গুমোট কাটল সীমান্তে

মিলল পদ্মায় নামার অনুমতি

ধীবরেরা জানিয়েছেন, এ দিন দুপুরে দীর্ঘক্ষণ বিএসএফের সঙ্গে তাঁদের আলোচনা হয়েছে। ঠিক হয়েছে, শুক্রবার ভোরে তাঁদের সঙ্গে নিয়েই বিএসএফ কর্তা ও জওয়ানেরা ফের পদ্মায় নামবেন।

Advertisement

সুজাউদ্দিন বিশ্বাস

 জলঙ্গি শেষ আপডেট: ২৫ অক্টোবর ২০১৯ ০২:২২
Share:

আজ, শুক্রবার থেকে ফের পদ্মায় নামার অনুমতি মিলেছে ধীবরদের। ছবি: সাফিউল্লা ইসলাম

ঘাটে বাঁধা রয়েছে নৌকা। সাইকেলে জাল, মাছের ঝুড়ি নিয়ে পদ্মাপাড়ে হাজির ধীবরেরা। ইলশেগুঁড়ি বৃষ্টি মাথায় শান্ত পদ্মা। ইলিশ ধরার এমন আদর্শ মরসুমে বৃহস্পতিবারেও পদ্মায় নামতে পারেননি শতাধিক ধীবর। তবে, এ দিন দুপুরে শেষ পর্যন্ত পদ্মায় ইলিশ ধরার বিষয়ে কাকমারি বিএসএফ ক্যাম্পে বসে একটা সমাধান সূত্র বেরিয়েছে। বিএসএফ ও মৎসজীবীদের সঙ্গে ম্যারাথন বৈঠকে ঠিক হয়েছে, আজ শুক্রবার সকাল থেকেই পদ্মায় নামতে পারবেন ধীবরেরা। এই আলোচনার পরে কিছুটা হলেও মুখে হাসি ফুটেছে জলঙ্গির পদ্মাপাড়ের ধীবরদের।

Advertisement

ধীবরেরা জানিয়েছেন, এ দিন দুপুরে দীর্ঘক্ষণ বিএসএফের সঙ্গে তাঁদের আলোচনা হয়েছে। ঠিক হয়েছে, শুক্রবার ভোরে তাঁদের সঙ্গে নিয়েই বিএসএফ কর্তা ও জওয়ানেরা ফের পদ্মায় নামবেন। তাঁরা ধীবরদের দেখিয়ে দেবেন, ভারতীয় সীমানা। এমনকি মাঝ-পদ্মায় সীমানা বোঝার জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানানো হয়েছে বিএসএফের তরফে।

শিরচরের মৎস্যজীবী অমৃত মণ্ডল বলছেন, ‘‘শুক্রবার সকালে আমাদের সঙ্গে বিএসএফ পদ্মায় নেমে প্রথমেই বুঝিয়ে দেবে ভারতীয় সীমানা। তার পরেই সেই সীমানা জুড়ে ছড়িয়ে দেওয়া হবে প্লাস্টিকের বড় বড় ড্রাম যাতে খুব সহজে পদ্মার জলেও সীমান্তটা বোঝা যায়।’’ বিএসএফ সূত্রে জানা গিয়েছে, বিজিবি-র সঙ্গে আলোচনার পরেই মাঝ-পদ্মায় ড্রাম দিয়ে সীমানা নির্ধারণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

Advertisement

এক দিকে, প্রণব মণ্ডল বাংলাদেশের জেলে বন্দি। অন্য দিকে, ইলশেগুঁড়ি বৃষ্টিতেও পদ্মায় নামতে পারছিলেন না তাঁরা। ফলে এক সপ্তাহ থেকে মনখারাপ ছিল মৎস্যজীবীদের। কিন্তু বৃহস্পতিবার আলোচনার পরে অনেকটাই চাপমুক্ত তাঁরা। ধীবরেরা জানিয়েছেন, দেরিতে হলেও শুক্রবার থেকে পদ্মায় নামতে পারলেও কিছুটা সুরাহা হবে। আর যদি এমন ইলশেগুঁড়ি আবহাওয়ায় একটু বেশি ইলিশ ওঠে তা হলে বন্ধক রাখা গয়না কিংবা জমিটাও ছাড়িয়ে নিতে পারবেন তাঁরা। ফলে শুক্রবার থেকে পদ্মায় মরিয়া হয়ে ইলিশ ধরবেন তাঁরা।

গত ১৭ অক্টোবর পদ্মায় মাছ ধরাকে কেন্দ্র করে বিএসএফ-বিজিবি-র টানাপড়েনে গুলিবিদ্ধ হয়ে বিএসএফের এক জওয়ান মারা যান। জখম হন এক জন। জলঙ্গির শিরচরের ধীবর প্রণব মণ্ডলকে বিজিবি আটক করে। পরে তাঁকে তুলে দেওয়া হয়েছে বাংলাদেশ পুলিশের হাতে। সব মিলিয়ে অস্বস্তিকর আবহে দিন কাটছিল বিএসএফের।

এক বিএসএফ কর্তার দাবি, ‘‘খুব খুব কঠিন একটা সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি আমরা। এক সহকর্মীকে হারিয়েছি। জখম আরও এক জন। মৎস্যজীবীদের অবস্থা দেখেও আমাদেরও খুব কষ্ট হয়েছে।’’ আন্তর্জাতিক সমস্যা, উপরতলার কর্তাদের চাপ— সব মিলিয়ে মৎস্যজীবীদের পদ্মায় নামতে নিষেধ করেছিল বিএসএফ। সব ভালয় ভালয় মিটে যেতে এ দিন মৎস্যজীবীদের মতোই হালকা হাসির ঝিলিক ছিল বিএসএফের মুখেও।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement