চিত্রশালী বাজারে দিলীপ ঘোষ। নদিয়ার চিত্রশালীতে। ২৯ জুন ২০২৩। ছবি : সুদীপ ভট্টাচার্য
পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রচারে রানাঘাটে এলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ। কিন্তু সেখানে দেখা মিলল না রানাঘাট দক্ষিণের বিধায়ক বিধায়ক মুকুটমণি অধিকারীর।
পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী বৃহস্পতিবার রানাঘাট ১ ব্লকের বিভিন্ন জায়গায় রোড-শো করার কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত তা কাটছাঁট করা হয়েছে। এই কর্মসূচিতে রানাঘাটের সাংসদ জগন্নাথ সরকার, রানাঘাট উত্তর-পূর্বের বিধায়ক অসীম বিশ্বাস, রানাঘাট উত্তর-পশ্চিমের বিধায়ক পার্থসারথী চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু মুকুটমণি না আসার বিষয়টি নিয়ে দলের অন্দরেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। দিলীপ ঘোষের কর্মসূচি কাটছাঁটের প্রসঙ্গে আবার বিজেপিকে কটাক্ষ করেছে তৃণমূল।
বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সকাল ১০টায় রানাঘাটের রামনগর থেকে বাদকুল্লা কদমতলা পর্যন্ত রাজ্য সড়ক ধরে পদযাত্রা এবং বিকেলে কৃষ্ণগঞ্জের হাঁসখালিতে সভা করার কথা ছিল দিলীপ ঘোষের। এ ছাড়া নির্বাচনী প্রচারকে সামনে রেখে দলীয় ভাবে একাধিক জনসংযোগ কর্মসূচিও নেওয়া হয়েছিল। সকালে রানাঘাটের রামনগর ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের ছোট বাজার মোড়ে হাজির হন দিলীপ ঘোষ। সেখানে উপস্থিত দলীয় কর্মী ও নেতাদের সঙ্গে ‘চায়ে-পে-চর্চা’ করেন দিলীপ। তার পর কিছুটা পথ হেঁটে হাঁসখালির উদ্দেশে রওনা দেন তিন। দিলীপের উপস্থিতি ঘিরে এ দিন বিজেপির নেতা-কর্মীদের একাংশ কর্মসূচি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন বলে দলেরই একটি অংশ দাবি করেছে।
বিজেপির অপর একটি অংশের দাবি, পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগেও দলের অভ্যন্তরে থাকা দুই গোষ্ঠীর ঠান্ডা লড়াই থামেনি। যে কারণে এ দিনের কর্মসূচিতে রানাঘাটের সাংসদ হাজির থাকলেও সেখানে হাজির ছিলেন না রানাঘাট দক্ষিণের বিধায়ক। তবে কয়েকদিন আগে কল্যাণীতে আয়োজিত বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর সভায় তাঁকে দেখা গিয়েছে।
এ দিনের দিলীপের কর্মসূচি নিয়ে রানাঘাটের বিজেপি সাংসদ জগন্নাথ সরকার বলেন, "আমাদের জেলা নেতৃত্বের প্রত্যেকেই দলীয় সূচি অনুযায়ী বিভিন্ন কর্মসূচিতে উপস্থিত থাকেন। রাজ্য নেতৃত্বের নির্দেশেই সেটা ঠিক হয়।”
তাঁর দাবি, “আসলে নিজেদের দুর্নীতি নিয়ে জেরবার তৃণমূলের কাছে বিরোধিতা করার মতো আর কোনও বিষয় নেই।" রানাঘাট সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের মুখপাত্র বাণীকুমার রায়ের পাল্টা দাবি, "দিলীপবাবু প্রচারে এসেছেন খবর পেয়েছি। বিরোধীরা নিজেদের মতো প্রচার করুক, আমরাও চাই। মানুষের কাছে গিয়ে উন্নয়নের মার্কশিট তুলে ধরছি আমরা। কিন্তু বিজেপি নেতারা কোন মুখ নিয়ে মানুষের কাছে যাবেন? উন্নয়ন ছেড়ে মানুষ তাদের সঙ্গে থাকতে চাইছেন না।"
কেন মুকুটমণি এ দিনের কর্মসূচিতে ছিলেন না? এ ব্যাপারে জানতে ফোন করা হলেও তিনি তা ধরেননি, ফলে তাঁর কোনও প্রতিক্রিয়াও মেলেনি। তবে বিজেপির নদিয়া দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি পার্থসারথী চট্টোপাধ্যায় বলেন, “দিলীপবাবু মূলত রানাঘাট উত্তর-পশ্চিম বিধানসভা এলাকার কর্মসূচিতে এসেছিলেন। স্বাভাবিক ভাবেই দক্ষিণের বিধায়কের না থাকারই কথা। যেহেতু রানাঘাট উত্তর-পূর্বের বিধায়ক ঘটনাচক্রে সেই সময়ে আমার সঙ্গেই ছিলেন, তাই তিনি কর্মসূচিতে হাজির ছিলেন।"