প্রতীকী ছবি।
নিভৃতবাস কেন্দ্রগুলির পরিদর্শনকে কেন্দ্র করে তৃণমূল আর বিজেপির লড়াই নদিয়ায় অন্য মাত্রায় পৌঁছে গিয়েছে।
শ্রমিকদের খোঁজখবর করতে গিয়ে বিজেপি নেতারা প্রশাসনের রোশানলে পড়ছেন, তা-ও হাল ছাড়ছেন না। উল্টোদিকে তৃণমূলের নেতাদের কাছে কোয়রান্টিন কেন্দ্র গুলির দ্বার অবারিত। তাঁরা ক্রমাগত সেখানে গিয়ে শ্রমিকদের অবস্থার খোঁজ নিচ্ছেন। সে ক্ষেত্রে তাঁদের কোয়রান্টিনে যাওয়ার জন্য পুলিশ বা প্রশাসন কোনও জোর করছে না, যা বিরোধী বিজেপি নেতাদের ক্ষেত্রে করা হচ্ছে। অভিযোগ, বিভিন্ন জায়গায় নিভৃতাবাস পরিদর্শনে বিজেপিকে আটকে দেওয়া হচ্ছে।
রাজনৈতিক মহলের মতে, করোনা আবহে পরিযায়ী শ্রমিকেরাই এখন ভোট রাজনীতির অন্যতম লক্ষ্য। সেখানে নিজেদের শ্রমিকদরদি প্রমাণ করতে সব দলই মরিয়া। প্রত্যেকেই দেখাতে চায় যে তারা শ্রমিকদের খোঁজ নিয়েছে এবং সঙ্কটে পাশে দাঁড়িয়েছে। সেটা দেখানোর জন্য কোয়রান্টিন কেন্দ্র পরিদর্শন জরুরি। শাসকদল এ ব্যাপারে সঙ্গত কারণে বিরোধীদের বাধা দিতে চাইবে। যেহেতু সরকার তাদের, তাই এ ব্যাপারে তারা এগিয়েও থাকবে। বিরোধীদের কখনই দুর্গতদের কাছে পৌঁছতে দেবে না।
রানাঘাট কেন্দ্রের সাংসদ জগন্নাথ সরকারকে নবদ্বীপের একাধিক কোয়রান্টিন সেন্টার পরিদর্শনের জন্য পুলিশ হোম কোয়রান্টিনে যেতে বলে। অথচ, একই কাজ করা সত্ত্বেও নবদ্বীপের পুরপ্রধান বিমান সাহাকে কিছুই বলা হয় নি। সাংসদ তথা তৃণমূলের কৃষ্ণনগর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি মহুয়া মৈত্র জেলার একাধিক কোয়রান্টিন সেন্টারে গিয়েছেন। তাঁকেও হোম কোয়রান্টিনে থাকতে বলা হয়নি বা কোয়রান্টিন সেন্টার পরিদর্শনে বারণ করা হয়নি।
জেলার এক বিজেপি নেতার কথায়, “জগন্নাথদা সাংসদ। দাপুটে নেতাও বটে। তাঁকে ঘরে আটকে রাখতে পারা কঠিন। কিন্তু আমরা ছোটখাট লেক। আমাদের ক্ষেত্রে তো সেটা হবে না। জোর করে ঘরে চোদ্দো দিন থাকতে বাধ্য করবে। পুলিশ প্রশাসনকে দিয়ে হয়রানি করবে। তাই ইচ্ছা থাকলেও যেতে পারিনি।”
তেহট্টের একাধিক নিভৃতাবাসে যেতে চেয়েছিলেন বিজেপির জেডপি ৮ এর সভাপতি সজল ঘোষ। কিন্তু সেই পরিকল্পনা বতিল করতে হয়েছে তাঁকে। আবার একাধিক কোয়রান্টিন সেন্টারে গিয়ে শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলেছেন তৃণমূলের কৃষ্ণগঞ্জ ব্লক সভাপতি লক্ষণ ঘোষ চৌধুরী। তাঁকে হোম কোয়রান্টিনে থাকতে বলা হয়নি।
লক্ষণবাবু বলছেন, “বিজেপির লোকেরা একেবারেই সচেতন নন। তাঁরা সামাজিক দূরত্ব রক্ষা করছেন না। আমরা করছি । তাই আমাদের কিছু বলার প্রয়োজন হচ্ছে না।”
তার পাল্টা জগন্নাথ সরকার বলছেন, “পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য কেন্দ্র প্রচুর টাকা পাঠিয়েছে। সেই টাকা তাঁদের জন্য খরচ করা হচ্ছে না। আমরা সেই প্রশ্নগুলো তুলে ধরছি বলেই আমাদের আটকে দেওয়া হচ্ছে।”