এই শিল্পের সঙ্গে জড়িত কয়েক লক্ষ বিড়ি শ্রমিকের আর্থিক অবস্থার বিশেষ পরিবর্তন হয়নি এত বছরেও। ছবি: সংগৃহীত।
আধুনিক হাসপাতালে ন্যূনতম যা যা প্রয়োজন, কমবেশি সবই আছে। আধুনিক যন্ত্রপাতি, অপারেশন থিয়েটার, ল্যাবরেটরি। অভিযোগ, শুধু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মীর অভাবে ধুঁকছে ধুলিয়ানের তারাপুরে বিড়ি শ্রমিকদের জন্য তৈরি কেন্দ্রীয় হাসপাতালটি। সেখানে পর্যাপ্ত ওষুধও মেলে না বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের।
ধুলিয়ান, শমসেরগঞ্জের বিড়ি শিল্পের নাম দেশজোড়া। তবে এই শিল্পের সঙ্গে জড়িত কয়েক লক্ষ বিড়ি শ্রমিকের আর্থিক অবস্থার বিশেষ পরিবর্তন হয়নি এত বছরেও।
এলাকার দুঃস্থ বিড়ি শ্রমিকদের অসুখ-বিসুখে যাতে দূরের হাসপাতালে যেতে না হয়, সেই জন্য তারাপুরে ২০০০ সালে ২৩ একর জমির ওপর ওই হাসপাতালটি তৈরি করেছিল কেন্দ্রীয় শ্রমমন্ত্রক। সেটির উদ্বোধন করেন জঙ্গিপুরের প্রাক্তন সাংসদ তথা প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়। শুরুতে হাসপাতালে শয্যাসংখ্যা ছিল পঞ্চাশটি। পাঁচ বছর পর তা বেড়ে হয় ৬৫। স্থানীয়দের বক্তব্য, ওই হাসপাতাল তৈরি হওয়ায় তাঁদের সুবিধা হয়েছিল। অন্তর্বিভাগে রোগীদের চিকিৎসার পাশাপাশি প্রতিদিন আউটডোরে প্রায় পাঁচশো রোগী চিকিৎসার জন্য আসতেন। ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে তৈরি এই হাসপাতালে যাতায়াতের সুবিধা থাকায় ভিড় লেগেই থাকত।
এখন দু’জন স্থায়ী চিকিৎসক ও তিন জন অস্থায়ী চিকিৎসক, পাঁচ নার্সকে নিয়ে টিমটিম করে চলছে হাসপাতাল। করোনা-আবহে অনেক হাসপাতালের শ্রী ফিরলেও তারাপুর যেখানে ছিল সেখানেই আছে, ক্ষোভ বাসিন্দাদের।
মালঞ্চ গ্রামের বাসিন্দা সাবিনা বিবি বিড়ি শ্রমিক। তাঁর অভিযোগ, ‘‘বুকে ব্যথা নিয়ে আমার স্বামীকে হাসপাতালে গিয়েছিলাম। চিকিৎসক ইসিজি করে আনতে বললেন। হাসপাতালে করা গেল না। বেশি টাকা খরচ করে বেসরকারি ক্লিনিক থেকে করাতে হল।’’ জঙ্গিপুরের তৃণমূল সাংসদ খলিলুর রহমান বলেন, ‘‘পরিকাঠামো থাকা সত্বেও টেকনিশিয়ান ও চিকিৎসকের অভাবে হাসপাতালটি ধুঁকছে।’’ হাসপাতালের সিএমও অমিতাভ আড্ডি বলেন, ‘‘কিছু অসুবিধা আছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। আশা করি, দ্রুত সমাধান হবে।’’