গাজনশিল্পীরা। নিজস্ব চিত্র
ফাল্গুন মাসের আগে থেকেই শুরু হয়েছিল হারমোনিয়াম, তবলা, খঞ্জনি নিয়ে নানা প্রস্তুতি। সারা বছর মাঠের ফসল কাটা মাঠের ‘চাষা’ বছর শেষে রাজার মুকুট পরে রাজা সেজে আসর মাতাতে হাজির। চৈত্রের তৃতীয় সপ্তাহ থেকে কেউ সাইকেলের পিছনে সীতাকে বসিয়ে গলায় গামছা ঝুলিয়ে গাজনের মণ্ডপে উপস্থিত। কেউ শিব, কেউ হনুমান রূপ ধারণ করে বহুরুপী বেশে রাস্তায় হাজির হন রুজিরুটির দায়ে। কিন্তু দেশে লকডাউন। তাই বন্ধ হারমোনিয়াম, তবলা, খঞ্জনি। হবে না বোলান গান। বসবে না চড়ক, গাজনের মেলা।
গাজন শুরু হয় চৈত্রের শেষ সপ্তাহে। চলে বৈশাখের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত। দীর্ঘদিন বোলান গানের সঙ্গে যুক্ত বেলডাঙার রমেশ হালদার বলেন, “যিনি যেমন শিল্পী, তাঁর তেমন রোজগার। ভাল কাহিনিকার, ভাল পরিচালক, তাঁদের বেশ ভাল আয়।” প্রবীণ বোলান শিল্পী দশরথ হালদার বলেন, “ভাল শিল্পীদের ভাল টাকা দিয়ে নিয়ে আসা হত। লকডাউনের জেরে গাজন শিল্পীরা রুজিরুটি হারাল।” বেলডাঙার বিকাশ হালদার বলেন, “সারা বছর মাঠে কাজ করি। কিন্তু এই সময় বোলান গানে রাজা সাজি। বৈশাখে যখন পালা শেষ হয় তখন মনটা ভরে যায়। কাজে নতুন উদ্যম পাই। মাঠে মন বসে। সেটা এ বার হবে না। সকলের সঙ্গ ও কিছু নগদ অর্থও মেলে। সেটাও বন্ধ।” শিবের বাঘছাল নামাননি তাক থেকে। বেলডাঙা পুর এলাকার মণ্ডপতলায় বড় গাজন উৎসব হয়ে আসছে। চৈত্র উৎসব কমিটির পক্ষে সুমিত ঘোষ বলেন, “বোলান, ভক্ত সমাগম সব বন্ধ। পুরোহিতকে দিয়ে শুধু শিবের পুজো হবে।’’ বেলডাঙার মানিকনগর গ্রামের বড় গাজনের উৎসব কমিটির প্রধান মানবেন্দ্র চক্রবর্তী ও ননীগোপাল হালদার জানান, নিয়মরক্ষার পুজো হবে কোনও জমায়েত ছাড়া। হরেকনগর বাগ মন্দির, আন্ডিরণের মেলাও বন্ধ।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)