Coronavirus Lockdown

ছ’দিন পরেও বিদ্যুতের পথ চেয়ে হাপিত্যেশ

এখনও এ ভাবেই নাজেহাল হতে হচ্ছে জেলার বিদ্যুৎহীন বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দাদের।

Advertisement

সৌমিত্র সিকদার

চাকদহ শেষ আপডেট: ২৭ মে ২০২০ ০২:১১
Share:

প্রতীকী ছবি।

একতলা বাড়ির সামনের বারান্দায় প্লাস্টিকের চেয়ারে বসে তিরানব্বই বছর বয়সি রেখারানি হালদার। কোনও রকমে বললেন, “বিদ্যুৎ নেই। তার উপর যা গরম পড়েছে। আর পারা যাচ্ছে না।”

Advertisement

গত বুধবারের আমপান-তাণ্ডবের পর কেটে গিয়েছে ছ’দিন। তবু এখনও এ ভাবেই নাজেহাল হতে হচ্ছে জেলার বিদ্যুৎহীন বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দাদের। চাকদহ ব্লকের তাতলা ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের ধনিচা এলাকার বাসিন্দা শঙ্করপ্রসাদ হালদার বলেন, “গত ছ’দিন থেকে বিদ্যুৎ নেই। গরমে ঘুম হচ্ছে না। এখনও কোনও সুরাহার সম্ভাবনা দেখছি না।” ওই এলাকার আরেক বাসিন্দা বাপি দে বলেন, “এলাকায় বিদ্যুতের একটি খুঁটি ভেঙে পড়ে গিয়েছে। সেই কারণে ঝড়ের রাত থেকে এলাকায় বিদ্যুৎ নেই। আমাদের বাড়িতে আমার কাকা রয়েছেন। বয়স ৮৪ বছর। তিনিও কষ্ট পাচ্ছেন।” চাকদহ বনগাঁ রাজ্য সড়কের ধারে দুবড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের নেউলিয়া আশ্রমপাড়াতেও বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে গিয়েছে। সেই থেকে এলাকা বিদ্যুৎহীন। এ দিন সেখানে খুঁটি বসানোর কাজ শুরু হয়। স্থানীয় বাসিন্দা প্রসেনজিৎ মল্লিক বলেন, “সেই ঝড়-বৃষ্টির পর থেকে আমরা অন্ধকারে দিন কাটাচ্ছি। সব মিলিয়ে কমপক্ষে চারশো ঘর নিষ্প্রদীপ হয়ে রয়েছে। বিদ্যুতের খুঁটি বসানোর কাজ শুরু হয়েছে। কিন্তু বিদ্যুৎ কবে আসবে তা বোঝা যচ্ছে না।”

ওই ব্লকের ঘেঁটুগাছি গ্রাম পঞ্চায়েতের সহিসপুর বারোয়ারিতলায় চারশো বছরের একটি অশ্বত্থ গাছ ভেঙে একটি বাড়ির উপর পড়েছে। গত কয়েক দিনে সেই গাছ সরানো যায়নি। সোমবার থেকে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর কর্মীরা সেই গাছ কেটে সরানোর কাজ শুরু করেছেন। পরিবারের সদস্য বিশ্বজিৎ ভক্ত বলেন, “আমাদের মুদিখানার দোকান এবং থাকার ঘর রয়েছে। ঝড়ের সময় আমরা চারজন ঘরেই ছিলাম। গাছটা আমাদের ঘরের উপর পড়ে। আমরা প্রাণ বাঁচানোর জন্য ঘর থেকে পালিয়ে আসি। এখন অন্যত্র রাত কাটাচ্ছি। বাড়ির সব শেষ। আবার নতুন করে তৈরি করে বসবাস করতে হবে।”বিদ্যুৎ দফতরের কর্মীদের নিয়ে বিভিন্ন বিদ্যুৎহীন এলাকায় ঘুরছেন রাজ্যের মন্ত্রী তথা চাকদহের বিধায়ক রত্না ঘোষ, চাকদহ পঞ্চায়েত সমিতির সহকারী সভাপতি দিলীপ সরকার। রত্না বলেন, “প্রায় সব জায়গায় বিদ্যুৎ এসে গিয়েছে। দু’একটি জায়গা বাদ রয়েছে। আগামী কাল সেই কাজ শেষ করা সম্ভব হবে বলে মনে করছি। সে ভাবেই চেষ্টা চলছে।”

Advertisement

এ দিন সকালে বিদ্যুতের দাবিতে চাকদহ চৌরাস্তার ধারে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করেন বেশ কিছু মানুষ। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি সামাল দেয়। এ নিয়ে রত্না বলেন, “ওই সব এলাকায় প্রায় সব বাড়িতে বিদ্যুৎ এসেছে। এর পরেও কেন এ ভাবে অবরোধ করা হচ্ছে, তা বুঝতে পারছি না। আমার মনে হয় যাঁদের বাড়িতে বিদ্যুৎ এসেছে, তাঁরাও সরকারের বদনাম করার জন্য রাস্তা অবরোধে সামিল হচ্ছেন।”

বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার রিজিওনাল ম্যানেজার রমেশচন্দ্র মাধু বলেন, “আগামী দু’একদিনের মধ্যে সব জায়গায় বিদ্যুৎ চলে আসবে বলে আশা করছি।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement