা দিয়েছে। জেলার ২৬টি পঞ্চায়েত সমিতিতে ৭৪৮টি আসনে তৃণমূল মনোনয়ন জমা দিয়েছে ৯৬২টি এবং জেলার ২৫০টি গ্রাম পঞ্চায়েতের ৫৫৯৩টি আসনে তৃণমূলের ৬৭৭৮টি মনোনয়ন জমা পড়েছে। সূত্রের খবর, জেলা পরিষদে ১৮টি, পঞ্চায়েত সমিতিতে ২১৪টি এবং গ্রাম পঞ্চায়েতে ১১৮৫টি মনোনয়ন আসনের তুলনায় বেশি জমা পড়েছে।
এগুলির মধ্যে মনোনয়ন প্রত্যাহার কত হয়েছে, সেটাই দেখার বিষয়। যে গুলিতে প্রত্যাহার হবে না সেগুলি নির্দল থেকে যাবে।