কৃষ্ণনগরে নাগরিকত্ব আইন বিরোধী বাম-মিছিল। নিজস্ব চিত্র
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন নিয়ে তারা তৃণমূলের আগেই পথে নেমেছিল। তাদের পরিকল্পনা আছে। আছে নির্দিষ্ট কর্মসূচিও। কিন্তু তাতে যেন কিছুতেই জোয়ার আনতে পারছে না সিপিএম। সাধ আর সাধ্যের মধ্যে ফারাকটা ক্রমশ যেন স্পষ্ট হয়ে উঠছে।
এক কালে নিজেদের সাংগঠনিক শক্তির উপরে দাঁড়িয়ে একের পর এক কর্মসূচি বাস্তবায়িত করতে দেখা যেত সিপিএমকে। সাংগঠনিক শক্তিকেই তাদের ৩৪ বছর সরকারে থাকার মূল চাবিকাঠি হিসাবে ধরা হত। অথচ এখন সাংগঠনিক দুর্বলতার কারণেই ঘোষিত কর্মসূচি ঠিকঠাক বাস্তবায়িত করা সম্ভব হচ্ছে না বলে মেনে নিচ্ছেন দলেরই অনেক নেতাকর্মী।
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতা করে গত ১৬, ১৭ ও ১৮ ডিসেম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতগুলিতে এবং পুরসভার ওয়ার্ডে-ওয়ার্ডে মিটিং-মিছিলের কর্মসূচি নিয়েছিল সিপিএম। শুক্রবার তেহট্টের খরিয়াপাড়ায় মিছিল হয়। কিন্তু বিক্ষিপ্ত ভাবে বিভিন্ন জায়গায় তা পালিত হলেও বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই তা করা যায়নি। কোথাও-কোথাও একাধিক গ্রাম পঞ্চায়েতকে নিয়ে, আবার কোনও-কোনও পুরসভা এলাকায় একাধিক ওয়ার্ডের কর্মীদের নিয়ে মিছিল বার করা হয়েছে। কল্যাণী, চাকদহ, তাহেরপুর এলাকায় মিছিল হলেও রানাঘাট, কৃষ্ণনগর, শান্তিপুরের মতো পুর এলাকাগুলিতে ওয়ার্ডে-ওয়ার্ডে কর্মসূচি বাস্তবায়িত করতে পারা যায়নি। কেন সর্বত্র কর্মসূচি বাস্তবায়িত করা গেল না?
সিপিএম কর্মীদের একটা অংশের মতে, সাংগঠনিক দুর্বলতার কারণে সব জায়গায় মিছিলে যথেষ্ট লোক জড়ো করা সম্ভব হচ্ছে না। প্রথম দিকে যা-ও বা তাদের পালে হাওয়া ছিল, তৃণমূল সরাসরি মাঠে নেমে পড়ার পরে তা-ও ক্ষীণ হয়েছে। সেই কারণেই সিপিএম এক সঙ্গে একাধিক ওয়ার্ড বা গ্রাম পঞ্চায়েত নিয়ে কর্মসূচি নিয়েছে। সর্বত্র সেটাও করা সম্ভব হয়নি। যদিও তা মানতে নারাজ জেলা নেতারা। সিপিএমের জেলা সম্পাদক সুমিত দে বলছেন, “দু’এক জায়গায় আমাদের দুর্বলতা আছে ঠিকই। তবে জেলার প্রায় সর্বত্রই আমদের কর্মীরা কর্মসূচি বাস্তবায়িত করেছেন।” অবস্থা যা-ই থাক, সাম্প্রদায়িক রাজনীতির বিরুদ্ধে বামপন্থীরাই সর্বাগ্রে প্রতিরোধ গড়ছেন বলেও তাঁদের দাবি।