সারের দোকানে প্রশাসন।
একদিকে শীতকালীন মরসুমি আনাজ মাঠে রয়েছে, অন্যদিকে আলু চাষ শুরু হয়েছে। মাসখানেকের মধ্যে বোরো ধান চাষ শুরু হয়ে যাবে। আর এই সব ক’টি ফসলেই রাসায়নিক সারের প্রয়োজন রয়েছে। কিন্তু ডিএপি, পটাশের মতো প্রয়োজনীয় সারের জোগান কম রয়েছে। আর এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে এক শ্রেণির অসাধু সার ব্যবসায়ী কালোবাজারি, মজুতদারি শুরু করেছে। যার জেরে কৃষকদের বেশি দামে সার কিনতে হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে। ইতিমধ্যে সারের মজুতদারি ও বেশি দাম নেওয়ায় বড়ঞার এক খুচরো সার ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে অভিযোগ জমা পড়েছে কৃষি দফতরে। অভিযোগ পাওয়ার পরে ওই সার ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে কৃষি দফতর। সেই সঙ্গে তাকে শো-কজও করা হয়েছে।
রাজ্য জুড়ে সারের সঙ্কট তৈরি হওয়ায় শুক্রবার জেলার সব মহকুমার সারের ডিলারদের নিয়ে বৈঠক করেছেন কৃষি দফতরের কর্তারা। সেখানে কৃষি দফতরের তরফে পরিষ্কার জানানো হয়েছে, সারের মজুতদারি, কালোবাজারি করা যাবে না। এমআরপির বেশি দাম নেওয়া যাবে না। এ দিন জেলার বিভিন্ন সারের দোকান পরিদর্শন করেছেন কৃষি আধিকারিকরা। ইতিমধ্যে সারের কোম্পানির লোকজনকে নিয়ে বৈঠক করে তাঁদের কাছে সার সরবরাহ চেন কী, তা জানতে চাওয়া হয়েছে। কাল রবিবার জেলার সারের বড় ডিলারদের নিয়ে বৈঠক ডাকা হয়েছে।
সার নিয়ে উদ্ভূত সমস্যার সমাধান চেয়ে দিন পনেরো আগে কেন্দ্রীয় সার ও রসায়ন মন্ত্রকের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছেন বহরমপুরের সাংসদ অধীর চৌধুরী।
কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদের কৃষি সেচ ও সমবায় দফতরের কর্মাধ্যক্ষ শাহনাজ বেগম বলেন, ‘‘কেন্দ্র পর্যাপ্ত সার পাঠাচ্ছে না বলে ডিএপি, পটাশের মতো সারের জোগান কম।’’ অভিযোগ উড়িয়ে বিজেপির কৃষক সংগঠন কিষাণ মোর্চার রাজ্য নেতা শাখারভ সরকার বলেন, ‘‘পর্যাপ্ত সার রাজ্যে আসছে। সারের কৃত্রিম সঙ্কট তৈরি করে এ রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল ফায়দা তুলতে চাইছে।’’ জেলার উপ কৃষি অধিকর্তা (প্রশাসন) তাপসকুমার কুণ্ডু বলেন, ‘‘বড়ঞার এক সার ব্যবসায়ীকে শো-কজ করে তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়েছে।’’ তাঁর হুঁশিয়ারি, ‘‘সারের দাম বেশি নিলে বা কালোবাজারি করলে কঠোর পদক্ষেপ করা হবে।’’