সেই স্বাস্থ্যকেন্দ্র। নিজস্ব চিত্র
লকডাউন ঘোষণার পর থেকেই ভিন্ রাজ্য থেকে শ্রমিকেরা ফিরছেন। এখন ট্রেনে করে ফিরছেন শ্রমিকেরা। তাঁদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হবে। তার পরে গ্রামে ফিরলেও যদি কারও পরীক্ষার প্রয়োজন পড়ে, তার জন্য প্রস্তুত ওড়াহড় স্বাস্থ্যকেন্দ্র। শরীরের তাপ মাপার ব্যবস্থাও করা হয়েছে। সপ্তাহে ছ’দিন চিকিৎসক আসছেন। অন্য অসুখের জন্যও ভয় কমেছে এলাকার মানুষের।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, জেলায় নামলেই পরীক্ষা করানো হবে। কিন্তু গ্রামে ফেরার পরে কেউ যদি অন্য অসুখেও আক্রান্ত হন, তার জন্য এখন হাতের কাছেই যে চিকিৎসক রয়েছেন, এটা খুবই ভরসার কথা।
তবে মাস কয়েক আগেও ভগবানগোলা-১ ব্লকের ওড়াহড়, সুন্দরপুর, বড়বড়িয়া সহ আশেপাশের আরও চারটি গ্রামের সাধারণ মানুষ জ্বরজ্বালা হলেই চিন্তায় পড়তেন। লালগোলা যশইতলা মোড় থেকে বাস ধরে প্রায় ১২ কিলোমিটার রাস্তা উজিয়ে কানাপুকুর গ্রামীণ হাসপাতালে যেতে হত ডাক্তার দেখাতে। কিংবা জিয়গঞ্জ বাগডহরে এসে সেখান থেকে ট্রেনে না হলে বাসে করে লালবাগ মহকুমা হাসপাতালে গিয়ে ডাক্তার দেখানো। এটাই ছিল নিত্য চিত্র। আবার অনেকে লালবাগে এসে বিভিন্ন ক্লিনিকেও চিকিৎসা করাতেন। অথচ ভগবানগোলা-১ ব্লকের ওড়াহড়ে একটি প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র রয়েছে। তবে, স্বাস্থ্যকেন্দ্র থাকলে কী হবে, তা নিয়ে অভিযোগের শেষ ছিল না রোগীদের। আগে প্রতিদিন নিয়মিত স্বাস্থ্যকেন্দ্র খুলত। এক জন নার্স, এক জন ফার্মাসিস্ট এলেও দেখা মিলত না ডাক্তারের। কাজেই স্থানীয় বাসিন্দাদের জ্বরজ্বালা সহ বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা ভরসা হয়ে দাঁড়ায় কানাপুকুর গ্রামীণ হাসপাতাল আর না হলে লালবাগ মহকুমা হাসপাতাল।
তারপর এক চিকিৎসক সপ্তাহে তিন দিন করে আসার কথা থাকলেও সপ্তাহে তিনি তিন দিন আসতে পারতেন না। বর্তমানে করোনা আর লকডাউনের জেরে ওড়াহড় স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চিত্র বদলে গিয়েছে। এখন সপ্তাহে ছ'দিন করেই মিলছে চিকিৎসক। স্থানীয় বাসিন্দা পরিতোষ মণ্ডল বললেন, ‘‘এখন সপ্তাহে ছ’দিনই চিকিৎসক আসছে হাসপাতালে। চিকিৎসাও বেশ ভালই হচ্ছে। ডাক্তার না আসলে কি যে হত কে জনে।’’
হাসপাতাল সূত্রে খবর, ওড়াহড়, সুন্দরপুর, বড়বড়িয়া সহ আশেপাশের আরও চারটি গ্রামের বাসিন্দাদের কথা মাথায় রেখে প্রায় চল্লিশ বছর আগে ভগবানগোলা-১ ব্লকের ওড়াহড়ে ওই স্বাস্থ্য কেন্দ্র গড়ে তোলা হয়। প্রথম প্রথম স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ডাক্তার মিললেও পরে ডাক্তার মিলত না বললেই চলে। ভগবানগোলা-১ ব্লকের ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক শুভঙ্কর বিশ্বাস বলেন, ‘‘এখন আর ডাক্তারের সমস্যা নেই। কজেই এখন সপ্তাহে ছয় দিন করেই চিকিৎসক থাকছেন ওড়াহড় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে।’’
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)