মন্দিরে দেবী পদ্মা। নিজস্ব চিত্র
এখনও কেউ কেউ পদ্মার পাড়ে দাঁড়িয়ে দেখার চেষ্টা করেন, কোথায় তাঁর বাড়িটা ছিল। কোথায় কেটেছে তাঁর ছোটবেলা। তাঁর গাছের দোলনা, মালতীর বন। সবই এখন পদ্মার গর্ভে। নতুন করে শুরু হয়েছে জীবন ও সংসার। সেও পদ্মারই কোলে। পদ্মাময় এই জীবনে তাঁরা তাই দুর্গাপুজোর এই ক’দিন আরাধনা করেন দেবী পদ্মার। এ বারে পদ্মাই ভাঙনে খেয়েছে গ্রামের আরও অনেকটা অংশ। তাই পুজো হবে কি না, তা নিয়েই ছিল সন্দেহ। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পুজো হচ্ছে।
পুরাতন প্রথা মেনে প্রায় তিনশো বছরেরও বেশি সময় ধরে মা পদ্মার পুজো অনুষ্ঠিত হয় সামসেরগঞ্জের এই ধুসরিপাড়া এলাকায়। যদিও এ বছর ভাঙনে বিদ্ধস্ত ধুসরিপাড়া এলাকা। তলিয়ে গিয়েছে মন্দির থেকে শুরু করে একের পর বাড়িঘর। ছ’শো পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ভাঙনের কবলে পড়ায় পুজো নিয়ে দুশ্চিন্তা শুরু হয়। কিন্তু তারপরেও ভাঙন কবলিত মানুষদের উদ্যমী মনোভাবেই গ্রামেরই এক কোণে মন্দির তৈরি করে হচ্ছে পুজো। তবে মেলা এ বার হবে না।
ধুসুরিপাড়া এলাকায় দীর্ঘ প্রায় তিনশো বছরেরও বেশি সময় ধরে মা পদ্মার পুজো হয়ে আসছে। মা দুর্গার সময়েই অর্থাৎ পঞ্চমী থেকে দশমী পুজোর দিনেই মা পদ্মা এখানে পূজিত হন। প্রতিবছর পুজো উপলক্ষে বিশাল মেলার আয়োজন করা হয় এলাকায়। সব ধর্মের মানুষ আসতেন মেলায়। এখানে কোন প্রকার বাধা নিষেধ ছিল না আজও নেই। পুজো কমিটির অন্যতম উদ্যোক্তা রাহুল সিংহ জানান, ‘‘ভাঙনে মা পদ্মার মন্দির গঙ্গা গর্ভে তলিয়ে গেলেও আমরা গ্রামেরই কোণে নতুন করে থান তৈরি করে পুজোর আয়োজন করেছি।’’