প্রতীকী চিত্র।
করোনা-আক্রান্ত যে রোগীদের অবস্থা জটিল বা গুরুতর তাঁদের চিকিৎসায় ভেন্টিলেটর ব্যবহার করার জন্য বিশেষ টিম তৈরি করল জেলা স্বাস্থ্য দফতর। তাতে জেলার সিসিইউ প্রশিক্ষণ-প্রাপ্ত চিকিৎসক, নার্স ও টেকনোলজিস্ট থাকছেন। ভেন্টিলেটর ব্যবহারের ক্ষেত্রে যাতে কোনও সমস্যা না-হয় তার জন্যই এই পদক্ষেপ করা হচ্ছে বলে জেলা স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে।
নদিয়া জেলায় দু’টি কোভিড হাসপাতাল আছে। কল্যাণীর কার্নিভাল হাসপাতালে ১২০টি ও কৃষ্ণনগরের গ্লোকাল কোভিড হাসপাতালে ১৫০টি শয্যা আছে। কার্নিভালে দু’টি ও গ্লোকালে সাতটি ভেন্টিলেটর আছে। বৃহস্পতিবার সকাল সাতটা পর্যন্ত জেলায় ৫৬০ জন রোগী ভর্তি হলেও মাত্র এক জনের ক্ষেত্রেও ভেন্টিলেটর প্রয়োজন হয়েছে ঘণ্টা দু’য়েকের জন্য। শোধপুরের বাসিন্দা ওই রোগীকে কল্যাণীর জেএনএম হাসপাতাল থেকে একেবারে শেষ মুহূর্তে নিয়ে আসা হয়েছিল বলে চিকিৎসকদের দাবি। বৃহস্পতিবার দুপুরের পরে গ্লোকালে আরও এক জনকে সিসিইউতে ভর্তি করে ভেন্টিলেটরের সাপোর্ট দিতে হয়েছে।
যে ভাবে করোনা রোগীর সংখ্যা বাড়ছে তাতে আগামী দিনে জটিল করোনা-আক্রান্তও বাড়বে বলে আশঙ্কা। তখনই আরও বেশি করে ভেন্টিলেটরের প্রয়োজন হবে। তাই সিসিইউ-প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত চিকিৎসক, নার্স ও টেকনোলজিস্টদের নিয়ে টিম তৈরি করা হচ্ছে। কল্যাণীর জেএনএম হাসপাতাল, শক্তিনগর জেলা হাসপাতাল, রানাঘাট ও তেহট্ট মহকুমা হাসপাতালে সিসিইউ ইউনিট আছে। সব মিলিয়ে জেলায় সিসিইউ-প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ২১ জন চিকিৎসক, ২৮ জন নার্স ও ১২ জন টেকনোলজিস্ট আছেন।
তাঁদের নিয়েই কার্নিভাল ও গ্লোকাল কোভিড হাসপাতালে সিসিইউ ইউনিটের জন্য পৃথক ডিউটি রোস্টার বানানো হয়েছে। কোভিড হাসপাতালে ভর্তি কোনও রোগীর অবস্থা জটিল হয়ে পড়লে এই টিমের ডাক পড়বে। তাঁরা এসে সিসিইউয়ের ভেন্টিলেটর চালু করে দেবেন এবং বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক না-আসা পর্যন্ত রোগীকে নজরদারিতে রাখবেন।
কিন্তু দু’টো কোভিড হাসপাতালে মাত্র ন’টি ভেন্টিলেটর কি যথেষ্ট? জেলার কর্তারা বলছেন, কোভিড হাসপাতালের বাইরেও কল্যাণী যক্ষ্মা হাসপাতালের সারি ইউনিটে ৫টি, কৃষ্ণনগরের কর্মতীর্থের সারি ইউনিটে ১টি, জেএনএম হাসপাতালে ২টি, রানাঘাট ও তেহট্ট মহকুমা হাসপাতালের সিসিইউতে ১টি করে ভেন্টিলেটর আছে। শক্তিনগর জেলা হাসপাতালের আইসোলেশনে ১টি ও সিসিইউ-তে ৩টি ভেন্টিলেটর আছে। সেগুলিও করোনার চিকিৎসায় ব্যবহার করা হচ্ছে।
জেলার এক স্বাস্থ্যকর্তার কথায়, “আগামী দিনে প্রয়োজন হলে স্বাস্থ্য ভবনের থেকে আরও ভেন্টিলেটর চেয়ে নেওয়া হবে।” গ্লোকাল কোভিড হাসপাতালের দায়িত্বে থাকা জেলা হাসপাতালের সুপার শচীন্দ্রনাথ সরকার বলছেন, “আগামী দিনে ভেন্টিলেটরের প্রয়োজন বাড়বে বলেই মনে হচ্ছে। সেই মতো পদক্ষেপ করা হচ্ছে।”
(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।
• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)