গুলিতে নিহত আনারুলের পরিবার। নিজস্ব চিত্র
নমাজ পড়ার পরে মসজিদ পরিষ্কার করতে কিছু ক্ষণ সেখানেই ছিলেন সাহেবনগর জুম্মা মসজিদের মোয়াজ্জিন আনারুল বিশ্বাস (৬১)। বাইরে গোলমালের আওয়াজ শুনে বাইরে বেরিয়ে দেখতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হন আনারুল। পেটে গুলি লাগে। রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তায় পড়ে যান। তাঁকে সেই অবস্থায় দেখে ছুটে আসেন ভাই আলাউদ্দিন। আলাউদ্দিনের গায়েও গুলি লাগে। ঘটনাস্থলে মৃত্যু হয় আনারুলের। পুলিশ রাস্তা থেকে খুব তাড়াতাড়িই তাঁর দেহ তুলে নিয়ে যায়। কিন্তু তার মধ্যেই এলাকায় ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।
আনারুলদের বাড়ি ঘটনাস্থল থেকে খুব বেশি হলে দেড়শো মিটার। তাঁদের আর এক ভাই সিরাজুল বলেন, ‘‘গুলির শব্দ, কান্না, চিৎকার শুনে বাড়ি থেকে ছুটে বেরোই। গিয়ে দেখি, আমার দুই দাদা গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পড়ে রয়েছেন।’’ সিরাজুলের দাবি, ‘‘একটি ছোট গাড়ির জানলার কাচ নামিয়ে সেখান থেকে এলোপাথাড়ি গুলি করা হয়। তাতেই দুই দাদার গায়ে গুলি লাগে।’’ মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপার অজিত সিংহ যাদবের বক্তব্য, ‘‘পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে। আমরা সব দিক খতিতে দেখছি।’’
সিরাজুল বলেন, ‘‘সাহেবনগর মোড়ে বিক্ষোভ সমাবেশের থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে কেন গুলি করা হল বুঝতে পারছি না।’’ সিরাজুলরা সাত ভাই। বিশ্বাস বাড়ির ছেলে বলে তাঁদের সকলেই চেনেন। সিরাজুলের বক্তব্য, ‘‘আমাদের পরিবার বরাবরই কংগ্রেসের সমর্থক। কিন্তু তৃণমূল থেকে দাবি করা হয়েছিল, ওই দলে যোগ দিতে। আমার তা করিনি।’’ তাঁর বক্তব্য, ‘‘যদি কোনও ক্ষোভ থাকে, তা হলে তা এইটুকুই. কিন্তু তার জন্য একেবারে গুলি করে দেওয়া হবে, তা ভাবতেই পারছি না।’’
আনারুল সরকারি ভাবে মোয়াজ্জিন ভাতা পান। পেশায় দিনমুজর। জমিজমা রয়েছে সামান্যই। তাঁর পাঁচ ছেলে এক মেয়ে। মেয়ের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। তিন ছেলে কেরলে শ্রমিকের কাজ করেন।