পাচারের নয়া কৌশল খুঁজে নিয়ে বিএসএফ জওয়ানদের টক্কর দিচ্ছে পাচারকারীরা। বোমা-গুলির সঙ্গে সীমান্তে এখন বিএসএফের সঙ্গে পাল্লা দিতে আধুনিক প্রযুক্তিকে কাজে লাগাতে পিছপা হচ্ছে না তারা। কয়েক দিন আগেই যেমন রানিনগর সীমান্তে স্টেইনগান-সহ আধুনিক নাইট ভিশন ক্যামেরা পাচারকারীদের কাছ থেকে উদ্ধার করেছে বিএসএফ। এমনকি বিএসএফকে চমকে দিতে আইইডি-র মতো বিস্ফোরক গরুর গলায় ঝুলিয়ে রাখছে পাচরকারীরা। যদিও উদ্ধারের পরে দেখা গিয়েছে, আইইডি-র মতো দেখতে ফাঁকা পাইপ ঝুলিয়ে রেখেছিল পাচারকারীরা। যদিও ওই আগ্নেয়াস্ত্র এবং আধুনিক নাইট ভিশন ক্যামেরা দুটোই বিএসএফের কাছ থেকে পাচারকারীরা ছিনতাই করেছে বলে প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান। পরে সেগুলি পাচারের কাজে লাগাচ্ছে পাচারকারীরা।
কিন্তু স্টেইনগান বা নাইট ভিশন ক্যামেরা পাচারে কী প্রয়োজন? বিএসএফের দাবি, বিশেষ করে পাচারের মরসুমে পাচারকারীরা মরিয়া হয়ে জওয়ানদের দিকে তাক করে গুলি ছুড়তেও কসুর করে না। এর আগেও রানিনগর ইসলামপুর জলঙ্গি সীমান্তে পাচারকারীদের আক্রমণের একাধিক ঘটনা রয়েছে, যেখানে বিএসএফ জওয়ানেরা আক্রান্ত হন। পাচারের সময়ে রাতের অন্ধকারে পাটের জমি থেকে আচমকা বেরিয়ে সীমান্তের পাহারায় থাকা বিএসএফ জওয়ানদের পাকড়াও করে তাদের কাছ থেকে আগ্নেয়াস্ত্র কেড়ে নিয়ে অবাধে পাচার চালানোর ঘটনা ঘটছে। সেই তালিকায় নতুন সংযোজন নাইট ভিশন ক্যামেরা। সেই ক্যামেরা দিয়েই বিএসএফের অবস্থান বুঝে নিয়ে গরু পাচার করছে পাচারকারীরা। জেলা পুলিশের এক কর্তা জানাচ্ছেন, বিএসএফের কাছ থেকে ছিনতাই করে এই আগ্নেয়াস্ত্র এবং ক্যামেরা পাচারকারীদের হাতে এসেছে। উদ্ধার হওয়া নাইট ভিশন ক্যামেরায় এবং ওই আগ্নেয়াস্ত্রে নির্দিষ্ট নম্বর এবং ব্যাটেলিয়ন নম্বর লেখা ছিল। পুলিশের অনুমান, রানিনগর সীমান্ত এলাকার কর্তব্যরত বিএসএফ জওয়ানদের কাছ থেকেই সেগুলি ছিনতাই করা হয়েছে।
রানিনগর সীমান্তের এক বর্ডার আউট পোস্টের (বিওপি) বিএসএফ কর্তা বলছেন, ‘‘নিয়ম অনুযায়ী ভিন দেশের দিকে তাক করেই সীমান্তে পাহারা দেওয়ার কথা জওয়ানদের। কিন্তু পাচারকারীদের দৌরাত্ম্যে এখন উলটপুরাণ! রাতের অন্ধকারে পাচারকারীরা কখন আসছে, তা দেখতেই সীমান্ত ছেড়ে নিজের দেশের দিকেই তাক করে থাকতে হচ্ছে। এতে বিএসএফ জওয়ানদের জীবনের ঝুঁকি থাকছে। পাচারকারীদের কাছে যে ধরণের আগ্নেয়াস্ত্র থাকে, তাদের সঙ্গে টক্কর দেওয়া মুশকিল হচ্ছে।’’ অন্য দিকে, সীমান্তে পাচার রুখতে গুলি চালানোর ক্ষেত্রেও বিএসএফের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। সেই সুযোগকে কাজে লাগাচ্ছে পাচারকারীরা।