প্রতীকী ছবি।
অভিযোগ, মায়ের সামনে থেকে মেয়েকে জোর করে ছিনিয়ে নিয়ে গেল এক ব্যক্তি। তার ঘণ্টা খানেক পরে বাড়ি থেকে ৪০ ফুট দূরে বাঁশের বেড়া দিয়ে ঘেরা লিচু গাছের নীচে উবু হয়ে মাটিতে পড়ে থাকা শিশুটির দেহ মিলল। মুর্শিদাবাদে এক গ্রামে বুধবার সন্ধ্যায় দেড় বছরের এক শিশুর এমন মৃত্যুর ঘটনায় হতবাক গোটা তল্লাট। পুলিশ জানিয়েছে, সব কিছু খতিয়ে দেখা হচ্ছে। খুনের মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট থানার ওসি সুমিত বিশ্বাস বলেন, “ওই শিশু খুন হয়েছে। খুনের মামলাও দায়ের হয়েছে। কিন্তু খুনটি রহস্যময়। সন্দেহের তালিকায় রয়েছেন অনেকেই। এমনকি, শিশুটির মা এবং বাবাও। সকলকেই জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। দু’এক দিনের মধ্যে হয়তো কিনারা হবে খুনের। এখনও কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি।”
মৃত শিশুর বছর বাইশের মায়ের বয়ান মতো, বুধবার সন্ধ্যার ঠিক আগে নিজের বাড়ির দরজায় বসেছিলেন তিনি। তাঁর পাশেই বসেছিল তাঁর বড় মেয়ে। তার বয়স বছর তিনেক। ওই তরুণীর দাবি, হঠাৎই লুঙ্গি ও জামা পরা একটি লোক বাড়ির কাছে আসে। তার মুখ ঢাকা ছিল মাস্কে। ছোট মেয়ে উঠোনে খেলছিল। তাকে সে কোলে তুলে নিয়ে পালাবার চেষ্টা করে। বাধা দিতে গেলে শিশুর মায়ের পেটে সজোরে লাথি মেরে মেয়েটিকে নিয়ে বেড়া টপকে পালিয়ে যায় ওই দুষ্কৃতী। তখন অঝোরে বৃষ্টি পড়ছিল। শিশুটির মা চিৎকার করলে প্রতিবেশীরা ছুটে আসেন। ঘণ্টা খানেক পর মায়েরই চোখে পড়ে, উবু হয়ে পড়ে রয়েছে মেয়ে। তত ক্ষণে খবর পেয়ে সেখানে এসে পড়ে পুলিশ। উদ্ধার হওয়া শিশুকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
রাতেই শিশুটির মা অসুস্থ বোধ করলে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বৃহস্পতিবার সকালেই হাসপাতাল থেকে ছাড়া পান তিনি। প্রাথমিক ভাবে মাকে থানায় জিজ্ঞাসাবাদও করেছে পুলিশ। ময়না তদন্তের রিপোর্টে শিশুর দেহে কোনও আঘাতের চিহ্ন মেলেনি। তবে এটা যে খুন, তা এক রকম নিশ্চিত পুলিশ।
তবে কীভাবে খুন তার কারণ খুঁজতে শিশুর ভিসেরা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে কলকাতায়।
পুলিশ শিশুটির মায়ের বক্তব্যকে এখনই বিশ্বাস করতে রাজি নয়। কিন্তু কেন এমন কাণ্ড ঘটল, তা এখনও বোঝা যায়নি। ঘটনার সময় বাড়িতে দুই মেয়েকে নিয়ে একাই ছিলেন ওই তরুণী। তরুণীর বাবা বলেন, ‘‘কিছুই বুঝতে পারছি না। অভাব ছিল, কিন্তু কোনও অশান্তি ছিল বলে শুনিনি। যদি নিজেই খুন করে থাকে, তা হলে দুই মেয়ের এক জনকে কেন মারবে সে?”