সব্দরনগর স্বাস্থ্যকেন্দ্র। নিজস্ব চিত্র
আমতলা-বেলডাঙা রাজ্য সড়ক ধরে কিছুটা এগোলেই ছায়াঘেরা সেই একতলা ভবন চোখে পড়বে। ওই এলাকার ত্রিমোহিনী, ঝাউবোনা, সব্দরনগর, আলামপুর, বটুকনাথপুর-সহ বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষের চিকিৎসার একমাত্র ভরসা সব্দরনগর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র। কিছুদিন আগেও যে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে সব সময় চিকিৎসক পাওয়া যায় না বলে গ্রামবাসীরা অভিযোগ করতেন, এখন সেখানেই নিয়মিত চিকিৎসক আসছেন।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, একটা সময় এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আউটডোর পরিষেবার পাশাপাশি মিলত জরুরি পরিষেবাও। কিন্তু এক দশকের বেশি সময় ধরে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পরিষেবা বেহাল। অভিযোগ, অধিকাংশ সময়েই চিকিৎসকের দেখা পাওয়া যেত না। সেই সময় একজন ফার্মাসিস্ট আউটডোর পরিষেবা চালাতেন। রোগীদের সমস্যার কথা শুনে তিনিই ওষুধ দিতেন। তিনি না থাকলে আরেক স্বাস্থ্যকর্মী হাসপাতাল সামলাতেন বলে অভিযোগ। তবে করোনা-আতঙ্ক এবং লকডাউনে হাসপাতালে চিকিৎসকের আনাগোনা বেড়েছে। সপ্তাহে ছ’দিন চিকিৎসক রোগী দেখছেন।
তবে চিকিৎসক নিয়মিত এলেও স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পরিষেবা নিয়ে বাসিন্দাদের অভিযোগের শেষ নেই। এক গ্রামবাসী জানান, প্রায় ছ’ বছর আগে এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে একজন চিকিৎসককে নিয়োগ করা হয়েছিল। কিন্তু অধিকাংশ সময়েই তাঁকে হরিহরপাড়া, বেলডাঙা বা নওদার বিভিন্ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে রোগী দেখতে যেতে হত। পঞ্চায়েত এলাকায় স্বাস্থ্যশিবির হলেও সেখানে তাঁকে দায়িত্ব দিয়ে পাঠানো হয়। ফলে অধিকাংশ সময়েই সব্দরনগর স্বাস্থ্যকেন্দ্রে তাঁকে পাওয়া যায় না বলে অভিযোগ। চিকিৎসক না থাকলে রোগীদের সামাল দিতেন ফার্মাসিস্ট। কিন্তু তিনিও ছ’মাস আগে অন্য স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বদলি হয়ে গিয়েছেন। ফলে টিমটিম করেই চলছে পরিষেবা। হাসপাতালে সব দিন চিকিৎসক না মেলায় বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষ ১০-১৫ কিলোমিটার দূরে আমতলা গ্রামীণ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য যেতে বাধ্য হতেন। স্থানীয় বাসিন্দা প্রতীক বিশ্বাস বলেন, ‘‘আগে হাসপাতালের আউটডোর খোলা থাকলেও সপ্তাহে তিন-চার দিনের বেশি চিকিৎসককে পাওয়া যেতনা। ফলে এলাকার বাসিন্দারা আমতলা গ্রামীণ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য যেতে বাধ্য হতেন। এ নিয়ে আমরা অনেক আন্দোলন করেছি। এখন চিকিৎসক থাকায় আমাদের খুব সুবিধা হয়েছে।’’ নওদার ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক মুকেশ কুমার সিংহ বলেন, ‘‘আগে প্রতিদিন আউটডোর পরিষেবা চালু থাকলেও প্রতিদিন চিকিৎসকের পক্ষে থাকা সম্ভব হত না। হাসপাতালের আবাসনগুলি বসবাসের অযোগ্য। তাই আমতলা থেকে যাতায়াত করতে হয় চিকিৎসককে।তবে এখন ছ’দিন টিকিৎসক রোগী দেখছেন।’’