লম্বা লাইন এড়াতে অনেকে দালালদের খপ্পরে পড়ছেন। ফাইল চিত্র।
ডিজিটাল রেশন কার্ড দিতে বিশেষ শিবির করে আবেদনপত্র নিতে শুরু করেছে রাজ্যের খাদ্য দফতর। গ্রামীণ এলাকায় ব্লক অফিসে ও পুর এলাকায় পুরসভাগুলিতে সেই আবেদন জমা দেওয়ার লম্বা লাইনও পড়ছে। আর সেই লম্বা লাইন এড়াতে অনেকে দালালদের খপ্পরে পড়ছেন। অনেকে অর্থের বিনিময়ে, লাইনে না দাঁড়িয়ে, দালাল মারফত ডিজিটাল রেশন কার্ডের আবেদন জমা দিচ্ছেন। এই পরিস্থিতিতে দালালচক্র রুখতে কড়া নির্দেশ দিল রাজ্যের খাদ্য দফতর।
গত মঙ্গলবার এ বিষয়ে রাজ্যের খাদ্য দফতরের বিশেষ সচিব জেলায় নির্দেশিকা পাঠিয়েছেন। দালাল চক্রের নির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে দৃষ্টান্তযোগ্য শাস্তি দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মুর্শিদাবাদের জেলা খাদ্য নিয়ামক মহম্মদ মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘‘দফতরের নির্দেশিকা প্রতিটি ব্লকে পাঠানো হয়েছে। একসঙ্গে অনেকগুলি আবেদন যেন গ্রহণ না করা হয় সেটাও বলা হয়েছে। আমরাও বিষয়টির উপরে নজর রেখেছি।’’
বিশেষ সচিবের নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, পশ্চিম মেদিনীপুরের খড়্গপুর পুরসভা এবং কিছু ব্লক, পুরসভা ও কর্পোরেশনের অফিসে এক সঙ্গে অনেকগুলি আবেদনপত্র গ্রহণ করা হয়েছে। নির্দিষ্ট আবেদনের ভিত্তিতে ডিজিটাল রেশন কার্ড দেওয়া হচ্ছে। তাই কার্ড হোল্ডার বা পরিবারের প্রধান ডিজিটাল রেশন কার্ডের আবেদন জমা দিতে পারবেন। পরিবারের বাইরের কেউ আবেদনপত্র জমা দিতে পারবেন না। একসঙ্গে অনেকগুলি আবেদনপত্র গ্রহণের কোনও নির্দেশিকা নেই।
কেন একসঙ্গে অনেকগুলি আবেদন গ্রহণ করা যাবে না তা নির্দেশিকায় বলা না থাকলেও দফতরের কর্তারা জানাচ্ছেন, এক সঙ্গে অনেকগুলি আবেদন গ্রহণ করলে দালালচক্র সক্রিয় হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আবেদনকারীদের কাছ থেকে অর্থ নিয়ে একসঙ্গে ওই সব আবেদন জমা দিতে পারে। সেই দালাল চক্র রুখতে নিজের আবেদন নিজেকে বা পরিবারে প্রধানকে জমা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
নির্দেশিকায় বলা হয়েছে কিছু জেলায় ৩, ৪, ৫, ও ৮ নম্বর ফর্মে আবেদন বেশি জমা পড়েছে। সেগুলির মধ্যে ৪ নম্বর ফর্মের আবেদনপত্রের জন্য এলাকার পরিদর্শন করে কাগজপত্র দেখে তার রিপোর্ট-সহ জমা দিতে বলা হয়েছে। খাদ্য দফতরের এক আধিকারিক বলছেন, ‘‘পরিবারের কিছু লোক কার্ড পেয়েছেন, কিছু লোক কার্ড পাননি— এমন হলে চার নম্বর ফর্ম পূরণ করে জমা দিতে হয়।’’ তাঁর দাবি, কিছু লোকজন দুর্নীতি করে কার্ডের জন্য এই ফর্মের মাধ্যমে আবেদন করতে পারে। অন্য পরিবারের লোকজনের নাম ঢুকিয়ে রেশন কার্ড করে নিতে পারে। সে জন্য এই আবেদন ভাল করে খতিয়ে দেখে রিপোর্টে দিতে বলা হয়েছে।
বিশেষ সচিবের নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, কিছু দালাল সরল সাদাসিধে মানুষকে বুঝিয়ে তাদের উদ্দেশ্য সাধনের চেষ্টা করছে বলে দফতরের নজরে এসেছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নিতে হবে।