পারুলিয়া স্বাস্থ্যকেন্দ্র। নিজস্ব চিত্র
বছর চারেক আগেও স্বাস্থ্যকেন্দ্রে একজন নিয়মিত চিকিৎসক ছিলেন। তিনি হাসপাতাল ছেড়ে চলে যাওয়ার পর নতুন করে আর কোনও চিকিৎসক আসেননি। চার বছর ধরে ফার্মাসিস্টই স্বাস্থ্যকেন্দ্র সামলাচ্ছেন। কিন্তু করোনাভাইরাস নিয়ে আতঙ্ক শুরু হওয়ার পর কিছুটা হলেও হাল ফিরেছে খড়গ্রাম ব্লকের পারুলিয়া প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের । স্থানীয় সূত্রে খবর, বর্তমানে সেখানে সপ্তাহে একদিন আয়ুর্বেদিক চিকিৎসক ও দু’দিন অ্যালোপ্যাথ চিকিৎসক রোগী দেখছেন। তাতেই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যাতায়াত বেড়েছে রোগীদের।
পারুলিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের পারুলিয়া গ্রামে রাস্তার ধারেই ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্র। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বহির্বিভাগে রোগী দেখা হয়। সেখানে পারুলিয়া ও এড়োয়ালি অঞ্চলের জেঠিয়া, ভরতা, গোপীনাথপুর, পলাশি, আওগ্রাম, আইড়া –সহ প্রায় পনেরোটি গ্রামের মানুষ চিকিৎসা করাতে আসেন। এ ছাড়া, লাগোয়া বীরভূম জেলার বহু মানুষও ওই হাসপাতালে আসেন। কিন্তু বর্তমানে লকডাউন চলায় এবং করোনা-আতঙ্কে দুই জেলার মধ্যে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। ফলে এখন শুধু মুর্শিদাবাদের বাসিন্দারাই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আসতে পারছেন। স্বাস্থ্যকেন্দ্রে একজন ফার্মাসিস্ট, নার্স ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মী পরিষেবা দেওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা করছেন। এর পাশাপাশি, এক জন অস্থায়ী সাফাইকর্মীও রয়েছেন। স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পরিষেবার উন্নতি হওয়ায় খুশি সাধারণ মানুষ।
স্থানীয় বাসিন্দা রফিক শেখ, জাকির শেখরা বলেন, “পারুলিয়া থেকে খড়গ্রাম গ্রামীণ হাসপাতাল প্রায় ১২ কিলোমিটার দূরে। এখন লকডাউনের জন্য ওই হাসপাতালে যাতায়াত করা সমস্যা। আমাদের স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পরিষেবা এতদিন যা ছিল তাতে ভরসা উঠে গিয়েছিল। তবে এখন সপ্তাহে তিন দিন চিকিৎসক আসছেন। তাতেই আমরা ভরসা পাচ্ছি।” ওই অঞ্চলের বাসিন্দা তথা খড়গ্রাম পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তৃণমূলের টিঙ্কু মণ্ডল বলেন, “পারুলিয়া স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এক সময় সর্বক্ষণের চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীরা থাকতেন। তাঁদের জন্য হাসপাতালের মধ্যেই কোয়াটার্স তৈরি হয়। কিন্তু দীর্ঘ দিন ধরে স্বাস্থ্যকর্মী ও চিকিৎসকরা না থাকায় পরিষেবা ভেঙে পড়েছে। এখানে একজন স্থায়ী চিকিৎসক নিয়োগের দাবি জানানো হয়েছে। দেখা যাক, তা পাওয়া যায় কি না। ’’ তবে স্থায়ী চিকিৎসক নিয়োগ এখনই সম্ভব নয় বলে দাবি করেছেন খড়গ্রামের ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক নিত্যানন্দ গায়েন। তিনি বলেন, “আমাদের গোটা ব্লকেই চিকিৎসকের অভাব আছে। আমরা পর্যাপ্ত চিকিৎসক ছাড়াই পরিষেবা চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছি। তবে লকডাউন চলায় যাতে সাধারণ মানুষের অসুবিধা না হয়, সে জন্য পারুলিয়া-সহ চারটি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে একদিন করে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক পাঠানো হচ্ছে।’’