প্রতীকী ছবি
অসংগঠিত ক্ষেত্রের কাজহারা শ্রমিকদের এককালীন সাহায্যের জন্য তৈরি প্রচেষ্টা প্রকল্প নিয়ে জটিলতা চলছেই। এপ্রিলের মাঝামাঝি নাগাদ রাজ্য সরকার ওই প্রকল্পের কথা ঘোষণা করে। লকডাউনের মধ্যে বহু মানুষ আবেদনপত্র জমা দিতে ভিড় করায় তা বন্ধ করে দেওয়া হয়। চলতি মাসের একেবারে প্রথমে রাজ্য সরকার নতুন নির্দেশিকায় জানায়, প্রচেষ্টা প্রকল্পে টাকা পেতে গেলে অনলাইনে আবেদন করতে হবে। তার পর থেকে নতুন সমস্যা শুরু হয়েছে বলে অভিযোগ।
জেলার বিভিন্ন প্রান্তের অনেকে জানাচ্ছেন, যে অ্যাপের মাধ্যমে আবেদন করার কথা বলা হচ্ছে সেটি খোলা যাচ্ছে না। এ ছাড়াও আবেদনকারীর মোবাইলে এককালীন পাসওয়ার্ড (ওটিপি) আসতে সমস্যা হচ্ছে। দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করেও পাসওয়ার্ড মিলছে না। ফলে ফের আবেদন করা শুরু করতে হচ্ছে। অনেকে অনেক চেষ্টা করেও প্রকল্পে আবেদন করতে পারছেন না।
এ ব্যাপারে শুক্রবার রানাঘাট দক্ষিণ বিধানসভা কেন্দ্রের সিপিএমের বিধায়ক রমা বিশ্বাস রাজ্যের মুখ্যসচিবের কাছে মেল পাঠিয়েছেন। একই মেল তিনি পাঠিয়েছেন নদিয়ার জেলাশাসক বিভু গোয়েলকেও। তাঁর অভিযোগ, ‘‘প্রথম দু’দিনে তেমন একটা সমস্যা ছিল না। তার পর থেকেই ওটিপি পেতে আবেদনকারীর কালঘাম ছুটে যাচ্ছে। এ ফলে অনেকেই আবেদন করতে পারছেন না।’’ রানাঘাট-২ ব্লকের বাসিন্দা অভিজিৎ প্রামাণিক এলাকার শ্রমিকদের অধিকার আন্দোলনে জড়িত। তাঁর কথায়, ‘‘আমার কাছে অনেক কাজহারা মানুষ আসছেন প্রচেষ্টা প্রকল্পে আবেদন করতে। কিন্তু অ্যাপে এত সমস্যা হচ্ছে যে বেশিরভাগ লোককেই সাহায্য করতে পারছি না।’’
একই অভিজ্ঞতার ধুবুলিয়ার খাজুরির বাসিন্দা জহর মণ্ডলের। তিনি বলছেন, ‘‘আমি মোবাইলের ব্যাপারে সড়গড় বলে গ্রামের বহু লোক আমার কাছে আবেদন করার জন্য আসছেন। কিন্তু ওটিপি পেতে সমস্যা হচ্ছে। ফলে বেশিরভাগ লোকই আবেদন করতে পারছেন না।’’ জেলার বেশ কয়েকটি ব্লকের বিডিও-রা জানাচ্ছেন, অফলাইনে যে ভাবে প্রচুর লোক আবেদনপত্র জমা দিতে ভি়ড় করেছিলেন সেই তুলনায় অনলাইনে যথেষ্ট কম আবেদন জমা পড়ছে। কোনও কোনও ব্লকে শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত মাত্র হাজার দু’য়েক আবেদনপত্র জমা পড়েছিল।
এই প্রকল্প রূপায়নের নোডাল দফতর হল শ্রম দফতর। সেখানকার এক কর্তার কথায়, ‘‘আসলে এই প্রকল্প নিয়ে প্রথম থেকেই টানাপড়েন চলছে। যে ভাবে কৃষি শ্রমিক, কৃষিজমির মালিক, সামাজিক সুরক্ষা যোজনার অর্ন্তভুক্ত মানুষ, জবকার্ডধারীদের আবেদনকারীর বাইরে রাখা হয়েছে তাতে এমনিতেই বহু লোকই এর বাইরে চলে যাবেন।’’ এ ব্যাপারে জেলাশাসক বিভু গোয়েলকে ফোন করা হলে তিনি তা ধরেননি। ফলে তাঁর প্রতিক্রিয়া মেলেনি।