গুলিতে নিহত সালাউদ্দিনের শোকাহত পরিবার। নিজস্ব চিত্র
নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে অবরোধ শুরু হয়েছিল সাহেবনগর মোড়ে। কিন্তু শাসক দলের স্থানীয় নেতারা সেই অবরোধ তুলতে হুমকি দিচ্ছেন শুনে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন জলঙ্গির সাহেবনগরের রায়পাড়ার বাসিন্দা সালাউদ্দিন শেখ (১৯)। তাঁর বাড়ির কাছেই সাহেবনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধান তামান্না ইয়াসমিনের বাড়ি। সেখানেই সালাউদ্দিনরা কয়েক জন মিলে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন। সালাউদ্দিনের বাবা নুর ইসলাম শেখের দাবি, ‘‘সে সময় গুলি চালে। তাতেই আমার ছেলের মৃত্যু হয়েছে।’’ সালাউদ্দিনকে প্রথমে সাগরপাড়া প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে তাঁকে ডোমকল মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথেই মারা যান এই তরুণ। তামান্না বলেন, ‘‘কে গুলি চালিয়েছে জানি না। সকাল থেকেই এলাকা উত্তপ্ত ছিল। আমরা এক রকম গৃহবন্দি হয়ে রয়েছি। খুবই আতঙ্কে রয়েছি। বাইরে কী হয়েছে, কিচ্ছু জানি না।’’ তৃণমূলের জলঙ্গি উত্তর জোন-এর সভাপতি তহিরুদ্দিন মণ্ডলের দাবি, ‘‘প্রধানের বাড়িতে কিছু দুষ্কৃতী আক্রমণ করতে গিয়েছিল বলে শুনেছি। তখন গোলমালের সময় নিজেদের কাছে থাকা বোমা ফেটে গিয়েই এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে।’’
সালাউদ্দিনের মা মারা গিয়েছেন। বাবা দিনমজুর। পরে আবার বিয়ে করেছেন। পড়াশোনা ছেড়ে দিয়ে সালাউদ্দিন কেরলে গিয়ে কাজ করেন। তাতে কিছু টাকা জমিয়েছেন। সেই টাকায় সবে পাকা বাড়ির ভিত তৈরি করেছেন। ইচ্ছে ছিল, ভাল একটি বাড়ি তৈরি করবেন। প্রতিবেশীরা বলছেন, খুবই গরিব পরিবার। সবে একটু ভাল করে বাঁচার স্বপ্ন দেখছিল, তার মধ্যে যেন বাজ পড়ল।