বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসকে অভ্যর্থনা। শনিবার মোহনপুরে। ছবি: প্রণব দেবনাথ Pranab Debnath
শনিবার নির্ধারিত সময়সূচির অনেকটাই পরে বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌঁছলেন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। রাজ্যপালের কার্যালয় থেকে পাঠানো বিশ্ববিদ্যালয় পরিদর্শনের সময়সূচিতে শিক্ষকদের সঙ্গে কথোপকথনের কথা থাকলেও সময়ের অভাবে তা সম্ভব হয়নি। ফলে, তাঁকে নিজেদের পেশাগত সমস্যার কথা জানাতেই পারলেন না অনেকে বলে জানাচ্ছে শিক্ষকদের একাংশ।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে খবর, এ দিন সকাল ১০টা ৫২ মিনিট নাগাদ বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে পৌঁছে যান রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের তরফে শুভেচ্ছা জানানোর পর প্রশাসনিক ভবনের তিন তলায় উপাচার্যের মিটিং রুমে পৌঁছে যান তিনি। বিভিন্ন অনুষদের ডিন-ডিরেক্টর, বিভাগীয় প্রধান ও উপাচার্য শুভেন্দুবিকাশ গোস্বামীর সঙ্গে কথাবার্তা চলতে থাকে প্রায় মিনিট দশেক ধরে। সেখানেই কয়েক জন ছাত্রছাত্রীর সঙ্গেও রাজ্যপালের কথা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যাচ্ছে, উপাচার্য শুভেন্দুবিকাশ গোস্বামী এ দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে রাজ্যপালকে জানান। অন্য দিকে, রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন গবেষণা সম্পর্কে জানতে চান। ওই আলোচনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়োগ ও পদোন্নতির বিষয়টিও ওঠে। রাজ্যপালকে জানানো হয়, আচার্যের প্রতিনিধি না থাকায় নিয়োগ ও পদোন্নতির মতো বিষয়গুলি থেমে রয়েছে। বিভিন্ন বিভাগে পর্যাপ্ত শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীও নেই। যদিও আচার্যের প্রতিনিধির নামের তালিকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আগেই পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেই নামের তালিকা আচার্যের অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে।
এ দিনের ওই ওই আলোচনায় উপস্থিত থাকা এক আধিকারিক বলেন, “রাজ্যপাল প্রতি বছর সেরা ছাত্রছাত্রী ও সেরা গবেষক পুরস্কার চালু করার কথাও বলেছেন এই দিন।”
তবে এ দিনের আলোচনায় বিভাগীয় প্রধানেরা রাজ্যপালের সঙ্গে বিশেষ কিছু কথোপকথনের সময় পাননি। তিন তলার কনভোকেশন হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীরা বসেছিলেন বেশ কিছু ক্ষণ ধরে। পরে তাঁরা জানতে পারেন, রাজ্যপাল সময়াভাবের কারণে তাঁদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে পারছেন না। যদিও রাজ্যপালের অফিস থেকে জানানো হয়েছিল, উপাচার্য ও শিক্ষকদের সঙ্গে তিনি কথা বলবেন। অন্য দিকে, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শুক্রবারই বিজ্ঞপ্তি দেন— রাজ্যপাল আলাপচারিতা পর্ব সারবেন। সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তাদের উপস্থিত থাকতে হবে।
শনিবার এই বিষয়ে কথা বলতে চেয়ে উপাচার্যকে একাধিক বার ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার শুভ্রজ্যোতি ঘোষ বলেন, “রাজ্যপালের পরিদর্শন আকস্মিক ঠিক হয়েছে। শুক্রবার আমরা তা জানতে পারি। কনভোকেশন হলে সকল শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের আসার জন্য অনুরোধ করা হয়েছিল। সময়ের অভাবে তাঁর সকলের সঙ্গে সাক্ষাৎ সম্ভব হয়নি।’’
যদিও এ দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌথমঞ্চের পক্ষ থেকে রাজ্যপালের এডিসিকে একটি আবেদনপত্র দেওয়া হয়। সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের অল ইন্ডিয়া কো-অর্ডিনেটেড রিসার্চ প্রোজেক্টের শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের বিভিন্ন সমস্যার কথা জানানো হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ শরীরতত্ত্ববিদ্যার বিভাগীয় প্রধান শুভাশিস মণ্ডল বলেন, ‘‘সে সময়ে আচার্য জানান, আজ সময় হল না। তাই আমাদের সমস্যার কথা শুনতে পারছেন না। তবে সমাবর্তন অনুষ্ঠানের সময়ে এসে কথা বলবেন জানান তিনি।”
বিসিকেভি থেকে বেরিয়ে এসে রাজ্যপাল সোজা চলে যান এমসের এক সংস্থার অনুষ্ঠানে। সেখানে বেশ কিছু ক্ষণ থাকার পরবেরিয়ে যান।