একশো দিনের প্রকল্প শুরু
Coronavirus

১২ হাজার হাতে ফিরে এল কাজ

বেশ কয়েক বছর ধরে রাজ্যে একশো দিনের প্রকল্প রূপায়ণে এগিয়ে থেকেছে নদিয়া। কিন্তু গত আর্থিক বছরে জেলা পিছিয়ে পড়ে। এ বার তাই গোড়া থেকেই আটঘাট বেঁধে ‘অ্যানুয়াল অ্যাকশন প্ল্যান’ তৈরি করা হয়েছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২২ এপ্রিল ২০২০ ০৭:০৭
Share:

প্রতীকী ছবি

মেঘের লকডাউন ভেঙে রাত থেকে বৃষ্টি নামল। আর সকাল থেকে নদিয়া জুড়ে শুরু হল একশো দিনের কাজ। অনেক দিন পরে।

Advertisement

তেহট্ট এবং চাপড়ার স্পর্শকাতর অঞ্চল বাদ দিয়ে মঙ্গলবার জেলার বেশির ভাগ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় কাজ শুরু হয়েছে বলে জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর। জেলা প্রশাসনের দাবি, এ দিন ১৮৫টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে ১৩৫টিতে কাজ শুরু হয়েছে। কাজ করেছেন ১২ হাজার ৪৮০ জন। লকডাউনের মধ্যেও মানুষের হাতে টাকা পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে পারস্পরিক দূরত্ব বজায় রেখে কাজ চালিয়ে নিয়ে যাওয়াটাই আপাতত প্রশাসনের কাছে প্রধান চ্যালেঞ্জ।

বেশ কয়েক বছর ধরে রাজ্যে একশো দিনের প্রকল্প রূপায়ণে এগিয়ে থেকেছে নদিয়া। কিন্তু গত আর্থিক বছরে জেলা পিছিয়ে পড়ে। এ বার তাই গোড়া থেকেই আটঘাট বেঁধে ‘অ্যানুয়াল অ্যাকশন প্ল্যান’ তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু আচমকা করোনা উপদ্রবের জেরে লকডাউন শুরু হয়ে যাওয়ায় গোড়াতেই কাজ থমকে যায়। শেষমেশ ২০ এপ্রিল থেকে এই ক্ষেত্রে ছাড় মেলায় ফের তৎপরতা শুরু হয়েছে। বর্তমানে এই প্রকল্পের দায়িত্বে থাকা জেলা পরিষদের সচিব সৌমেন দত্ত বলছেন, “আমরা ছোট-ছোট প্রকল্পের উপরে জোর দিচ্ছি, যেখানে এক সঙ্গে কম শ্রমিকের প্রয়োজন হয়। কারণ বড় প্রকল্পের কাজ শুরু করলে বহু মানুষ কাজ চেয়ে আবেদন করবেন। সে ক্ষেত্রে দিনের পর দিন পারস্পরিক দূরত্ব রক্ষা করা কঠিন হয়ে পড়বে।”

Advertisement

আর সেটা করতে গিয়ে আপাতত বাংলা আবাস যোজনার কাজে বেশি জোর দেওয়া হয়েছে। কারণ এ ক্ষেত্রে যাঁর বাড়ি তৈরি হবে তিনি নিজেই নির্মাণকর্মে ৯০ দিন কাজ পাবেন। ‘ব্যক্তিগত উপভোক্তা বিষয়ক’ কাজের উপরে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। যেমন কেউ তাঁর জমিতে বাগান করতে পারেন। ব্যক্তি মালিকানাধীন ছোট পুকুর বা জলাশয় সংস্কারও করা যেতে পারে। অন্য রাজ্য থেকে ফিরে নিভৃতবাস পর্ব কাটিয়ে ওঠা পরিযায়ী শ্রমিকদেরও কাজ দেওয়ার কথা মাথায় রয়েছে প্রশাসনের। এই প্রকল্পের দায়িত্বে থাকা এক কর্তার কথায়, “জেলায় প্রচুর জবকার্ড হোল্ডার আছেন যাঁরা অন্য রাজ্যে কাজ করতে যান। লকডাউনের আগে তাঁরা ফিরে এসেছেন। তাঁদের হাত পুরো খালি। তাঁদের পাশাপাশি কাজ হারানো দিনমজুরেরাও আয়ের রাস্তা পাবেন।”

মুম্বইয়ের হোটেলে কাজ করতেন তরণীপুরের বাসিন্দা সুরাবুদ্দিন মণ্ডল। লকডাউনের আগেই তিনি ঘরে ফিরেছেন। একটা টাকাও সঙ্গে নিয়ে আসতে পারেননি। প্রথম দিন থেকেই ঘরবন্দি। তিনি বলছেন, “দুই মেয়ে নিয়ে আমাদের চার জনের সংসার। রেশনে যা চাল-আটা পেয়েছিলাম আর দুই মেয়ের স্কুলের মিড-ডে মিলের চাল-আলুই সম্বল। কোনও ভাবে চলে যাচ্ছে। একশো দিনের কাজের সুযোগ পেলে তো ভালই হয়। না হলে কপালে কী আছে, কে জানে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement