—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
দীর্ঘ অপেক্ষার পর দক্ষিণবঙ্গের অন্য জেলাগুলির সঙ্গে নদিয়াতেও বৃষ্টি এলো ঝেঁপে। স্বস্তির হাসি চাষির মুখে। এ বার আষাঢ়ের প্রথম থেকে ছিটেফোঁটা বর্ষা হয়েছে। গোটা আষাঢ় এবং শ্রাবণের তৃতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত মাঝে মাঝে কয়েক পশলা বৃষ্টি পেয়েছে নদিয়া।
এই পরিস্থিতিতে শ্রাবণের শেষ থেকে বঙ্গে বর্ষার মেঘ জমতে শুরু করেছে। হাওয়া অফিস জানাচ্ছে, জুন মাসের শেষে যেখানে নদিয়ায় বৃষ্টি ঘাটতির পরিমাণ ছিল প্রায় ৫৬ শতাংশ, অগস্টের শেষ সপ্তাহে তা দাঁড়িয়েছে ৩৫ শতাংশে।
আবহাওয়া অফিস জানিয়েছিল, বৃষ্টিতে অনেকখানি ঘাটতি নিয়েই এ বার দক্ষিণবঙ্গে মরসুম শুরু করতে চলেছে বর্ষা। আশঙ্কা ছিল, ক্ষতি হবে পাট এবং বিশেষ করে আমন ধানের। জলের অভাবে পাট এখনও দাঁড়িয়ে আছে মাঠে। যাঁরা প্রচুর টাকা খরচ করে জল কিনতে পেরেছেন তাঁরাই কেবল পাট জাঁক দিতে পেরেছেন এ বার। বৃষ্টির অভাবে পিছিয়ে গিয়েছে আমন বোনার কাজ। বৃষ্টিহীনতার সঙ্গে পাল্লা দিয়েছে অস্বাভাবিক তাপমাত্রা, চড়া রোদ এবং আদ্রতা। ফসলের মাঠ পুড়ে ঝামা। আনাজ থেকে আমন, পাট থেকে পান সবই ঝলসে গিয়েছে। অবশেষে পরিস্থিতি কিছুটা বদলেছে।
কৃষি আবহাওয়া দফতর জানাচ্ছে, অগস্টের তৃতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত নদিয়ায় স্বাভবিক বৃষ্টি
হওয়ার কথা ২০৫.৫ মিলিমিটার। কিন্তু হয়েছে ১৭৭.৪ মিলিমিটার। ঘাটতি ২১ শতাংশ। অন্য দিকে, ১ জুন থেকে ২৪ অগস্ট অর্থাৎ বর্ষার তিন মাসে জেলায় বৃষ্টি হওয়ার কথা ৭৫৯.২ মিলিমিটার। কিন্তু এখনও পর্যন্ত বৃষ্টি হয়েছে ৪৯৫.০ মিলিমিটার।
সরকারি কৃষিকর্তা পার্থ ঘোষ বলেন “এখন মাঠে আমন রয়েছে। ধানের মধ্যে এটিই প্রধান। এই বৃষ্টির ফলে আমনের উপকার হবে। তবে সমস্যা হবে আনাজের। টানা বৃষ্টি আনাজের পক্ষে ভাল হবে না।”
নদিয়ার প্রধান কৃষি আবহাওয়াবিদ মৃণাল বিশ্বাস বলেন, “দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমীবায়ুর প্রভাবে যে বর্ষা হয় আমাদের এখানে এত দিনে তা হচ্ছে। বর্ষা পিছিয়ে যাওয়া আসলে আবহাওয়ার সার্বিক পরিবর্তনের সূচক। গত দু-তিন ধরে যে বৃষ্টি হচ্ছে তাই আসল বর্ষা। এর মধ্যে কোনও নিম্নচাপের ব্যাপার নেই। এই বৃষ্টি চাষের জন্য ভীষণ উপকারি হবে।”