প্রতীকী ছবি।
যাত্রিবাহী ছোট গাড়ির সঙ্গে সাইকেলের মুখোমুখি ধাক্কায় মৃত্যু হয়েছে এক প্রৌঢ়ের। রবিবার হলদিয়া-ফরাক্কা বাদশাহি সড়কে, খড়গ্রাম থানা এলাকায় হাটপাড়া ও নগর এলাকার মাঝামাঝি এলাকায় দুর্ঘটনাটি ঘটে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম টোটন গোপ (৫৫)। এই ঘটনায় জখম হয়েছেন তাঁর স্ত্রী নন্দিতা। তাঁকে খড়গ্রাম গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে সেখান থেকে কান্দি মহকুমা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ওই দম্পতি মাড়গ্রাম অঞ্চলের খেসর গ্রামের বাসিন্দা।
স্থানীয় এবং পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন সকালে নবান্ন উপলক্ষে ওই থানারই কাপাসডাঙা গ্রামে মেয়ের শ্বশুরবাড়িতে যাচ্ছিলেন ওই দম্পতি। সাইকেল নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে ছিলেন দু’জন। সেই সময় উল্টোদিক থেকে ফরাক্কার দিকে যাচ্ছিল একটি ছোটগাড়ি। ওই গাড়িটি দ্রুতগতিতে যাচ্ছিল। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বেপরোয়া গতিতে গাড়িটি হঠাৎই লেন পাল্টে ডান দিকে চলে এসে টোটনবাবুর সাইকেলে ধাক্কা মারে। ছিটকে পড়েন দু’জন।
আহত দম্পতিকে উদ্ধার করে স্থানীয় বাসিন্দারা খড়গ্রাম গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসা শুরু হওয়ার আগেই মৃত্যু হয় প্রৌঢ়ের। পুলিশ গাড়িটি আটক করেছে। আটক করা হয় চালককেও। পুলিশ জানায়, যে এলাকায় দুর্ঘটনা ঘটেছে সেটি বহুদিন ধরেই দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকা বলে চিহ্নিত। ওই এলাকায় ধীরগতিতে গাড়ি চালানোর জন্য চালকদের সতর্ক করে সাইনবোর্ডও দেওয়া আছে পুলিশের তরফে। তা সত্ত্বেও অনেক চালকই সেই নির্দেশ পালন করেন না। বেপরোয়া গতিতে যাওয়ার সময় ছোট গাড়ির চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়েই দুর্ঘটনা ঘটে বলে প্রাথমিক তদন্তে অনুমান পুলিশের।
পুলিশের একটি মহল অবশ্য আক্ষেপের সুরেই জানাচ্ছেন, রাজ্য সরকারের সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ কর্মসূচির অঙ্গ হিসেবে গত কয়েক বছর ধরেই পথনিয়ম পালনের জন্য লাগাতার প্রচার চালানো হচ্ছে। তারপরেও রাস্তায় বেরিয়ে বেপরোয়া ভাবে গাড়ি-মোটরবাইক ছোটাচ্ছে একদল চালক।
এদিনের দুর্ঘটনায় সাইকেল আরোহীরা বাঁদিক দিয়ে নিয়ম মেনে চলাচল করলেও ছোটগাড়িটিই নিয়ম ভেঙে ডানদিকে চলে এসেছিল। চালককে জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশ জানতে পারে, দ্রুতগতি থাকায় সজোরে গিয়ে সেটি সাইকেলে ধাক্কা মারে। এদিনের ঘটনার পর বাসিন্দাদের একাংশ পথনিয়ম না মানলে কড়া শাস্তির দাওয়াই চালুর পক্ষেই সওয়াল করেছেন। তাঁদের বক্তব্য, পথনিয়ম না মেনে কোনও গাড়ি যদি দুর্ঘটনা ঘটায় তবে অভিযুক্ত চালকের কড়া শাস্তি পুলিশ নিশ্চিত করতে পারলেই চালকদের একাংশের নিয়ম ভাঙার প্রবণতা কমবে।