Coronavirus in West Bengal

COVID19: টিকা দিতে আসছে! ভয়ে আমবাগান, পাটক্ষেতে পালাল গোটা পাড়া, হুলস্থুল হরিহরপাড়ার গ্রামে

পঞ্চায়েত প্রধান-সহ স্বাস্থ্য কর্মীরা তাঁদের অনেককেই বুঝিয়েসুজিয়ে শেষে গ্রামে নিয়ে আসেন। তবে সেই কাজ করতে তাঁদের ঘাম ছুটে যায়।

Advertisement

মফিদুল ইসলাম

নওদা শেষ আপডেট: ২৫ মে ২০২১ ০৬:৫৫
Share:

গ্রামে স্বাস্থ্যকর্মীরা। নিজস্ব চিত্র

টিকা দিতে আসছে নাকি? ‘ভয়ের চোটে’ বাড়িতে তালা দিয়ে গা ঢাকা দিল গোটা একটা পাড়ার সব ক’টা পরিবার। হরিহরপাড়ার সুন্দলপুর গ্রামের ওই পাড়ার লোকজনের এই ভূমিকায় হতবাক স্থানীয় পঞ্চায়েত, স্বাস্থ্য দফতরের কর্মীরাও। করোনা দ্বিতীয় ঢেউয়ে মাত্রাছাড়া সংক্রমণের মধ্যেও গ্রামের দিকে কিছু জায়গায় এক শ্রেণির মানুষের মধ্যে অসচেতনতার খবর আসছিল প্রশাসনের কাছে।

Advertisement

আবহাওয়া পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে এই মরসুমে জ্বরজারির উপসর্গ দেখা দিচ্ছে অনেকের। কিন্তু বহু ক্ষেত্রেই আক্রান্ত করোনা পরীক্ষার ভয়ে সরকারি হাসপাতালমুখো হচ্ছেন না। এর সঙ্গে গ্রামে বা মফস্‌সলের অনেক এলাকায় বিধিনিষেধ মানা নিয়ে মানুষের আপত্তির কথাও প্রশাসনের কানে এসেছে। এই সব এলাকার মানুষদের সচেতন করতে উদ্যোগী হয়েছে স্থানীয় পঞ্চায়েতগুলি। সেই মতো হরিহরপাড়ার ধরমপুর পঞ্চায়েতও এলাকার গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য, আশা, অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী, পুলিশ ও স্বাস্থ্যকর্মীদের নিয়ে বাড়ি বাড়ি প্রচার শুরু করেছে স্বাস্থ্য দফতর।

সোমবার সকালে ধরমপুর গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান অসমিতা ফেরদৌস-সহ একটি বিশেষ দল সচেতনতা প্রচারের লক্ষ্যে সুন্দলপুর গ্রামে পৌঁছয়। মুহূর্তের মধ্যে চাউর হয়ে যায়, স্বাস্থ্যকর্মীরা পুলিশ নিয়ে করোনার টিকা দিতে এসেছে। হুলুস্থুল পড়ে যায় গ্রামে। টিকা নেওয়ার ভয়ে বাড়িতে তালা দিয়ে গ্রামের একটি পাড়ার সমস্ত বাসিন্দা পালাতে শুরু করেন। কম করে পঁচিশ-তিরিশটি পরিবার তো হবেই। প্রশাসন সূত্রে এক কথা জানিয়ে বলা হয়, কেউ পালিয়ে যান নদীর ধারে, আমবাগানে, পাট খেতে, কেউ আবার পাশের গ্রামে। পঞ্চায়েত প্রধান-সহ স্বাস্থ্য কর্মীরা তাঁদের অনেককেই বুঝিয়েসুজিয়ে শেষে গ্রামে নিয়ে আসেন। তবে সেই কাজ করতে তাঁদের ঘাম ছুটে যায়।

Advertisement

প্রশাসন সূত্রে খবর, কী ভাবে করোনা ছড়ায়, এই সংক্রমণ আটকাতে কী করণীয়, বিধিনিষেধ মেনে চলা, মাস্ক-স্যানিটাইজ়ারের ব্যবহার— এই সব নিয়ে তাঁদের বোঝানো হয়। টিকাকরণ কতটা জরুরি, তা-ও গ্রামের বাসিন্দাদের বোঝান স্বাস্থ্য কর্মীরা। গ্রামেরই বছর পঁয়তাল্লিশের বাবলু শেখ বলছেন, ‘‘শুনছি জ্বর নিয়ে হাসপাতালে গেলেই করোনা ধরা পড়ছে। সেই ভয়ে আমরা হাসপাতাল যাই না।’’

রকেন মণ্ডল বলেন, ‘‘টিকা দিলে নাকি নানা অসুবিধে হয়। সেই ভয়েই পালিয়ে গিয়েছিলাম।’’ স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য ইকবাল হোসেন বলেন, ‘‘এ ভাবে গ্রামের মানুষ বাড়ি তালা বন্ধ করে পালিয়ে যাবে, ভাবতে পারিনি।’’ পঞ্চায়েত প্রধান অসমিতা ফেরদৌস বলছেন, ‘‘মানুষকে সচেতন করার প্রচেষ্টা আমরা চালিয়ে যাব।’’ ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক আজিজুল লস্কর বলেন, ‘‘এখনও অনেক মানুষ করোনার সংক্রমণ, টিকা নিয়ে অসচেতন। তাঁদের আমরা সচেতন করার চেষ্টা করছি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement