ফাইল চিত্র।
প্রকৃতির খামখেয়ালিপনায় একের পর এক ফসলে ক্ষতির মুখে পড়েছেন চাষিরা। সাম্প্রতিক করোনা-আতঙ্ক এবং টানা লকডাউনে কৃষিকাজ বন্ধ বহু জায়গায়। তার মাঝেই নতুন আশঙ্কার খবর শুনিয়েছে আবহাওয়া দফতর। ওই দফতরের পূর্বাভাস, বঙ্গোপসাগরে ঘনীভূত হতে চলা একটি ঘূর্ণিঝড় দু’-একদিনের মধ্যে আছড়ে পড়তে পারে এ রাজ্যে। জেলা কৃষি দফতরের আশঙ্কা, ওই আশঙ্কা সত্যি হলে মাঠে থাকা বোরো এবং ভুট্টার প্রভূত ক্ষতি হতে পারে। জেলা কৃষি দফতর এ নিয়ে চাষিদের সতর্ক করে ইতিমধ্যেই বার্তা পাঠিয়েছে ব্লকে ব্লকে। জেলার উপ কৃষি অধিকর্তা (প্রশাসন) তাপস কুণ্ডু বলেন, ‘‘ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কার কথা আবহাওয়া দফতরের কাছ থেকে এসেছে। চাষিদের সতর্ক করতে নির্দেশ গিয়েছে বিভিন্ন ব্লকে।’’
সূত্রে খবর, প্রাথমিকভাবে চাষিদের বলা হয়েছে, ৭২ থেকে ৮০ শতাংশ পরিণত হয়ে গেলে বোরো ধান কেটে ফেলতে হবে। যাঁদের জমিতে এখনও ভুট্টা পড়ে রয়েছে, তাঁদেরও ভুট্টাগাছ কেটে নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। যদিও কৃষকদের একাংশের দাবি, বোরো ধানগাছ আরও দু’ সপ্তাহ পরে কাটলে সবচেয়ে ভাল। রানিনগরের মালিবাড়ির চাষি মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘‘কমপক্ষে ৭২ শতাংশ পরিণত হতেও আরও ১৫ দিন সময় লাগবে। এখন ধান কাটলে সেই ধানের ভাল দাম মিলবে কি!’’ একই বক্তব্য রানিনগর ব্লকের সহ কৃষি অধিকর্তা মিঠুন সাহার। তিনি বলেন, ‘‘আমরা এই খবর পাওয়ার পর বিভিন্ন এলাকায় মাঠেঘাটে ঘুরে দেখেছি, আরও ১৫ দিন পর ধানগাছ কাটার উপযুক্ত হবে। এই পরিস্থিতিতে প্রকৃতির করুণার দিতে চেয়ে থাকা ছাড়া উপায় নেই।’’
মুর্শিদাবাদ জেলায় প্রায় ৯০ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ হয়েছে এ বার। অন্যদিকে, ভুট্টা চাষ হয়েছে প্রায় ৭০ হাজার হেক্টর জমিতে। তবে ধান নিয়ে আশঙ্কা থাকলেও ভুট্টায় আশঙ্কা নেই কৃষি দফতরের। তারা জানিয়েছে, জেলার প্রায় ৪৫ শতাংশ ভুট্টা ইতিমধ্যে কাটা হয়ে গিয়েছে, বাকিটাও কাটার উপযুক্ত। এদিকে, গত দু'দিনের বৃষ্টিতে ক্ষতি হয়েছে বোরো চাষে। বেলডাঙা-২, হরিহরপাড়া, নওদার বিভিন্ন এলাকায় ধানগাছ নুইয়ে পড়েছে।