Beautician

বন্ধ বিউটি পার্লার, অভাবে দিন কাটছে কর্মীদের

বিউটি পার্লারের কর্মীরা জানাচ্ছেন, বছর বিশেক আগেও পার্লারের এতটা চল ছিল না এলাকায়।

Advertisement

কল্লোল প্রামাণিক

করিমপুর শেষ আপডেট: ১৮ মে ২০২০ ০০:৪৪
Share:

কনে সাজানোর এমন দিন এখন অতীত।  —ফাইল চিত্র

টানা প্রায় পঞ্চাশ দিনের লকডাউনের মধ্যে অত্যাবশ্যকীয় দ্রব্যের সঙ্গে কিছু কিছু দোকান খোলার ছাড়পত্র দিয়েছে সরকার। দেশ জুড়ে চলা তৃতীয় দফার লকডাউনে বেশ কিছু দোকান খুলেও গিয়েছে। কিন্তু বিউটি পার্লার খোলার অনুমতি মেলেনি। ফলে আর্থিক সমস্যায় পড়েছেন পার্লারের কাজে যুক্ত শহর কিংবা মফস্সলের মহিলারা।

Advertisement

বিউটি পার্লারের কর্মীরা জানাচ্ছেন, বছর বিশেক আগেও পার্লারের এতটা চল ছিল না এলাকায়। তবে এখন বেশির ভাগ পরিবারের মহিলারা রূপচর্চার প্রতি অনেক বেশি আগ্রহী এবং পার্লারে যান। সে কারণে করিমপুর-সহ এলাকার বহু মহিলা কাজের প্রশিক্ষণ নিয়ে পেশা হিসাবে বেছে নিয়েছেন। অনেকের কাছে এটাই একমাত্র রোজগারের পথ। লকডাউনে পার্লার না-খোলায় সমস্যায় পড়েছেন সেই সব মহিলারা।

করিমপুরের পলি প্রামাণিক জানান, লকডাউনের শুরু থেকেই পার্লার বন্ধ। ফেসিয়াল, ভ্রু কিংবা চুল কাটা ছাড়াও বিভিন্ন কাজের জন্য প্রতিদিন ভিড় লেগে থাকত। পার্লারের কাজের পাশাপাশি অনুষ্ঠান বাড়িতে বিশেষ করে কনে সাজানো ও অন্যদের সাজিয়ে ভাল রোজগার হত। অনেক মেয়ে কাজের প্রশিক্ষণও নিতেন। এখন সব বন্ধ। ফলে সকলেই রোজগার হারিয়ে বাড়িতেই বসে আছেন। অনেকের সংসার চলছে না। সরকারি কোনও সাহায্যও মিলছে না। তাঁর কথায়, “পার্লারে আমি ছাড়াও সাত জন কর্মী কাজ করেন এবং সেই আয়ে তাঁদের সংসার চলে। প্রতি মাসে পার্লারের ঘর ভাড়া, বিদ্যুৎ বিল দিতে হয়। অনেক দোকান খোলার নির্দেশ দিলেও পার্লারের নিষেধ রয়েছে। অনুমতি নিতে স্থানীয় পুলিশের কাছে গেলেও ও মেলেনি। এখন কবে সমস্যার সমাধান হবে তা জানা নেই।”

Advertisement

করিমপুরের অন্য এক পার্লারের মালিক কাকলি দাসের কথায়, “গত এক মাসে অনেক বিয়ের কাজের বায়না এসেছিল। কিন্তু সেই সব বিয়ে বন্ধ হওয়ায় বায়না ফেরত দিতে হয়েছে। দু’মাসে এক পয়সা রোজগার না থাকায় ঘরের টাকা থেকে দোকানের ভাড়া মেটাতে হচ্ছে।”

পার্লার কর্মী সুস্মিতা দাস বৈরাগ্য বলেন, “বছর দুয়েক আগে স্বামীর মারা যাওয়ার পরে আয়ের জন্য পার্লারের কাজ শুরু করি। ভাশুর ও দেওরের সংসারে খাবারটুকু জুটলেও নিজের এবং মেয়ের পড়াশোনা ও অসুখবিসুখের খরচ আছে। পার্লারের কাজে রোজদিন যা আয় হত তাতে সে সব চলত। এখন কাজ নেই যেমন তেমনই আয়ও নেই। খুব দুশ্চিন্তার মধ্যে রয়েছি। খোঁজ নেওয়ার কেউ নেই।” একই সমস্যায় পড়েছেন রহমতপুরের বাসিন্দা ও পার্লার কর্মী নিলম জোয়ারদার। তিনি জানান, তার পার্লারের রোজগার ও স্বামীর রোজগারের মিলিয়ে সংসার চলে। লকডাউনের কারনে তার স্বামীর আঁকার টিউশন যেমন বন্ধ তেমনই পার্লারের কাজও বন্ধ হয়ে গিয়েছে। একই সঙ্গে পরিবারের দু’জন কাজ হারানোয় সমস্যার মধ্যে দিন কাটছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement