প্রতীকী ছবি।
পার্থ-অনুব্রত কাণ্ডে এখন দৈনন্দিন রাজনৈতিক কর্মসূচিতে বেশ খানিকটা ব্যাকফুটে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল। তৃণমূলের এই ‘অসময়’-এর সুযোগ নিতে মাঠে নেমেছেন সিপিএম। আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনে তাঁদের হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনতে তাঁরা মরিয়া। প্রথমে মহম্মদ সেলিম, পরে সুজন চক্রবর্তীদের মতো ‘হেভিওয়েট কমরেড’দের ঘনঘন জেলা সফর অন্তত সেদিকেই ইঙ্গিত দিচ্ছে।বহরমপুরে সিপিএমের ‘মহামিছিল’ই হোক আর এসএফআইয়ের জাঠা-তেই হোক, লাল পতাকার নীচে মানুষের ভিড়ে উৎসাহিত জেলার সিপিএম নেতারাও। লালগোলার দেওয়ান সরাই গ্রাম পঞ্চায়েত সেই উৎসাহে বাড়তি অক্সিজেন জুগিয়েছে।
দলের জেলা সম্পাদক জামির মোল্লার দাবি, “যত দিন যাবে তত মানুষ আরও বেশি বামেদের সঙ্গে পথে নামবে।” তৃণমূলের মুর্শিদাবাদ বহরমপুর ইউনিটের জেলা সভাপতি শাওনি সিংহ রায় অবশ্য সেই দাবি নস্যাৎ করে বলেন, “ছেঁড়া কাঁথায় শুয়ে লাখ টাকার স্বপ্ন দেখছেন ওঁরা।”
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একটা অংশের দাবি, এই মিছিলের আয়োজন করে তরুণদের নেতৃত্ব দেওয়ার মুন্সিয়ানা দেখতে চেয়েছে আলিমুদ্দিন। যদিও সুজন চক্রবর্তীর মতো নেতাকেও বামেদের শক্তির প্রমাণ দিতে টেনে আনতে হয়েছে প্রয়াত জ্যোতি বসুর নাম।
তবে এও ঠিক, সেলিম-সুজনের মিছিল, সভায় তরুণ মুখ দেখা গিয়েছে বেশি। যাঁদের অধিকাংশই হয় কাজ খুঁজছেন, কিংবা ছোট বড় বেসরকারি সংস্থায় কাজ করছেন। কাজের দিনে নিজেদের এক দিনের বেতন বাদ দিয়ে তাঁরা এই মিছিলে অংশ নিয়েছেন বলে দাবি বাম যুব সংগঠন ডিওয়াইএফের রাজ্য সভাপতি ধ্রুবজ্যোতির সাহার। তাঁর দাবি, “যুব সমাজ জানে বিকল্পের সন্ধান একমাত্র বামপন্থীরা দিতে পারে। সেই চেতনা থেকেই তাঁরা আমাদের মিছিলে ভিড় করে এসেছেন।”
প্রবীণ সিপিএম নেতা রঘু নন্দী। তিনি বলেন, “সারা জেলায় আমাদের শক্তিবৃদ্ধি হয়েছে। তৃণমূল ও বিজেপিকে হারিয়ে জনগণের পঞ্চায়েত জনগণকে ফিরিয়ে দিতে আমরা ঐক্যবদ্ধ ভাবেই লড়াই করব।” তাঁর ইশারা কংগ্রেসের দিকেও।
তৃণমূলের সাংসদ আবু তাহের খান অবশ্য বলেন, “ওরা বিজেপিকে ঠেকিয়ে নিজেদের খাতাটা আগে খুলুক। বিজেপিকে অক্সিজেন জুগিয়েছে বলেই জেলায় বিজেপি দু’টি আসন পেয়েছে।” যদিও সাংসদের বক্তব্য ‘হাস্যকর’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন সিপিএমের নেতারা।